৭৩ বছরের প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। কিন্তু এই দীর্ঘ সময় পার করলেও সংগঠনটির চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় নিজস্ব কোনো কার্যালয় নেই। নেই কোনো সাইনবোর্ডও। এর-ওর কার্যালয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে এই উপজেলা আওয়ামী লীগের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, সংগঠন নামে আছে, কাজে নেই। বছরে দু-চারটি বর্ধিত সভা ছাড়া আর কোনো কার্যক্রম নেই উপজেলা আওয়ামী লীগের। দলের সভা-সমাবেশে একটি ব্যানার করার ন্যূনতম প্রয়োজনও বোধ করেন না কেউ। এমনকি উপজেলা সদরেও আওয়ামী লীগের কোনো সাইনবোর্ড নেই।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন বলেন, ‘পটিয়ায় আমরা যাকে অভিভাবক বা নেতা বলি (হুইপ সামশুল হক চৌধুরী), তিনি মূলত আওয়ামী লীগকে ভালোবাসেন না। তিনি ভালোবাসেন ক্ষমতাকে। উপজেলাজুড়ে তিনি দলে বিভাজন সৃষ্টি করে রেখেছেন। দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে তিনি নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেন। দলের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে, নিজস্ব কার্যালয় কোথা থেকে হবে?’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহাদাত হোসেন ফরিদ বলেন, ‘পটিয়ায় দলীয় কোনো কার্যালয় কিংবা সাইনবোর্ড না থাকার পেছনে স্থানীয় সংসদ সদস্য দায়ী। আমি ১০ বছর ধরে বর্ধিত সভাসহ বিভিন্ন সভা-সমাবেশে পটিয়ায় দলের স্থায়ী কার্যালয় করার জন্য বলেছি। কিন্তু তাতে সবার চক্ষুশূল হয়েছি। দল রাষ্ট্রক্ষমতায়। এখন যদি করতে না পারি, তাহলে আর কোনো দিন সম্ভব হবে না।’

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সেলিম নবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পটিয়ার আসনটি আওয়ামী লীগের হলেও সাংগঠনিকভাবে পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত নয়। তাই ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকলেও অন্য দল থেকে আসা সংসদ সদস্য এবং উপজেলা সাধারণ সম্পাদক নিজস্ব বলয় তৈরি করতে চাওয়ার কারণে আওয়ামী লীগের অফিস হতে দেননি।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আগে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর একটি ভবন উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এরপর ভবনটি বাণিজ্যিকভাবে ভাড়া দেওয়ার পর সংসদ সদস্য ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর মুনসেফ বাজারের কার্যালয়টি আপাতত অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।’

অধ্যাপক হারুনুর রশিদ আরও বলেন, ‘স্থায়ী কার্যালয়ের জন্য পটিয়া সদর থানার মোড় হয়ে বাইপাস সড়ক এলাকায় জায়গা খুঁজছি। পছন্দমতো জায়গা পেলে স্থায়ী কার্যালয় হিসেবে একটি ভবন নির্মাণ করা হবে।’

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের বলেছি, ভালো একটি জায়গা খুঁজে নিতে। যত টাকা প্রয়োজন হবে, আমি দেব।’