ট্রেন অবরোধের ঘটনায় তিন কর্মী বরখাস্ত, তদন্ত কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২২, ০৬: ৩২
আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২২, ১৫: ০১

কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ে জংশন স্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন অবরোধের ঘটনায় রেলওয়ের তিন কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আবুল কালাম চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে জানান, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন অবরোধের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে রেলওয়ের তিন কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে এ ঘটনার তদন্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

গতকাল বুধবার আবুল কালাম চৌধুরী আরও জানান, ওই ঘটনায় রেলওয়ের চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ সহকারী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা আমির উদ্দিনকে প্রধান করে সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ও কুমিল্লার সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মোরসালিন রহমানকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া রেলওয়ের তিন কর্মী হলেন, লাকসামের ভারপ্রাপ্ত জুনিয়র রেলওয়ে ইন্সপেক্টর (জেআরআই) টিটিই মো. আমিনুল ইসলাম, টিটিই আমিন ভূঁইয়া ও টিটিই মুকন্দ লাল শিকারি।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে ট্রেনে শিক্ষার্থীদের নাজেহাল ও মারধরের অভিযোগে ট্রেন অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে ভর্তি–ইচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে ওই ট্রেনের টিটিইদের টিকিট নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নাজেহাল ও মারধর করেন ট্রেনের টিটিই ও আনসার সদস্যরা। সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ে জংশনে ট্রেনটি এলে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের নামানো হয়। তখন অন্য শিক্ষার্থীরা ট্রেন অবরোধ করে লাকসাম জংশনে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় তাঁরা ট্রেনের সামনে রেললাইনে শুয়ে পড়েন।

খবর পেয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা করলে রাত সোয়া ৯টায় শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ওই ট্রেনের যাত্রী শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘এটি বিরতিহীন ট্রেন ছিল। লাকসামের ভারপ্রাপ্ত জুনিয়র রেলওয়ে ইন্সপেক্টর (জেআরআই) আমিনুল ইসলাম আমাদের জোর করে লাকসাম জংশনে নামান। তিনি চট্টগ্রাম থেকে লাকসাম পর্যন্ত পুরো পথে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন।’

মাজহারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ট্রেন তো লাকসামে থামার কথা নয়। আমরা অপরাধ করলে ঢাকায় গন্তব্যের শেষ স্টেশনে নিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে পারত। কিন্তু আমিনুল ইসলাম পুরো পথেই আমাদের এক প্রকার জিম্মি করে রাখেন।’

চট্টগ্রাম রেলওয়ের ব্যবস্থাপক ডিআরএম আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিক তিন কর্মীকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিই। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে গঠিত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।’

এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের এএসপি ফিরোজ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে ছাত্রদের সঙ্গে টিটিইর ঝামেলা হয়। এ ঘটনায় ট্রেনটি দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত