শিশুর অ্যাজমা হলে

ডা. অদিতি সরকার
প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯: ২৮

অ্যাজমা বা হাঁপানি হলো শ্বাসপ্রশ্বাসের অ্যালার্জেন এবং উত্তেজক পদার্থের প্রতি উচ্চ সংবেদনশীল হওয়ার কারণে শ্বাসনালির একধরনের রোগ। এই রোগে শ্বাসনালি ফুলে ওঠে এবং তা ফুসফুসে বায়ু প্রবাহে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। বিভিন্ন উত্তেজক ও পরিবেশদূষণকারী, যেমন পরাগ রেণু, ধুলো, তামাকজাতীয় পণ্যের ধোঁয়া ইত্যাদি থেকে দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা যে প্রতিক্রিয়া দেখায় তার ফলে অ্যাজমা হয়ে থাকতে পারে। প্রায়ই দেখা গেছে, অ্যাজমায় ভোগা ব্যক্তিদের শ্বাসনালি উচ্চ সংবেদনশীল এবং সামান্য উত্তেজক বা অ্যালার্জেনে শ্বাসনালিতে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

একেবারে কম বয়সী শিশুদের শ্বাসনালি তুলনামূলক বড় শিশুদের তুলনায় ছোট হয়। সে জন্য শ্বাসনালি ভাইরাস বা ছত্রাকের আক্রমণ ও শ্লেষ্মা দিয়ে সহজে বন্ধ হয়ে যায় এবং তা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই ১২ মাসের কম বয়সী শিশুদের অ্যাজমা হলে তা মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। ১০ থেকে ১২ শতাংশ শিশুর মধ্যে অ্যাজমা প্রভাব ফেলতে পারে।

অ্যালার্জিভিত্তিক
অ্যালার্জিভিত্তিক অ্যাজমা বা হাঁপানির কারণ হলো সংবেদনশীল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু অ্যালার্জেনের উৎস এক শিশু থেকে আরেক শিশুতে আলাদা হতে পারে। কিছু সাধারণ উৎস হলো ফুলের পরাগ রেণু, ধুলো কণা, পোষা প্রাণীর লোম বা লালা। 

অ-অ্যালার্জিক অ্যাজমা
অ্যাজমা অ্যালার্জি ছাড়াও অন্যান্য কারণে হতে পারে। অ্যাজমার পারিবারিক ইতিহাস বা জেনেটিক কারণ এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। 

লক্ষণ

  • দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস: একটি তিন মাসের শিশুর সাধারণ ধরন হলো প্রতি মিনিটে ৩০ থেকে ৬০ বার শ্বাস ফেলা। এটি পরে পরিবর্তিত হয়। তবে অ্যাজমায় আক্রান্ত শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস প্রতি মিনিটে ৫০ শতাংশের মতো বাড়তে পারে।
  • শ্রমসাধ্য শ্বাসগ্রহণ: পেটের দ্রুত আন্দোলন দেখা যায় এবং নাসারন্ধ্র প্রসারিত হয়ে যায়।
  • ভীষণ মাত্রায় কাশি: কাশির প্রবণতা বেশি হতে পারে সন্ধ্যার শেষের দিকে অথবা রাতে।
  • ত্বক ও নখ নীলচে এবং বিবর্ণ হয়ে যাওয়া: অ্যাজমা থাকা শিশুদের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকায় ঠোঁট অথবা নখের আস্তরণ নীলচে বা বিবর্ণ হতে পারে।
  • শোঁ শোঁ শব্দ
  • ক্লান্তি ও আলস্য
  • কান্নার ক্ষীণ শব্দ

অ্যাজমার জরুরি অবস্থা

  • শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যাওয়া
  • বুক বড় হয়ে ওঠা
  • শিশুর খাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া
  • মৃদু ও ক্ষীণ কান্না 

লক্ষণগুলো দেখা গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসা ও প্রতিরোধক শিশুর অ্যাজমা রোধে আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থায় শিশু ও অ্যাজমা বিশেষজ্ঞের সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা জরুরি। অ্যাজমার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনহেলার দরকার হলে নেবুলাইজার, মুখে খাওয়ার ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। 

প্রতিরোধকমূলক ব্যবস্থা

  • অভিভাবকদের ধূমপান বাদ দেওয়া
  • শিশুকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো
  • শিশুর স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবার নিশ্চিত করা
  • সময়মতো ও নিয়মিত টিকাদান
  • জলবসন্তের টিকা দেওয়া
  • প্রতিবছর ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা দেওয়া।

লেখক: রেসিডেন্ট চিকিৎসক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত