হারিয়ে যাচ্ছে হরিতাল

আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭: ১৮
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯: ০১

প্রাচীন বট-পাকুড়গাছ কমে যাওয়ায় খাদ্যের অভাবে হরিতাল পাখির সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পুখুরিয়া এলাকায় সম্প্রতি এক বটগাছে দেখা মেলে হরিতালের। প্রিয় খাবার ‘বটফল’ খেতে ব্যস্ত গাছের ডালে বসে।

হরিতাল এ দেশে বটকল, বড় হরিয়াল, হলদে পা হরিয়াল বা হলদে পা সবুজ কপোত নামে পরিচিত। ইংরেজি নাম Yellow-footed বা Yellow-legged Green Pigeon। বৈজ্ঞানিক নাম Treron phoenicoptera। এদের পাঁচটি উপ-প্রজাতির মধ্যে এ দেশে শুধু Treron phoenicoptera phoenicoptera উপ-প্রজাতিটির দেখা মেলে।

পাখিটি সাধারণত লম্বায় ২৫ থেকে ৩৩ সেন্টিমিটার হয়। এদের দেহের ওপরের অংশের রং হালকা ধূসর। ঘাড়ে লালচে ছোপ ও ডানায় সবুজাভ কালোর ওপর হলদে টান রয়েছে। বুকের নিচের অংশ, পেট ও তলপেট ধূসর। কাঁধে এক ফালি হালকা বেগুনি রং। লেজের ওপরের অংশের গোড়ায় জলপাই-হলদে বলয় থাকে। চোখের আইরিশের ভেতরের বলয়টি নীল ও বাইরেরটা গোলাপি। ঠোঁটের রং হালকা সবুজাভ। পা ও পায়ের আঙুল চকচকে হলুদ।

পুখুরিয়া এলাকার পাখিপ্রেমী আব্দুল কাইয়ুম মিয়া বলেন, এই পাখি ৭-৮ বছর আগেও অনেক দেখা যেত। ইদানীং দেখা মেলা ভার। গাছ সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা ছাড়া এসব প্রজাতির পাখি সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে না।

মানিকগঞ্জ ‘পাখি ও পরিবেশ লালন করি’ (পালক)-এর সদস্যসচিব বিমল চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের দেশে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় হলদে পা হরিয়াল হারিয়ে যাচ্ছে। বটগাছ, পাকুড়গাছ, খেজুরগাছ ও পাকুড়গাছ কমে যাওয়ায় তাদের আবাসস্থল হারিয়ে যাচ্ছে।

হরিয়াল একধরনের কবুতরজাতীয়, ফলভোগী বৃক্ষচারী বিরলদর্শন পাখি। তবে ইদানীং অনেকে ঘরেও পুষে থাকেন। দেখতে কবুতরের মতো সুদর্শন। একসময় দেশের বনাঞ্চলে প্রচুর দেখা যেত। তবে আবাসস্থল সংকটে আর সেভাবে নজরে পড়ে না। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন। পুরুষ পাখির কপাল ধূসর। মাথা সবুজাভ-হলুদ। ঘাড়ে হালকা ধূসর পট্টি। পিঠ ও ডানা গাঢ় দারুচিনি রঙের। স্ত্রী পাখির কপাল ও ঘাড়ে ধূসর পট্টি নেই। পিঠ গাঢ় সবুজ। উভয়ের ঠোঁট সবুজাভ-ধূসর। চোখ হালকা নীলাভ। পা গোলাপি লাল। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি তাদের প্রজনন সময়কাল। গাছের পত্রপল্লভের আড়ালে লতাপাতা, চিকন কাঠি দিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে দুটি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৬ থেকে ১৮ দিন। বাচ্চারা উড়তে শেখে ২১-২৭ দিনে।

ঘিওর উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. ফারুক হোসাইন বলেন, হরিতাল পাখি মূলত আর্দ্র পাতাঝরা বন, কৃষিজমি, বাগান প্রভৃতি এলাকায়, যেখানে ছোট ছোট নরম ফলের গাছ, যেমন-বট, পাকুড়, খোকসা, জগডুমুর, আম, বকুল, বউলা গোটা এ-জাতীয় গাছে বাস করে। কিন্তু বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে এদের সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। এরা সকাল ও সূর্যাস্তের সময় খাদ্য সংগ্রহে বেশ তৎপর থাকে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত