Ajker Patrika

১ মাসে আসেনি একমুঠও

হারুনুর রশিদ, রায়পুরা (নরসিংদী)
১ মাসে আসেনি একমুঠও

নরসিংদীর রায়পুরায় আমন মৌসুমে গত ২২ নভেম্বর থেকে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এরপর পেরিয়ে গেছে এক মাসের বেশি; কিন্তু এ সময়ের মধ্যে একমুঠ ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, তাঁরা সরকারি কার্যক্রমের বিষয়ে জানেন না। কেউ কেউ জানলেও আগ্রহ কম।

উপজেলা অফিস থেকে ধান সংগ্রহের বার্তাটি মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, স্থানীয় কেবল টিভিতে প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও সেভাবে প্রচার হয়নি, অভিযোগ করেন কৃষকেরা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, কৃষকেরা বাইরে দাম বেশি পাওয়ায় সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তবে ইতিমধ্যে চারটি ধানের কলের সঙ্গে ৪০০ টন চাল নেওয়ার চুক্তি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, সরকারি দামের তুলনায় বাজারদর বেশি হওয়ায় সরকারি গুদামে ধান দিতে কৃষকের আগ্রহ কম। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫৬ টন। এদিকে উপজেলার খাদ্যগুদামে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ১০৫ টন। প্রতি কেজি চাল ৪২ এবং ধানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ টাকা। সংগ্রহ শেষ হবে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি। এরই মধ্যে এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এক কেজি তো দূরের কথা, একছটাক ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ।

উপজেলার স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, সরকারনির্ধারিত ধানের দামের ব্যবধান বাজারমূল্যের সঙ্গে খুবই কম। সরকারি গুদামে ধান নিয়ে বিক্রি করতে অনেক টাকা পরিবহনে ব্যয়সহ নানানরকম শর্ত থাকে। এর চেয়ে খোলাবাজারে বিক্রি করলে তুলনামূলক বেশি লাভ। তাই সরকারি গুদামে অনেকেই ধান বিক্রি করেননি চলতি মৌসুমে। উপজেলার হাটবাজারে এখন প্রতি মণ মোটা ধানের দাম ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকা আর চিকন ধানের ১২০০ থেকে ১৩৫০ টাকা। এদিকে সরকারি গুদামে ধানের মণপ্রতি নির্ধারিত দাম ১ হাজার ১২০ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক বলেন, ‘সরকারিভাবে ধান-চাল যে টাকায় কেনা হচ্ছে, খোলাবাজারে তার চেয়ে বেশি দামে বেচাকেনা হচ্ছে। সার, কীটনাশক, তেলসহ অন্য সবকিছুর যে দাম, তাতে লোকসান গুনতে হচ্ছে। ধানের দাম আরও কিছু বৃদ্ধি পেলে লাভবান হতেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মিলার বলেন, ধান কিনে চাল করতে সব মিলিয়ে খরচ পড়ছে আনুমানিক ৪৪-৪৯ টাকা। খোলাবাজারে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৫ টাকায়; কিন্তু সরকারিভাবে মূল্যনির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ টাকা। ট্রাক ভাড়া, লেবার খরচসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে এতে কেজিতে লোকসান হয় ২-৩ টাকা। লোকসানের পরও শুধু লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে চুক্তি করেছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলার কৃষকদের মধ্যে ধান বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারি দামের তুলনায় বাজারদর কিছুটা বেশি হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ কম। তারপরও কৃষি বিভাগ আমন সংগ্রহে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘শুরুর পর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চাল-ধান সংগ্রহ শূন্য শতাংশ। বাজারে ধান-চালের দাম বেশি। তাই গুদামে ধান দিতে কৃষকের আগ্রহ কম। কৃষকেরা তো চুক্তিবদ্ধ নন, মিলাররা আমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় চারজন মিলার চাল দিতে সম্মত হয়েছেন।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত