Ajker Patrika

সেতু চালুর আগেই দেবে গেল স্প্যান!

গাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডুমুরিয়া
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ২২
সেতু চালুর আগেই দেবে গেল স্প্যান!

খুলনার ডুমুরিয়ায় চটচটিয়া-শিবনগর সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই একটি স্প্যান দেবে গেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। নির্মাণে ব্যবহৃত উপকরণের মান নিয়েও নানা অভিযোগ তাঁদের। তবে এলজিইডি প্রকৌশলীরা বলছেন ভিন্ন কথা।

তাঁদের দাবি, সেতুর কোনো স্প্যান দেবে যায়নি। ডিজাইনে ওই স্থান নিচু ধরা আছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রকৌশলী'রা বলছেন, ‘পিসি গার্ডার ঢালাই দেওয়ার সময় ওই স্থানটি নিচু হয়ে গেছে।

এদিকে ত্রুটিপূর্ণ সেতুটি তড়িঘড়ি করে হস্তান্তর ও খুলে দিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তোড়জোড় শুরু করেছে বলেও জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও এলজিইডির প্রকৌশলীদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, খুলনার শহরের সঙ্গে ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, কয়রা এবং সাতক্ষীরার তালা উপজেলার যোগাযোগ সহজ করতে ডুমুরিয়ায় চটচটিয়া-শিবনগর সড়কে পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কে দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণে প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয় ৩১ কোটি ৩১ লাখ ৪১ হাজার ১৭০ টাকা। তবে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২৭ কোটি ৯৭ লাখ ৪৪ হাজার ৩২৪ টাকা মূল্যে ২০১৭ সালে যশোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএমবি-আইটির (জেভি) সঙ্গে চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয়। এরপর ওই বছর ১২ নভেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। কাজ সমাপ্তির সময় ধরা হয় ২০১৯ সালের ১১ মে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি। ফলে মেয়াদ বেড়েছে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত। আর ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ২৮ কোটি টাকা।

আরও জানা গেছে, এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়নের বসুন্দিয়া ডাঙ্গা বাজার-মাগুরখালী ইউপি অফিস সড়কে ২ হাজার ৪৯০ মিটার চেইনেজে ভদ্রা নদীর ওপর ৩১৫ দশমিক ৩০ মিটার লম্বা ও ৭ দশমিক ৩ মিটার চওড়া পিসি গার্ডার সেতু নির্মিত হচ্ছে। যেখানে ৪৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ৭টি স্প্যান বসেছে। এ ছাড়া দুই পাশে ৩০০ মিটার করে এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষে চলতি বছর মার্চে সেতুটি হস্তান্তর করা হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা কমলেশ মণ্ডল, সাধন মহন্ত, আশরাফ হোসেন মোল্লা কৃষ্ণপদ মণ্ডল ও অসীম মণ্ডল জানান, সেতুর চরচরিয়া অংশের দ্বিতীয় স্প্যানটি দেবে গেছে। ফলে এ সেতু দিয়ে মাঝারি বা বড় ধরনের ট্রাক চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ বলে তাঁরা জানান।

পাইকগাছার বাসিন্দা দেবাশীষ রায় জানান, ‘সেতুটি নির্মাণে পাইকগাছার সঙ্গে খুলনার দূরত্ব ২০ কিলোমিটার কমবে। সময় বাঁচবে দেড় ঘণ্টা। কিন্তু নির্মাণের মান সন্তোষজনক হচ্ছে না।’

ডুমুরিয়ার ১৪ নম্বর মাগুরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ সানা বলেন, ‘স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে স্প্যান দেবে ওপরের অংশ নিচু হয়ে গেছে। এ ছাড়া সেতুর রডে এখনই মরিচা পড়েছে।’ এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাস্তবায়নকারী সংস্থা এলজিইডিকে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা বিষয়টি অন্যভাবে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।

তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রকৌশলী প্রলয় কুমার সরকার স্প্যান দেবে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘পিসি গার্ডার ঢালাই দেওয়ার সময় ওই স্থানটি নিচু হয়ে গেছে। ওখানে ঢালাই দিয়ে উঁচু ও বাকি কাজ শেষ হলে নিচুর পরিমাণ অনেকটা কমে আসবে।’ নির্মাণ উপকরণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কোম্পানির রড এখানে ব্যবহৃত হয়েছে ঠিক কিন্তু সেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা।’

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘কোনো স্প্যান দেবে যায়নি। ডিজাইনে ওই স্থান নিচু ধরা আছে। এ ছাড়া উপকরণ সামগ্রীর মানও ভালো।’ খুলনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান জানান, ডিজাইনে ওই স্থানটিতে নিচু ধরা আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়নি, নাহিদের মন্তব্যের জবাবে উমামা

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

খামেনিকে চিঠি দিয়ে যে প্রস্তাব দিলেন ট্রাম্প

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারী বাধ্যতামূলক ছুটিতে, মামলা এখন আদালতের এখতিয়ারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত