Ajker Patrika

খাবার পানি রক্ষণাবেক্ষণ করে দিনবদল শেফালির

বাবুল আক্তার, পাইকগাছা
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২২, ১২: ৪৩
খাবার পানি রক্ষণাবেক্ষণ   করে দিনবদল শেফালির

পাইকগাছায় বিশুদ্ধ খাবার পানির ট্যাংক রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন শেফালি বেগম। একসময় অনাহারে থাকা শেফালি এখন পুরোদস্তুর স্বাবলম্বী। তিনি অন্তত ৪০০ পরিবারের বসতবাড়িতে স্থাপন করা বিশুদ্ধ খাবার পানির ট্যাংক দেখভাল করেন এবং কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিকভাবে এর সমাধান করেন। এসব ট্যাংকে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা হয়।

এলাকার সবার কাছে শেফালি বেগম ‘পানি আপা’ হিসেবেই পরিচিত। তিনি উপজেলার বাসাখালী গ্রামের দরিদ্র খালেক সানার মেয়ে। একই এলাকার মহাসিন সানার সঙ্গে বিয়ে হয় এবং তিন সন্তানের মা হন তিনি। তবে সংসার টেকেনি।।

শেফালি জানান, ৩টি সন্তান নিয়ে দুঃসহ জীবন কাটতে থাকে তার। কি করবে কোন কুল কিনারা পাচ্ছিলেন না। পাইকগাছার বাসাখালী, হোগলারচক ও কেচকিবুনিয়া এই ৩টি গ্রাম নিয়ে ৩ নম্বর ওয়ার্ড। জেন্ডার রেসপনসিভ কোস্টাল অ্যাডাপটেশন (জিআরসিএ) প্রকল্পের আওতায় এ ওয়ার্ডে ৪০০ পরিবারের বসতবাড়িতে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংরক্ষণে ট্যাংক স্থাপন করা হয়। এ সব ট্যাংক রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ও সেবা প্রদান করা বাবদ শেফালি বেগম মাসে অন্তত ৮ হাজার টাকা পান। এতে এক দিকে পানির ট্যাংকগুলো যেমন সচল থাকছে তেমনি অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন শেফালি।

যে শেফালির অনাহারে দিন কাটতো, সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো আজ তিনি একজন স্বাবলম্বী নারী। এলাকার সবার কাছে ‘পানি আপা’ নামেই পরিচিত তিনি। বাসাখালী গ্রামের উপকারভোগী ফরিদা বেগম জানান, পানি আপা শেফালির মাধ্যমে আমাদের পানির ট্যাংক সচল রয়েছে। আমরা তার মাধ্যমে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংরক্ষণের অনেক ধারণাও লাভ করছি।

শেফালি জানান, এক সময় আমার সংসার চালাতে গিয়ে খুব হিমশিম খেতে হতো। সবাই যখন পানি আপা বলে ডাকে তখন নিজের মধ্যে দারুণ একটা ভালো লাগা কাজ করে। বর্তমানে সুন্দরভাবে সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলেদের ভালোভাবে লেখাপড়াও করাতে পারছি। এখন আমার সংসারে অভাব অনটন নেই বললেই চলে।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছা এবং সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগরের ৩৯টি ইউনিয়নের ১০১টি ওয়ার্ডে বাস্তবায়িত হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি প্রকল্প। লবণাক্ততা মোকাবিলায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করণের পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পাইকগাছায় ৩ হাজার ২১২টি বসতবাড়িভিত্তিক বিশুদ্ধ খাবার পানির উৎস স্থাপন করা হয়।

এসব উৎস সচল রাখার জন্য প্রকল্প হতে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাজের পরিধি অনুসারে কমপক্ষে একজন নারী উদ্যোক্তা নির্বাচন করা হয়েছে। এই রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বপ্রাপ্ত নারীকে জিসিএ প্রকল্প পানি আপা নামে অবহিত করেছে। যিনি নির্দিষ্ট ফি এর বিনিময়ে রক্ষণাবেক্ষণ সেবা ও পরামর্শ প্রদান করবেন। অত্র প্রকল্পের আওতাধীন গড়ইখালী ইউনিয়নের ৩ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড। এ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে পানি আপা হিসেবে নির্বাচিত করা হয় শেফালিকে।

জিআরসিএ প্রকল্প থেকে শেফালিকে বিভিন্ন ধরনের অরিয়েন্টেশন প্রদান করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত