গম চাষে ফিরেছে সুদিন

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২২, ০৬: ৪৩
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২২, ১১: ৫৮

একসময় পীরগঞ্জ উপজেলায় গমের ব্যাপক আবাদ হতো। ফলনও ভালো হতো। কিন্তু ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ মহামারি আকার ধারণ করলে গম চাষ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কৃষকেরা কয়েক বছর গম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এর বদলে চাষ করেন ভুট্টার। তবে আবার কৃষকদের গম চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। এ বছর উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে গম চাষ করেছেন কৃষকেরা। তাঁরা বলছেন, গমের সুদিন ফিরছে।

২০১৫-১৬ মৌসুমে পীরগঞ্জে গমের ব্লাস্ট রোগ হয়। পরের মৌসুমে এ উপজেলায় গম চাষে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কিন্তু কয়েকজন কৃষক নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গম চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এরপর কৃষকেরা গম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। তাঁরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তবে চলতি বছর উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে আবার গম চাষ করছেন কৃষকেরা। এবার আবহাওয়া অনুকূল। উপজেলার কোথাও ব্লাস্টের আক্রমণ দেখা দেয়নি। গমের ফলন ভালো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ মৌসুমে উপজেলায় ২২০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে গম চাষ করা হয় প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৫০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে চাষ করা হয় প্রায় ২৭০ হেক্টর জমিতে। চলতি বছর ৩০০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে গমের আবাদ করা হয়েছে ৩২৫ হেক্টর জমিতে।

উপজেলার পাঁচগাছি ইউপির আমোদপুর গ্রামের গমচাষি বাবু মণ্ডল ও জানুরাম বলেন, গমে রোগ হওয়ার কারণে কয়েক বছর আগে অনেক ক্ষতি হয়েছিল। কৃষি অফিসের লোকজন এসে গম চাষ নিষেধ করেছিলেন। এ জন্য তাঁরা গম চাষ করেননি। এ বছর আবার গম চাষ করতে বলেছে কৃষি অফিস। তাই তাঁরা গমের আবাদ করেছেন। এত সুন্দর গম আগে কখনো হয়নি। এবার বেশ ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, ‘২০১৫ সালে এ অঞ্চলে গমে ব্লাস্টের আক্রমণ মহামারি আকার ধারণ করে। সে সময় কৃষকেরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে পরের বছর ২০১৬ সালে আমরা এ এলাকায় গম চাষে নিষেধাজ্ঞা জারি করি। এতে ব্লাস্টের প্রাদুর্ভাব কম হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর থেকে আমরা আবার গম চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। কৃষকেরাও আবার গম চাষে আগ্রহ দেখিয়ে চাষ করছেন। এ বছর পীরগঞ্জ উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৩০০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু উপজেলায় গম চাষ হয়েছে প্রায় ৩২৫ হেক্টর জমিতে।’

সাদেকুজ্জামান সরকার আরও বলেন, ‘এ উপজেলার মাটি গম চাষের জন্য উপযুক্ত। আমরা কৃষকদের নানা রোগ প্রতিরোধী জাতের গম চাষের পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া এবার গম চাষের আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। রোগবালাইও আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রণোদনার মাধ্যমে গম চাষে আমরা কৃষকদের সার, বীজ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছি। সেই সঙ্গে আমরা আধুনিক উপায়ে গম চাষের জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত