ফেনী-২: তৃণমূলে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন নেতারা

এমাম হোসেন এমাম দাগনভূঞা (ফেনী) 
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ১২: ৫৬
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ১৩: ১১

জাতীয় সংসদে ফেনীর সংসদীয় আসন তিনটি। জেলার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত ‘ফেনী-২’ (সদর) আসনটি ফেনীর রাজনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।এ আসনের সঙ্গে দুটি শব্দ জড়িয়ে আছে ওতপ্রোতভাবে— ‘জয়নাল’ ও ‘হাজারী’। দীর্ঘদিন এখানে সংসদ সদস্য ছিলেন আলোচিত ব্যক্তিত্ব জয়নাল হাজারী। বেশ কয়েকবার এমপি হয়েছেন বিএনপির জয়নাল আবেদীনও। আর বর্তমানে এমপির দায়িত্ব পালন করছেন আওয়ামী লীগের নিজাম উদ্দিন হাজারী।

জয়নাল হাজারী প্রয়াত। তবে এখনো ভোটের মাঠে তাঁর প্রভাব শেষ হয়ে যায়নি। আগামী নির্বাচনে এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন বর্তমান সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী। তাঁর বিকল্প নেই বলেই আপাতত মনে করা হচ্ছে। তবে আরও বেশ কয়েকজনকে নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন। তবে এ বিষয়ে তাঁদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রয়াত জয়নাল আবেদীন হাজারীর অনুসারী ফেনী জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

অপরদিকে ফেনীতে বিএনপির তেমন প্রচার না থাকলেও দলটি নির্বাচনে অংশ নিলে এ আসন থেকে প্রায় ২০ জন মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। গত সংসদ নির্বাচনে ১৮ জন মনোনয়ন চেয়েছিলেন। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে তিনবারের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক জয়নাল আবেদিনকে (ভিপি) অনেকে দেখতে চান। আরও যাঁদের নাম শোনা যাচ্ছে তাঁরা হলেন সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জিয়াউদ্দিন মিস্টার, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য মেজবাহ উদ্দিন খান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী হাবিব উল্যাহ মানিক।

জাতীয় পার্টির তেমন কোনো অবস্থান না থাকলেও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মজুমদার (ভিপি জহির) এবং গত নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী খন্দকার নজরুল ইসলাম মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। জামায়াতে ইসলামীর সাবেক জেলা আমির অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া জোট থেকে মনোনয়ন চাইবেন। হাত পাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কাজী একরামুল হক ভূঁইয়া, কাস্তে প্রতীকে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জসীম উদ্দীন, খেলাফত মজলিসের মাওলানা জসিম উদ্দিনের নামও শোনা যাচ্ছে।

নির্বাচনের অনেক দিন বাকি থাকলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকেরা ইতিমধ্যে তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন। বিশেষ করে সরকারি দল আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিরোধী দল বিএনপি ও অন্য সব রাজনৈতিক দলে এখনো এ নির্বাচন ঘিরে তেমন কোনো আগ্রহ নেই। তবে প্রার্থীর ছড়াছড়ি দেখা যাচ্ছে। থেমে নেই তৎপরতা।

ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ আসনে যিনি নির্বাচিত হন তিনি দলের প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছেন। প্রচলিত আছে, ফেনীর শহর যাঁর, জেলার রাজনৈতিক মাঠে শক্তি তাঁর। আর এ শক্তির লড়াইয়ে বরাবরই আওয়ামী লীগ এগিয়ে।

ফেনী সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীলের মতে, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবকিছু বিশ্লেষণ করে নিজাম উদ্দিন হাজারীকেই মনোনয়ন দেবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। এখানে তাঁর বিকল্প কেউ নেই। তিনি মনোনয়ন পেলে জনগণ ও দলীয় নেতা-কর্মীরা সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে তাঁর জন্য কাজ করবেন।’ তবে সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘দলের কাছে আমি মনোনয়ন চাইব। মনোনয়ন দিলে অবশ্যই আমি বিজয়ী হব।’

বিএনপির জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো একতরফা নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হলে প্রতিবারের মতো এবারও প্রার্থী হব।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত