Ajker Patrika

সবুজে ঘেরা ‘জানালা বাড়ি’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮: ৫০
সবুজে ঘেরা ‘জানালা বাড়ি’

সবুজের সমারোহ নিয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে শত শত গাছ। তাতে বসে মনের সুখে গান গাইছে পাখি। ক্ষণে ক্ষণে নির্মল বাতাস এসে নাড়িয়ে যাচ্ছে গাছের পাতা। পিচঢালা পথ, ঘরের আঙিনা কিংবা অফিসের জানালার পাশে এমন দৃশ্য সবাইকেই বিমোহিত করে। কিন্তু মানুষের কারণেই এ সুন্দর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ ‘বর্জ্য’ বা ‘আবর্জনা’।

দৈনন্দিন কাজে কতশত জিনিস ব্যবহার করি আমরা। ব্যবহারের পর উচ্ছিষ্টাংশ ফেলে দিই। কিন্তু সেগুলো আসলে কোথাও হারিয়ে যায় না। সুন্দর এ প্রকৃতিকে অসুন্দর করতে এখানে সেখানে পড়ে থাকে। এসব আবর্জনা একদম নির্মূল করা প্রায় অসম্ভব। তবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তা কমানো যায়। সেই কাজটাই করেছেন জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের কামিকাতসু শহরের বাসিন্দারা। শহরকে আবর্জনামুক্ত করতে বর্জ্য দিয়ে একটি বড় বাড়ি বানিয়েছেন তাঁরা। এতে যুক্ত করা হয়েছে ৭০০টি জানালা। নান্দনিক গঠনের কারণে কাতসুরা নদীর পাড়ের এ বাড়িটি এখন অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র। ২০২০ সালে খুলে দেওয়ার পর সবার প্রিয় বিনোদনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে এটি।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাড়িটির প্রধান প্রকৌশলী হিরোশি নাকামুরা জানান, বাড়িটি যেখানে বানানো হয়েছে, সেখানে ছিল ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়।

যাত্রাটা শুরু ২০১৬ সালের এপ্রিলে। ‘১০০ শতাংশ আবর্জনা শূন্য’ কেন্দ্র হিসেবে এ বাড়ি বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথমে দেবদারু গাছের কাঠ থেকে বানানো হয় বাড়ির ভীত। এগুলো বর্জ্য হিসেবে এখানে সেখানে পড়ে ছিল। পুরো ভবন বর্জ্য থেকে বানানো খুব জটিল কাজ। আগে এক এক করে ডিজাইন করতে হয়েছে। এরপর উপাদান সংগ্রহ করে সেটি আকার অনুযায়ী বানানো হয়। সবশেষে বসানো হয় যথাস্থানে। তবে ছাদ দেওয়ার মতো কিছু কাজে পুরোপুরি আবর্জনা ব্যবহার করা হয়নি।

এ কাজে সহযোগিতা করেছেন শহরের প্রায় দেড় হাজার বাসিন্দা। ব্যবহার করার পর জমা হয়ে থাকা বর্জ্য দিতে থাকেন তাঁরা। এর মধ্যে ছিল কাচ, কাঠ, সোফা থেকে শুরু করে ভাঙা বিছানাও। তাঁদের দেওয়া জানালা বেশ কাজে এসেছে নির্মাণকারীদের। দেয়াল বানানোর চেয়ে জানালা বেশি করার দিকে ঝুঁকেছেন তাঁরা। এক এক করে জোড়া দেওয়া হয়েছে প্রায় ৭০০ জানালা। আর এর মধ্যে দেওয়া হয়েছে পুরোনো কাঠ। মোট ৪৫ ধরনের বর্জ্য ব্যবহার করা হয়েছে এতে।

পাহাড়ে ঘেরা বাড়িটি কামিকাতসুর প্রত্যন্ত অঞ্চলে বানানো হয়েছে। প্রায় ২৭ হাজার একর জায়গাজুড়ে আছে পুরো ভবন। এতে রয়েছে বর্জ্য সংগ্রহ ঘর, রিসাইক্লিং কেন্দ্র, শিক্ষার ঘর এবং চমৎকার সব জিনিস কিনতে পাওয়া যায় এমন একটি দোকান। বর্জ্য ‘রিসাইক্লিং’ করে তা কাজে লাগানোর জন্য অনেক আগে থেকেই প্রশংসিত হয়ে আসছেন কামিকাতসুর বাসিন্দারা।

শহরের যেকেউ কোনো বর্জ্য নিয়ে গেলে সেগুলো রিসাইক্লিং করে দেওয়া হয় এখানে। যেগুলো রিসাইক্লিং করা যাবে না, সেগুলো অন্যত্র নিয়ে চাপা দেওয়া হয় কিংবা পুড়িয়ে ফেলা হয়। নান্দনিক গঠনের জন্য গত বছর জাপানের সেরা স্থাপত্য ইনস্টিটিউটের তকমা পেয়েছে ভবনটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত