Ajker Patrika

নিহত নাফিজের বাবা চেনেন না বাদীকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নিহত নাফিজের বাবা চেনেন না বাদীকে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফার্মগেটে নিহত কলেজছাত্র গোলাম নাফিজ হত্যা মামলার বাদীকে চেনেন না তার বাবা গোলাম রহমান। মামলায় ঘটনার তারিখও ভিন্ন। অপরিচিত ব্যক্তি বাদী হওয়ায় ও ভুল তথ্য দেওয়ায় ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তিনি। এই বাদীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল গোলাম নাফিজ। ওই শিক্ষা- প্রতিষ্ঠান থেকেই এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিল সে। গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিতে বন্ধুদের সঙ্গে শাহবাগে যাওয়ার সময় ফার্মগেটে ওভারব্রিজের নিচে গুলিবিদ্ধ হয় সে। রিকশার পাদানিতে পড়ে থাকা নাফিসের নিথর দেহের ছবি কাঁদিয়েছে মানুষকে। তাদের বাসা মহাখালীতে। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে ছিল ছোট। বড় ভাই গোলাম রাসেল।

নাফিজ হত্যার ঘটনায় পরিবার মামলা করার আগেই মো. রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ২৫ আগস্ট ঢাকার আদালতে নালিশি মামলা করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে সেটিকে এজাহার হিসেবে নিতে তেজগাঁও থানার পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত। মামলায় নাফিজের মৃত্যুর তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১ আগস্ট।

কিন্তু এই মামলার বাদী রফিকুল নিহত নাফিজের কেউ নন। এমন হত্যার ঘটনায় অপরিচিত ব্যক্তি মামলা করায় বিস্ময় প্রকাশ করেন নাফিজের বাবা গোলাম রহমান। গতকাল শনিবার তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন,‘এই রফিকুল ইসলাম নামের ব্যক্তিকে আমি চিনি না, জানি না। আমার ছেলে মারা গেছে, অথচ আমি মামলা করতে পারিনি। একদিন তেজগাঁও থানা থেকে আমাকে ফোন দিয়ে জানানো হলো, নাফিজ হত্যার ঘটনায় একজন আদালতে মামলা করেছেন। আমাকে থানায় যেতে বলা হয়। থানায় গিয়ে দেখলাম মামলা হয়েছে। কিন্তু বাদী ও আসামিদের চিনি না। আমি বিষয়টি ওসিকে জানালে তিনি আমাকে একটি এজাহার দেওয়ার পরামর্শ দেন। আমি এই বাদীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব। আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি।’ 

রফিকুল ইসলামের করা মামলায় আসামি হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী মনিরুজ্জামানসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই আসামিদের মধ্যে বিভিন্ন জেলার ও তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগসহ এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা রয়েছেন। 

আদালতে করা মামলার বাদী রফিকুল ইসলামের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ২৩/৪/১ পশ্চিম তেজতুরী বাজার। তবে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, সেখানে এ নামের কোনো বাসিন্দা নেই। মামলার আবেদনে রফিকুলের দেওয়া মোবাইল নম্বরে গতকাল ফোন করে তা বন্ধ পাওয়া গেছে। 

নাফিজ হত্যা মামলাটি তদন্ত করছেন তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নুরুজ্জামান ভূঁইয়া। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাদীর সঙ্গে ওই পরিবারের কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই বলে শুনেছি। তবে তদন্ত করে সবকিছু ঠিক করা হবে। নাফিসের বাবার সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত