ছাত্রদের শৌচাগারে যেতে হয় ছাত্রীদের!

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২: ৪৮

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ড. মু. শহীদুল্লাহ একাডেমিক ভবনে প্রায় তিন হাজার ছাত্রী প্রতিদিন ক্লাস করছেন। তাঁদের জন্য ভবনের তৃতীয়তলায় দুটি শৌচাগার নিয়ে আছে একটি মাত্র কমনরুম। এতসংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য সেখানে শৌচাগার অপ্রতুল। শুধু এই ভবনই নয়, রাবির কোনো একাডেমিক ভবনেই ছাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত ও পরিচ্ছন্ন শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসগুলো বেলা ৩টার মধ্যে বন্ধ হওয়ার সময় ছাত্রীদের কমনরুমগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়। সন্ধ্যা বা রাতে ক্যাম্পাসে বের হলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় ছাত্রীদের। ফলে তাঁরা ছাত্রদের টয়লেট ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে নিরাপত্তাহীনতাসহ নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাঁদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনগুলো ঘুরে দেখা যায়, দশটি একাডেমিক ভবনের প্রতিটিতে ছাত্রীদের জন্য রয়েছে মাত্র দুটি করে শৌচাগারযুক্ত একটি কমনরুম। এ ছাড়া ভবনগুলোতে একাধিক সাধারণ ওয়াশরুম থাকলেও তা নারী শিক্ষার্থীদের জন্য অনুকূল নয়। সাধারণ টয়লেটগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। নির্ধারিত সময়ে ছাত্রী কমনরুমগুলো বন্ধ হওয়ায় বাকি সময়ে বাধ্য হয়েই অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবহার করছেন ছাত্রীরা। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের বাইরে কোথাও কোনো পাবলিক টয়লেট নেই।

ছাত্রীরা জানান, একাডেমিক ভবনগুলোতে ছাত্রীদের কমনরুম সংকটের কারণে তাঁরা বেশির ভাগ সময় ছেলেদের শৌচাগার ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে অনেক সময় নিরাপত্তার ভয় থাকে, আবার 
অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতেও পড়তে হয়। শৌচাগার না থাকায় অনেকের মধ্যে প্রস্রাব আটকে রাখার প্রবণতাও বাড়ছে। অনেকে লজ্জায় এ সমস্যার কথা বলতে পারেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আয়শা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমাদের একাডেমিক ভবনে মেয়েদের জন্য একটিমাত্র কমনরুম। সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয় বেলা ৩টায়। অন্য সময় ক্যাম্পাসে বের হলে বাধ্য হয়ে যেতে হয় ছেলেদের ওয়াশরুমে।’

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুক্তা আক্তার বলেন, ‘শৌচাগারের অপর্যাপ্ততার কারণে অনেক সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তখন দেখা যায় ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। আবার দেরি করে ক্লাসে ঢুকতে গেলে শিক্ষকরা অনুমতি দেন না। তাই বাধ্য হয়ে প্রস্রাব আটকে রাখি।’

শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রর প্রধান চিকিৎসক ডা. তবিবুর রহমান বলেন, অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবহারের ফলে ছেলেদের তুলনার মেয়েরা ইফেক্টেড হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। কেউ যদি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত থাকেন, টয়লেট ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন না করলে পরবর্তী ব্যবহারকারী নারী একই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি আর প্রস্রাব আটকে রাখার কারণে শিক্ষার্থীরা কিডনিসহ মূত্রাশয়ের নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের জন্য টয়লেটের বিষয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা হয়েছে। কীভাবে ভবনগুলোতে ছাত্রী কমনরুম বাড়ানো যায় সে বিষয়ে কথা চলছে। শিক্ষার্থীরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সময় আগত অভিভাবকেরা যেন কোনো ধরেনর বিড়ম্বনার স্বীকার না হন সেদিক বিবেচনা করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে টয়লেট স্থাপনের বিষয়ে আমরা ভাবছি।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত