রাহুল শর্মা, ঢাকা
দেশের ১৬০টি উপজেলায় শিক্ষার জন্য আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার গড়তে ভবন নির্মাণ করার কথা ২০ মাসের মধ্যে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাড়ে ১৬ মাসের বেশি। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি একটি ভবনেরও। অথচ এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগাম তুলে নিয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।
এই অবস্থায় আবার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমন চিত্র ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ১৬০ উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ফর এডুকেশন’ শীর্ষক প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)।
দেশের ১৬০টি উপজেলায় আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ও স্বয়ংসম্পূর্ণ আইসিটি ল্যাব স্থাপন এবং মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকদের আইসিটি প্রশিক্ষণ-সংক্রান্ত উদ্যোগের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয় ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৮৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাকের ঋণ ৫৯২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা এবং সরকারের প্রকল্প সহায়তা ২৫২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
প্রকল্পের নথিতে দেখা যায়, পাঁচ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ২৬ শতাংশ।
ভবন নির্মাণ বাবদ অগ্রিম অর্থ দেওয়া হলেও এখনো একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। ভবন নির্মাণসহ প্রকল্পের সব কাজের জন্য কোরিয়ার তিনিটি কোম্পানির গ্রুপ তাইহান কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি হয় ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ২০ মাসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৭ জুলাই নাগাদ ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা।
একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি
ব্যানবেইসের এক কর্মকর্তা জানান, ১৬০টি ভবনের মধ্যে একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি। অথচ অগ্রিম বাবদ ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে ১৪০ কোটি। এখন আবার প্রকল্প ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজের যা অবস্থা, তাতে নির্ধারিত সময়ে একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ শেষ হবে না।
জানা যায়, ১৬০টি উপজেলার মধ্যে ৫২ উপজেলায় এখনো কাজ শুরুই হয়নি। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী সময় আছে আর মাত্র ৪ মাস। ১০৮টি উপজেলায় ভবন নির্মাণকাজেও রয়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি, সেপটিক ট্যাংক, পুরোনো ভবনসহ নানা জটিলতা। শুধু ১৯টি উপজেলায় একতলা এবং ১০টি উপজেলায় দোতলার ছাদ ঢালাই করা হয়েছে।
কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া, ঢাকার ধামরাই এবং গাজীপুরের কাপাসিয়াসহ কয়েকটি উপজেলায় খোঁজ নিয়েও প্রকল্পের এমন অবস্থার তথ্য পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভূঞা জনী বলেন, ‘ভবন নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি, ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ সমাপ্ত করা যাবে।’
কাপাসিয়ায় কাজে ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি জ্যাকস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. নুরুন্নবী বলেন, ‘মূল ঠিকাদার কোরিয়ান কোম্পানি, আমরা সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করছি। নানা জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু হয়নি। কাজের যে গতি তাতে বলা যায় ডিসেম্বরে ভবন নির্মাণ শেষ হবে।’
ব্যানবেইস মহাপরিচালকের আশা
পদাধিকারবলে প্রকল্পের পরিচালক হলেন ব্যানবেইস মহাপরিচালক মো. মহিবুর রহমান। তিনি গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি যোগদান করেছি বেশি দিন হয়নি। তারপরও যতটুকু জেনেছি তাতে বলা যায়, করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি।’ দায়িত্ব নেওয়ার পর এ বিষয়ে একাধিকবার কোরীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, দ্রুতই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে।
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
তবে ভিন্ন কথা বলছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, এ প্রকল্পের শুরুতেই বেশ কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির অন্যতম কারণ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ। এতে মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ ব্যক্তির নিকটাত্মীয়ের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত তা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পর্যন্ত গড়ায়। এ ছাড়া মামলাসংক্রান্ত জটিলতাও ছিল।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বৈদেশিক ঋণের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তা না হলে ভবন নির্মাণকাজের চুক্তি করতে আড়াই বছর লাগবে কেন? উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রকল্পে ই-লার্নিং সিস্টেম তৈরি এবং এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম সফটওয়্যার আধুনিকায়ন করার কথা ছিল। এখন তা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। কারণ একই কাজ অন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে চলছে।’
শিক্ষাসচিবের অসন্তোষ
জানা যায়, ভবন নির্মাণকাজে ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাসচিব সোলেমান খান। গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের ৫ম স্টিয়ারিং কমিটির সভায় তিনি এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, সভায় সচিব বলেন, ‘প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ইতিমধ্যে ৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়া হলেও অদ্যাবধি একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়া মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। এ ছাড়া ই-লার্নিং সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট এবং ইএমআইএস আপ গ্রেডেশনসহ ভবন নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, এরূপ কার্যক্রমের কোনো অগ্রগতি হয়নি।’
শিক্ষাসচিব দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে নতুন করে তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর পাঁয়তারা
জানা যায়, শুরুতে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল তিন বছর (জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত)। এরপর তিনবার বাড়ানো হয় মেয়াদ। সেই হিসাবে আগামী জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে এই মেয়াদ আরও দেড় বছর (২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত) বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যয় বাড়ানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে। কোরীয় কনসোর্টিয়াম ৩০ লাখ ১২ হাজার ২২৭ ডলার (৩১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৮ হাজার ৫১৯ টাকা) বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।
ব্যানবেইসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্টিয়ারিং কমিটি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেও প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। কারণ ৫ বছরের বেশি সময়েও প্রকল্পের অগ্রগতি খুবই সামান্য।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করেছে কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক। নানা জটিলতায় নির্মাণকাজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করে কাজের চুক্তি করতে আড়াই বছর লেগেছে। এ ছাড়া প্রকল্পে আরও কিছু জটিলতা ছিল। এগুলো নিরসনে ডিপিপি সংশোধনসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই প্রকল্পের কার্যক্রমে গতি আসবে।’
দেশের ১৬০টি উপজেলায় শিক্ষার জন্য আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার গড়তে ভবন নির্মাণ করার কথা ২০ মাসের মধ্যে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাড়ে ১৬ মাসের বেশি। কিন্তু এখনো কাজ শেষ হয়নি একটি ভবনেরও। অথচ এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগাম তুলে নিয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা।
এই অবস্থায় আবার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমন চিত্র ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ১৬০ উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ফর এডুকেশন’ শীর্ষক প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)।
দেশের ১৬০টি উপজেলায় আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ও স্বয়ংসম্পূর্ণ আইসিটি ল্যাব স্থাপন এবং মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকদের আইসিটি প্রশিক্ষণ-সংক্রান্ত উদ্যোগের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয় ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৮৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাকের ঋণ ৫৯২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা এবং সরকারের প্রকল্প সহায়তা ২৫২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
প্রকল্পের নথিতে দেখা যায়, পাঁচ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ২৬ শতাংশ।
ভবন নির্মাণ বাবদ অগ্রিম অর্থ দেওয়া হলেও এখনো একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। ভবন নির্মাণসহ প্রকল্পের সব কাজের জন্য কোরিয়ার তিনিটি কোম্পানির গ্রুপ তাইহান কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি হয় ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ২০ মাসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৭ জুলাই নাগাদ ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা।
একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি
ব্যানবেইসের এক কর্মকর্তা জানান, ১৬০টি ভবনের মধ্যে একটি ভবনের কাজও শেষ হয়নি। অথচ অগ্রিম বাবদ ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে ১৪০ কোটি। এখন আবার প্রকল্প ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজের যা অবস্থা, তাতে নির্ধারিত সময়ে একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ শেষ হবে না।
জানা যায়, ১৬০টি উপজেলার মধ্যে ৫২ উপজেলায় এখনো কাজ শুরুই হয়নি। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী সময় আছে আর মাত্র ৪ মাস। ১০৮টি উপজেলায় ভবন নির্মাণকাজেও রয়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি, সেপটিক ট্যাংক, পুরোনো ভবনসহ নানা জটিলতা। শুধু ১৯টি উপজেলায় একতলা এবং ১০টি উপজেলায় দোতলার ছাদ ঢালাই করা হয়েছে।
কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া, ঢাকার ধামরাই এবং গাজীপুরের কাপাসিয়াসহ কয়েকটি উপজেলায় খোঁজ নিয়েও প্রকল্পের এমন অবস্থার তথ্য পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভূঞা জনী বলেন, ‘ভবন নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি, ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ সমাপ্ত করা যাবে।’
কাপাসিয়ায় কাজে ধীরগতির কারণ জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি জ্যাকস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. নুরুন্নবী বলেন, ‘মূল ঠিকাদার কোরিয়ান কোম্পানি, আমরা সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করছি। নানা জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু হয়নি। কাজের যে গতি তাতে বলা যায় ডিসেম্বরে ভবন নির্মাণ শেষ হবে।’
ব্যানবেইস মহাপরিচালকের আশা
পদাধিকারবলে প্রকল্পের পরিচালক হলেন ব্যানবেইস মহাপরিচালক মো. মহিবুর রহমান। তিনি গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি যোগদান করেছি বেশি দিন হয়নি। তারপরও যতটুকু জেনেছি তাতে বলা যায়, করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি।’ দায়িত্ব নেওয়ার পর এ বিষয়ে একাধিকবার কোরীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, দ্রুতই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে।
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
তবে ভিন্ন কথা বলছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, এ প্রকল্পের শুরুতেই বেশ কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির অন্যতম কারণ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ। এতে মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ ব্যক্তির নিকটাত্মীয়ের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত তা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পর্যন্ত গড়ায়। এ ছাড়া মামলাসংক্রান্ত জটিলতাও ছিল।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বৈদেশিক ঋণের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তা না হলে ভবন নির্মাণকাজের চুক্তি করতে আড়াই বছর লাগবে কেন? উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রকল্পে ই-লার্নিং সিস্টেম তৈরি এবং এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম সফটওয়্যার আধুনিকায়ন করার কথা ছিল। এখন তা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। কারণ একই কাজ অন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে চলছে।’
শিক্ষাসচিবের অসন্তোষ
জানা যায়, ভবন নির্মাণকাজে ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাসচিব সোলেমান খান। গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের ৫ম স্টিয়ারিং কমিটির সভায় তিনি এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, সভায় সচিব বলেন, ‘প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ইতিমধ্যে ৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়া হলেও অদ্যাবধি একটি ভবনেরও নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়া মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। এ ছাড়া ই-লার্নিং সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট এবং ইএমআইএস আপ গ্রেডেশনসহ ভবন নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, এরূপ কার্যক্রমের কোনো অগ্রগতি হয়নি।’
শিক্ষাসচিব দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে নতুন করে তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর পাঁয়তারা
জানা যায়, শুরুতে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল তিন বছর (জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত)। এরপর তিনবার বাড়ানো হয় মেয়াদ। সেই হিসাবে আগামী জুন মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে এই মেয়াদ আরও দেড় বছর (২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত) বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যয় বাড়ানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে। কোরীয় কনসোর্টিয়াম ৩০ লাখ ১২ হাজার ২২৭ ডলার (৩১ কোটি ৬৮ লাখ ৭৮ হাজার ৫১৯ টাকা) বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।
ব্যানবেইসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্টিয়ারিং কমিটি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেও প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। কারণ ৫ বছরের বেশি সময়েও প্রকল্পের অগ্রগতি খুবই সামান্য।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করেছে কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক। নানা জটিলতায় নির্মাণকাজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করে কাজের চুক্তি করতে আড়াই বছর লেগেছে। এ ছাড়া প্রকল্পে আরও কিছু জটিলতা ছিল। এগুলো নিরসনে ডিপিপি সংশোধনসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই প্রকল্পের কার্যক্রমে গতি আসবে।’
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে