রাহুল শর্মা, ঢাকা
আগামী বছর থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা নিতে চায় সরকার। এর জন্য ইতিমধ্যে ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) নামে আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগও নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিচালন নীতি ও শিক্ষার মানোন্নয়ন-সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে আগামীকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) বৈঠক ডাকা হয়েছে।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ অনুযায়ী, একক আওতাভুক্ত ভর্তি পরীক্ষার জন্য পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে আগামীকাল ৩ এপ্রিল একটি নীতিনির্ধারণী সভা অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এতে সভাপতিত্ব করবেন।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ছাড়াও পাঁচটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয় হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। আরও উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) উপাচার্য এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আগে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নিত। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের দেশের দূরদূরান্তে গিয়ে একাধিক ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হতো। এতে ভোগান্তির সঙ্গে খরচও বাড়ত। এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ক্ষোভ ছিল। দীর্ঘদিনের আলোচনা, চেষ্টা ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের নির্দেশনায় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথম গুচ্ছ ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। এতে অংশ নেয় কৃষি ও কৃষিশিক্ষাপ্রধান সাত বিশ্ববিদ্যালয়। এ ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা পরীক্ষা দিতে হয় না। একটি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী তাঁর যোগ্যতা ও পছন্দ অনুযায়ী গুচ্ছে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন। পরে একইভাবে ৩ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা নেয়।
গত কয়েক বছরের মতো এ বছরও সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়, ৮টি কৃষি এবং ৩টি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা গুচ্ছে একটি ভর্তি পরীক্ষা নেবে বলে জানায় ইউজিসি। তবে এর মধ্যে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি একক ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তুলেছে। আর ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট আলাদা পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে।
অভিযোগ রয়েছে, চলমান গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির দীর্ঘসূত্রতা, একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ফি দেওয়া, দীর্ঘ সময় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগ পরিবর্তনের (মাইগ্রেশন) সুযোগ রাখা, নির্ধারিত সময়ে ক্লাস শুরু না হওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ ভর্তি-ইচ্ছুক ও অভিভাবকেরা।
অভিযোগগুলোর সত্যতা স্বীকার করেছেন ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহও। ৬ মার্চ উপাচার্যদের নিয়ে এক সভায় তিনি বলেন, নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাই বলে এখান থেকে পিছু হটার বা বের হয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সভায় তিনি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ে সরকারের অভিপ্রায় বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সংবেদনশীল হওয়ার পরামর্শ দেন।
একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষাবিদ ও ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান। ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে এত বিশৃঙ্খলা পৃথিবীর কোথাও নেই উল্লেখ করে তিনি গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগটি ভালো। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কষ্ট লাঘব হবে। খরচও কমবে। মেডিকেলে যদি একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়, তাহলে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন নয়?’
তবে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একগুঁয়েমির কারণে এটি সম্ভব হচ্ছে না উল্লেখ করে আবদুল মান্নান বলেন, ‘এটি আদৌ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কি না, এটাই প্রশ্ন।’
বিষয়টি সময়সাপেক্ষ বলে মন্তব্য করেছেন উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও ডুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান। তাঁর মতে, বিষয়টি বাস্তবায়নে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজি করাতে হবে। একটি অভিন্ন ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া আরও অনেক একাডেমিক বিষয় রয়েছে, সেগুলোতেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যা সময়সাপেক্ষ।
জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বর্তমানে যে পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়, তা বিজ্ঞানসম্মত নয়, গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিও নয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি কমাতে একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিকল্প নেই। এ জন্য উন্নত বিশ্বের মতো আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তবে একক ভর্তি পরীক্ষা উদ্যোগের বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, বড় কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাধার কারণে একক ভর্তি পরীক্ষা চালু করা যাচ্ছে না। এবারের উদ্যোগ কতটা সফল হয়, তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে।
মূলত বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের একটি বড় অংশ ভর্তি পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত সম্মানী কমে যাওয়ার আশঙ্কা ও একগুঁয়েমির জন্য গুচ্ছে আসতে চায় না। এ ছাড়া এই প্রক্রিয়ায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্বে থাকবে, এটা নিয়েও মতপার্থক্য রয়েছে।
বৈঠকের কোনো চিঠি পাননি বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। তিনি গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিঠি পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা চাচ্ছি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি লাঘবে একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার। সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমানও এই উদ্যোগের বিষয়ে ইতিবাচক। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রয়োজনের নিরিখে ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি পরিবর্তন হতেই পারে। ভর্তি পরীক্ষা আরও বেশি অন্তর্ভুক্তি ও বহির্বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া দরকার। সবারই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা উচিত।’
বর্তমানে দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ৫৩টি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১০৯টি। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে ১৪০টি। এর বাইরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ৮৮০টি কলেজে স্নাতক (সম্মান) ও ডিগ্রি পাস কোর্স পড়ানো হয়। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন মাদ্রাসা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজে স্নাতক (সম্মান) পড়ানো হয়।
আগামী বছর থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা নিতে চায় সরকার। এর জন্য ইতিমধ্যে ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) নামে আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগও নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিচালন নীতি ও শিক্ষার মানোন্নয়ন-সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে আগামীকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) বৈঠক ডাকা হয়েছে।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ অনুযায়ী, একক আওতাভুক্ত ভর্তি পরীক্ষার জন্য পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে আগামীকাল ৩ এপ্রিল একটি নীতিনির্ধারণী সভা অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এতে সভাপতিত্ব করবেন।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ছাড়াও পাঁচটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয় হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। আরও উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) উপাচার্য এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আগে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নিত। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের দেশের দূরদূরান্তে গিয়ে একাধিক ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হতো। এতে ভোগান্তির সঙ্গে খরচও বাড়ত। এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ক্ষোভ ছিল। দীর্ঘদিনের আলোচনা, চেষ্টা ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের নির্দেশনায় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথম গুচ্ছ ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। এতে অংশ নেয় কৃষি ও কৃষিশিক্ষাপ্রধান সাত বিশ্ববিদ্যালয়। এ ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা পরীক্ষা দিতে হয় না। একটি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী তাঁর যোগ্যতা ও পছন্দ অনুযায়ী গুচ্ছে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন। পরে একইভাবে ৩ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা নেয়।
গত কয়েক বছরের মতো এ বছরও সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়, ৮টি কৃষি এবং ৩টি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা গুচ্ছে একটি ভর্তি পরীক্ষা নেবে বলে জানায় ইউজিসি। তবে এর মধ্যে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি একক ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তুলেছে। আর ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট আলাদা পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে।
অভিযোগ রয়েছে, চলমান গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির দীর্ঘসূত্রতা, একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ফি দেওয়া, দীর্ঘ সময় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগ পরিবর্তনের (মাইগ্রেশন) সুযোগ রাখা, নির্ধারিত সময়ে ক্লাস শুরু না হওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ ভর্তি-ইচ্ছুক ও অভিভাবকেরা।
অভিযোগগুলোর সত্যতা স্বীকার করেছেন ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহও। ৬ মার্চ উপাচার্যদের নিয়ে এক সভায় তিনি বলেন, নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাই বলে এখান থেকে পিছু হটার বা বের হয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সভায় তিনি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ে সরকারের অভিপ্রায় বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সংবেদনশীল হওয়ার পরামর্শ দেন।
একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষাবিদ ও ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান। ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে এত বিশৃঙ্খলা পৃথিবীর কোথাও নেই উল্লেখ করে তিনি গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগটি ভালো। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কষ্ট লাঘব হবে। খরচও কমবে। মেডিকেলে যদি একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়, তাহলে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন নয়?’
তবে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একগুঁয়েমির কারণে এটি সম্ভব হচ্ছে না উল্লেখ করে আবদুল মান্নান বলেন, ‘এটি আদৌ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কি না, এটাই প্রশ্ন।’
বিষয়টি সময়সাপেক্ষ বলে মন্তব্য করেছেন উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও ডুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান। তাঁর মতে, বিষয়টি বাস্তবায়নে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজি করাতে হবে। একটি অভিন্ন ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া আরও অনেক একাডেমিক বিষয় রয়েছে, সেগুলোতেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যা সময়সাপেক্ষ।
জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বর্তমানে যে পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়, তা বিজ্ঞানসম্মত নয়, গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিও নয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি কমাতে একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিকল্প নেই। এ জন্য উন্নত বিশ্বের মতো আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তবে একক ভর্তি পরীক্ষা উদ্যোগের বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, বড় কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাধার কারণে একক ভর্তি পরীক্ষা চালু করা যাচ্ছে না। এবারের উদ্যোগ কতটা সফল হয়, তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে।
মূলত বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের একটি বড় অংশ ভর্তি পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত সম্মানী কমে যাওয়ার আশঙ্কা ও একগুঁয়েমির জন্য গুচ্ছে আসতে চায় না। এ ছাড়া এই প্রক্রিয়ায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্বে থাকবে, এটা নিয়েও মতপার্থক্য রয়েছে।
বৈঠকের কোনো চিঠি পাননি বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। তিনি গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিঠি পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা চাচ্ছি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি লাঘবে একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার। সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমানও এই উদ্যোগের বিষয়ে ইতিবাচক। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রয়োজনের নিরিখে ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি পরিবর্তন হতেই পারে। ভর্তি পরীক্ষা আরও বেশি অন্তর্ভুক্তি ও বহির্বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া দরকার। সবারই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা উচিত।’
বর্তমানে দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ৫৩টি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১০৯টি। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে ১৪০টি। এর বাইরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ৮৮০টি কলেজে স্নাতক (সম্মান) ও ডিগ্রি পাস কোর্স পড়ানো হয়। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন মাদ্রাসা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজে স্নাতক (সম্মান) পড়ানো হয়।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে