ড. মিল্টন বিশ্বাস
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে স্মরণীয় একটি দিন ১৭ এপ্রিল। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন কুষ্টিয়া (বর্তমান মেহেরপুর) জেলার বৈদ্যনাথতলায় এক আমবাগানে শপথ নেয় স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার বা মুজিবনগর সরকার। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মন্ত্রীদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন হয় ১৮ এপ্রিল। তার আগে ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র গৃহীত হওয়ার বিষয়টি ছিল মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও বাঙালির জীবনে দুর্যোগ মোকাবিলার অন্যতম মাইলফলক ঘটনা। ১৭ এপ্রিল শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আবদুল মান্নান এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী। তিনিই ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করান। নতুন সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল প্রণীত ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ ছিল বাংলাদেশের মুক্তিকামী রাষ্ট্রের প্রথম সংবিধান। এই ঘোষণাপত্রটি বাংলাদেশের প্রথম সরকার বা মুজিবনগর সরকার কর্তৃক ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হয়। ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম লিখেছেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, মুজিবনগর সরকার ও স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়—এ তিনটি ঘটনা একসূত্রে গাঁথা।’ তাঁর স্মৃতিচারণা থেকে জানা যায়, ‘তাজউদ্দীন আহমদ সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কুষ্টিয়া জেলার সীমান্তে অধিবেশন আহ্বান করেন। ১০ এপ্রিলের ওই অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকার পরিচালনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয়। সর্বসম্মতিক্রমে স্বাধীনতাযুদ্ধ পরিচালনা ও পাক হানাদার বাহিনীকে স্বদেশ ভূমি থেকে বিতাড়িত করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত এবং নির্দেশিত পথে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনের জন্য প্রথম সরকার গঠন করা হয়।’ ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুসারে ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। কারণ ঘোষণাপত্রে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের এই স্বাধীনতার ঘোষণা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে কার্যকর বলে গণ্য হবে।’
ঘোষণাপত্রের একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো বঙ্গবন্ধুর ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণাকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং তাঁকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে অভিহিত করা; অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা অনুমোদন করে আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয় যে, শাসনতন্ত্র প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপরাষ্ট্রপ্রধান পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন। কোনো কারণে যদি রাষ্ট্রপ্রধান না থাকেন অথবা যদি রাষ্ট্রপ্রধান কাজে যোগদান করতে না পারেন অথবা তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে যদি অক্ষম হন, তবে রাষ্ট্রপ্রধান প্রদত্ত সকল দায়িত্ব উপরাষ্ট্রপ্রধান পালন করবেন। বর্ণিত ঘটনা অনুসারে আমরা জানি, ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭১ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে শাসনতন্ত্র রচনার উদ্দেশ্যে প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়েছিল এবং নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ ১৬৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগদলীয় ১৬৭ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছিল; কিন্তু জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ শাসনতন্ত্র রচনার উদ্দেশ্যে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অধিবেশন আহ্বান করেও বেআইনিভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য তা বন্ধ ঘোষণা করেন। উপরন্তু জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে পারস্পরিক আলোচনাকালে ন্যায়নীতিবহির্ভূত এবং বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধ ঘোষণা করে গণহত্যা চালায়।
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মতো মুজিবনগর সরকারের তাৎপর্যপূর্ণ দিক ছিল, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় যথার্থ পরিকল্পনা ও নির্দেশনা প্রদান। মুজিবনগর সরকারকে ১৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ভাগ করা হয়। এ ছাড়া কয়েকটি বিভাগ মন্ত্রিপরিষদের কর্তৃত্বাধীনে ছিল। সেদিনই যুদ্ধরত অঞ্চলকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে প্রতিটিতে একজন করে সেক্টর কমান্ডার নিয়োগ করা হয়। কমান্ডোরা যখন যে এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতেন, সেই সেক্টরের কমান্ডারের অধীনে থাকতেন। এ ছাড়া জেড ফোর্স, কে ফোর্স ও এস ফোর্স নামে তিনটি ব্রিগেড গঠন হয়েছিল। বহির্বিশ্বের সরকার ও জনগণের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করার জন্য বিদেশে বাংলাদেশ মিশন স্থাপন এবং বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক প্রতিনিধিদল প্রেরণ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশ্বব্যাপী জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও চলতে থাকে। ২০২০ সালে যেমন করোনার প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯২ হাজার কোটি টাকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন, ঠিক ১৯৭১ সালেও একইভাবে সংকটকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য অস্থায়ী সরকার কর্তৃক অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তখনকার সরকার তার আয়ের উৎস ও ব্যয়ের খাত নির্ধারণ করে প্রথমে ছয় মাসের জন্য একটি বাজেট তৈরি এবং বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত অর্থ সংরক্ষণের জন্য ট্রেজারি স্থাপন করে। প্রবাসী বাঙালি ও বিভিন্ন বিদেশি নাগরিক এবং সংস্থার তরফ থেকে প্রাপ্ত অর্থ ‘বাংলাদেশ ফান্ড’ নামের একটি তহবিলে জমা হতো। মুক্তিযোদ্ধাদের বেতন-ভাতা ছাড়া অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয়ের প্রস্তাব প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপিত হতো এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে সেই অর্থ পৌঁছাত। সরকারি ব্যয়ের স্বচ্ছতার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। মনে রাখতে হবে, এই মুজিবনগর সরকারের অধীনেই পরিচালিত হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ। ১৭ এপ্রিল দেশ-বিদেশের প্রায় ১০০ সাংবাদিকের উপস্থিতিতে মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার লড়াই একটা আইনি ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছিল। এ জন্য বাঙালির জীবনে ১৭ এপ্রিল আজও স্মরণীয় একটি দিন।
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী স্মৃতিচারণা করেছেন এভাবে, ‘ওই আমবাগানটা খুব ঘন আমবাগান। অনেক পুরোনো আমগাছ—গাছে গাছ লেগে ছাতার মতো হয়ে থাকে। দিনের আলো ঝিলমিল করছিল, আনন্দঘন উৎসবের মতো লাগছিল। মনে হচ্ছিল প্রকৃতিও যেন এটাকে সমর্থন দিচ্ছে, আর রূপকথার মতো অনুষ্ঠানটা শেষ হলো।’ অথচ সেই সকালে পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের ভয় ছিল, ভয় ছিল আকাশপথে বোমাবর্ষণেরও। আতঙ্ক ও ভয়কে সঙ্গী করে অনুষ্ঠিত ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিলের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি আমাদের বর্তমান সময়েও অপরিসীম অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংকটে ও দুর্যোগে আত্মপ্রত্যয়ী এবং নেতৃত্বে তিনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অনুসারী।
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে স্মরণীয় একটি দিন ১৭ এপ্রিল। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন কুষ্টিয়া (বর্তমান মেহেরপুর) জেলার বৈদ্যনাথতলায় এক আমবাগানে শপথ নেয় স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার বা মুজিবনগর সরকার। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মন্ত্রীদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন হয় ১৮ এপ্রিল। তার আগে ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র গৃহীত হওয়ার বিষয়টি ছিল মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও বাঙালির জীবনে দুর্যোগ মোকাবিলার অন্যতম মাইলফলক ঘটনা। ১৭ এপ্রিল শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আবদুল মান্নান এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী। তিনিই ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করান। নতুন সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল প্রণীত ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ ছিল বাংলাদেশের মুক্তিকামী রাষ্ট্রের প্রথম সংবিধান। এই ঘোষণাপত্রটি বাংলাদেশের প্রথম সরকার বা মুজিবনগর সরকার কর্তৃক ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হয়। ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম লিখেছেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, মুজিবনগর সরকার ও স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়—এ তিনটি ঘটনা একসূত্রে গাঁথা।’ তাঁর স্মৃতিচারণা থেকে জানা যায়, ‘তাজউদ্দীন আহমদ সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কুষ্টিয়া জেলার সীমান্তে অধিবেশন আহ্বান করেন। ১০ এপ্রিলের ওই অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকার পরিচালনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয়। সর্বসম্মতিক্রমে স্বাধীনতাযুদ্ধ পরিচালনা ও পাক হানাদার বাহিনীকে স্বদেশ ভূমি থেকে বিতাড়িত করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত এবং নির্দেশিত পথে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনের জন্য প্রথম সরকার গঠন করা হয়।’ ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুসারে ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। কারণ ঘোষণাপত্রে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের এই স্বাধীনতার ঘোষণা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে কার্যকর বলে গণ্য হবে।’
ঘোষণাপত্রের একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো বঙ্গবন্ধুর ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণাকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং তাঁকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে অভিহিত করা; অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা অনুমোদন করে আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয় যে, শাসনতন্ত্র প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপরাষ্ট্রপ্রধান পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন। কোনো কারণে যদি রাষ্ট্রপ্রধান না থাকেন অথবা যদি রাষ্ট্রপ্রধান কাজে যোগদান করতে না পারেন অথবা তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে যদি অক্ষম হন, তবে রাষ্ট্রপ্রধান প্রদত্ত সকল দায়িত্ব উপরাষ্ট্রপ্রধান পালন করবেন। বর্ণিত ঘটনা অনুসারে আমরা জানি, ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭১ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে শাসনতন্ত্র রচনার উদ্দেশ্যে প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়েছিল এবং নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ ১৬৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগদলীয় ১৬৭ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছিল; কিন্তু জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ শাসনতন্ত্র রচনার উদ্দেশ্যে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অধিবেশন আহ্বান করেও বেআইনিভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য তা বন্ধ ঘোষণা করেন। উপরন্তু জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে পারস্পরিক আলোচনাকালে ন্যায়নীতিবহির্ভূত এবং বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধ ঘোষণা করে গণহত্যা চালায়।
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মতো মুজিবনগর সরকারের তাৎপর্যপূর্ণ দিক ছিল, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় যথার্থ পরিকল্পনা ও নির্দেশনা প্রদান। মুজিবনগর সরকারকে ১৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ভাগ করা হয়। এ ছাড়া কয়েকটি বিভাগ মন্ত্রিপরিষদের কর্তৃত্বাধীনে ছিল। সেদিনই যুদ্ধরত অঞ্চলকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে প্রতিটিতে একজন করে সেক্টর কমান্ডার নিয়োগ করা হয়। কমান্ডোরা যখন যে এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতেন, সেই সেক্টরের কমান্ডারের অধীনে থাকতেন। এ ছাড়া জেড ফোর্স, কে ফোর্স ও এস ফোর্স নামে তিনটি ব্রিগেড গঠন হয়েছিল। বহির্বিশ্বের সরকার ও জনগণের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করার জন্য বিদেশে বাংলাদেশ মিশন স্থাপন এবং বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক প্রতিনিধিদল প্রেরণ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশ্বব্যাপী জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও চলতে থাকে। ২০২০ সালে যেমন করোনার প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯২ হাজার কোটি টাকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন, ঠিক ১৯৭১ সালেও একইভাবে সংকটকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য অস্থায়ী সরকার কর্তৃক অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তখনকার সরকার তার আয়ের উৎস ও ব্যয়ের খাত নির্ধারণ করে প্রথমে ছয় মাসের জন্য একটি বাজেট তৈরি এবং বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত অর্থ সংরক্ষণের জন্য ট্রেজারি স্থাপন করে। প্রবাসী বাঙালি ও বিভিন্ন বিদেশি নাগরিক এবং সংস্থার তরফ থেকে প্রাপ্ত অর্থ ‘বাংলাদেশ ফান্ড’ নামের একটি তহবিলে জমা হতো। মুক্তিযোদ্ধাদের বেতন-ভাতা ছাড়া অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয়ের প্রস্তাব প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপিত হতো এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে সেই অর্থ পৌঁছাত। সরকারি ব্যয়ের স্বচ্ছতার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। মনে রাখতে হবে, এই মুজিবনগর সরকারের অধীনেই পরিচালিত হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ। ১৭ এপ্রিল দেশ-বিদেশের প্রায় ১০০ সাংবাদিকের উপস্থিতিতে মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার লড়াই একটা আইনি ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছিল। এ জন্য বাঙালির জীবনে ১৭ এপ্রিল আজও স্মরণীয় একটি দিন।
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী স্মৃতিচারণা করেছেন এভাবে, ‘ওই আমবাগানটা খুব ঘন আমবাগান। অনেক পুরোনো আমগাছ—গাছে গাছ লেগে ছাতার মতো হয়ে থাকে। দিনের আলো ঝিলমিল করছিল, আনন্দঘন উৎসবের মতো লাগছিল। মনে হচ্ছিল প্রকৃতিও যেন এটাকে সমর্থন দিচ্ছে, আর রূপকথার মতো অনুষ্ঠানটা শেষ হলো।’ অথচ সেই সকালে পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের ভয় ছিল, ভয় ছিল আকাশপথে বোমাবর্ষণেরও। আতঙ্ক ও ভয়কে সঙ্গী করে অনুষ্ঠিত ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিলের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি আমাদের বর্তমান সময়েও অপরিসীম অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংকটে ও দুর্যোগে আত্মপ্রত্যয়ী এবং নেতৃত্বে তিনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অনুসারী।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে