Ajker Patrika

অধিকাংশ ওষুধ পান না রোগী

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ৫১
অধিকাংশ ওষুধ পান না রোগী

সরকারি ওষুধ দেওয়ার কথা থাকলেও রোগীদের বেশির ভাগ ওষুধ কিনতে হয় বাইরে থেকে। এ চিত্র চুয়াডাঙ্গায় সদর হাসপাতালে। ভর্তি ও বহির্বিভাগের রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের থেকে উৎকোচ নিয়ে ব্যবস্থাপত্রে ওষুধ লিখছেন চিকিৎসকেরা। বেশির ভাগ ওষুধই তাঁদের বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনতে হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীদের প্রয়োজনের ৯০ শতাংশ ওষুধ হাসপাতাল থেকে বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ।

দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের নাসির হোসেন বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে এসেছি। আশা ছিল, হাসপাতালে ভালো ডাক্তার দেখাব, সরকারি ওষুধও পাব। কিন্তু লাভ কিছুই হয়নি। সকাল ৮টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে হাসপাতালে পৌঁছেছি ১০টায়। আরও আধা ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে তারপর টিকিট পেয়েছি। ডাক্তারের কক্ষের বাইরে দাঁড়িয়ে থেকেছি আরও ১ ঘণ্টা। ডাক্তার দেখে অনেক ওষুধ লিখেছে। যার সবগুলো ওষুধই কিনতে হবে বাইরের ফার্মেসি থেকে। হাসপাতাল থেকে দিয়েছে শুধুমাত্র ব্যথার আর গ্যাসের ট্যাবলেট। যদি সব ওষুধ বাইরের ফার্মেসি থেকেই কিনতে হয়, তাহলে হাসপাতালের ওষুধ কোথায় যায়?’

হাসপাতালের নারী মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন মঞ্জুরা বেগম। তাঁর ছেলে শিপলুর রহমান বলেন, ‘চার দিন ধরে আমার মাকে নিয়ে হাসপাতালে রয়েছি। তিনি একসঙ্গে দুটি রোগে ভুগছেন। চার দিনে আমাদের ওষুধ কিনতে হয়েছে ২ হাজার টাকারও বেশি। প্রতিদিন তিন শ থেকে পাঁচ শ টাকার ওষুধ হাসপাতালের বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনে আনতে হয়। শুধু একটি অ্যান্টিবায়োটিক ও একটি করে গ্যাসের ওষুধ হাসপাতাল থেকে দিচ্ছে। ব্যবস্থাপত্রে আরও অনেকগুলো ওষুধের উল্লেখ আছে, যা আমদের হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে না। সরকার যে লাখ লাখ টাকার ওষুধ হাসপাতালে পাঠাচ্ছে, রোগীরা যদি সে ওষুধ নাই পান, তাহলে ওষুধগুলো কী হচ্ছে?’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন বিউল হক। তাঁর স্ত্রী রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘প্রেসক্রিপশনের দুই পাতায় শুধু ওষুধ লেখা। ডাক্তাররা প্রেসক্রিপশন ভর্তি করে ওষুধ লিখছেন। কিন্তু হাসপাতাল থেকে দিনে একটি করে স্যালাইন ও দুটা মাত্র ওষুধ পাচ্ছি। বাকি সব ওষুধ ফার্মেসি থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনের একটি ফার্মেসিতে পরিচিত মানুষ থাকায় ওষুধগুলো বাকিতে আনতে পারছি। হাসপাতাল থেকে ছুটি পেলে ওষুধের টাকা দিয়ে যাব বলেছি। যদি সব ওষুধ বাইরে থেকেই কিনতে হয়, তাহলে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি থেকে লাভ কী? বাড়িতে থেকেই বাইরের ওষুধ কিনে খাওয়াতে পারতাম।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আরএমও এ এস এম ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘রোগীরা ওষুধ পাচ্ছেন না, এমন হওয়ার কথা নয়। হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহ রয়েছে। চিকিৎসকদের হাসপাতালের ওষুধই লেখার কথা। তবে প্রয়োজনে দুই একটা ওষুধ বাইরের লিখতেই পারেন। এ বিষয়ে হাসপাতালের কনসালট্যান্টদের বলা রয়েছে, ওষুধ সরবরাহ শেষ না হওয়া পর্যন্ত যেন হাসপাতালের ওষুধই লেখেন। এবং রোগীদের ছুটি-পরবর্তী প্রেসক্রিপশনেও হাসপাতালের ওষুধই যেন দেওয়া হয়।’

আরএমও আরও বলেন, ‘ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা সপ্তাহে দুই দিন (রোববার ও বুধবার) বেলা ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের জন্য হাসপাতালের দুই ভবনের দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাতের দিন ও সময় নির্ধারণ করে লেখাও আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত