সয়াবিনের বাজারে চোখ যুক্তরাষ্ট্রের

আবু সাইম, দুবাই থেকে ফিরে
প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২: ৫০

প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ এবং পশুখাদ্য তৈরিতে দেশে সয়াবিনের প্রচুর চাহিদা রয়েছে, যার প্রায় ৯০ ভাগই পূরণ হয় আমদানির মাধ্যমে। তাই বাংলাদেশকে সয়াবিনের বড় ও সম্ভাবনাময় রপ্তানি বাজার হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশে সয়াবিনের বাজার সম্ভাবনার বিষয়টি উঠে আসে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিলের (ইউএসএসইসি) ‘সাসটেইনা সামিটে’। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের পাম জুমেইরার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সম্প্রতি এ সামিট অনুষ্ঠিত হয়। এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খাদ্য ও কৃষি খাতের বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী, আমদানি, রপ্তানিকারকসহ শতাধিক অতিথি সামিটে অংশ নেন।

ইউএসএসইসির পরিসংখ্যান বলছে, দিনে দিনে সয়াবিনের চাহিদা বাড়ছে। প্রধান দুটি প্রোটিনের উৎস ডিম ও মাংস উৎপাদনে সয়াবিন একটি অপরিহার্য উপাদান। আমেরিকা, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা সয়াবিনের প্রধান রপ্তানিকারক। এর মধ্যে আমেরিকা সয়াবিন উৎপাদনে সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ২০২২ সালে দেশটি ৭ কোটি ১৭ লাখ টন সয়াবিন রপ্তানি করেছে। সয়াবিন আমদানিকারকদের মধ্যে বাংলাদেশ ১৩তম।

বাংলাদেশে ভোজ্য তেল উৎপাদন, পোলট্রি ও প্রাণিসম্পদ খাতে বছরে প্রায় ২৫ লাখ টন সয়াবিনের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে দেশে ১০ শতাংশের মতো উৎপন্ন হয়, বাকিটা বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশে মোট আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশই আসে আমেরিকা থেকে।

ইউএসএসইসির দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকা অঞ্চলের পরিচালক কেভিন রোপেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন খাদ্যের মান বাড়াতে সহায়ক হবে। তা ছাড়া তিনি কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পেও গুরুত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশে সয়াবিনকেন্দ্রিক শিল্প প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমরা দেশটিকে সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবেই দেখছি।’

ইউএসএসইসির বাংলাদেশের টিম লিডার খবিবুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে আমদানি করা সয়াবিনের প্রায় ৩৭ শতাংশ পূরণ হয় ইউএস সয়াবিন থেকে। আমরা এ বাজারে অংশীদারত্ব চলতি বছর আরও আড়াই শতাংশ বাড়াতে চাই। ইউএস সয়াবিন অন্য দেশের সয়াবিন থেকে পুষ্টিগুণে ভালো। এ সয়াবিন উৎপাদনে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের পূর্বাভাস বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে সয়াবিনের চাহিদা বেড়ে ২৮ লাখ টনে উন্নীত হবে, যা আগের বছরের চেয়ে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ নিয়ে ইউএসএসইসির পরিসংখ্যান বলছে, দেশের মোট চাহিদার মধ্যে দেড় লাখ টন দেশে উৎপাদিত হয়। বাকিটা আমদানি করা হয়। মূলত সয়াবিন সিড ও সয়ামিল হিসেবেই এটি আমদানি হয়। গত বছর সয়াবিন সিড আমদানি হয়েছে ২২ লাখ টন এবং সয়ামিল আমদানি হয়েছে ৬ লাখ ৭৭ হাজার টন। সয়াবিনে যুক্তরাষ্ট্রের বড় অংশ থাকলেও সয়ামিলে তা ১ শতাংশের নিচে।

সামিটে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ও গ্রিনটেক ফাউন্ডেশনের পরামর্শক খন্দকার মোর্শেদ মিল্লাত বলেন, কৃষিতে সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহারে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। কৃষিতে টেকসই ব্যবস্থা আনতে গঠিত সবুজ তহবিল বা গ্রিন ফান্ড থেকে সরকার ৩ থেকে ৫ শতাংশ হারে ঋণও দিচ্ছে। কিন্তু প্রচারের অভাবে তা মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। এ ঋণে দেশেও সয়াবিনের চাষ সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত