অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম
ইভিএম নির্বাচনের জন্য কতটা কার্যকরী?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: নির্বাচনের জন্য ইভিএম নিয়ে যদি বলতে চাই, তাহলে ব্যালট পেপারনির্ভর নির্বাচন এবং ইভিএমনির্ভর নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে হবে। আগে ব্যালট পেপারনির্ভর নির্বাচনে কী ঘটত? ব্যালট আগেই কেন্দ্রে চলে যেত। অনেক সময় দেখা যেত ব্যালটে আগের রাতেই সিল মেরে রাখা হয়েছে। যার ফলে মারামারি, রক্তারক্তি হতো। আমরা এই জায়গা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজছিলাম, তখন আমাদের মনে হলো এমন এক টেকনোলজি বের করতে হবে, যেখানে একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারবে না। ইভিএম ঠিক এমনই এক মেশিন, যেখানে ভোট শুরু হওয়ার আগে কেউ ভোট দিতে পারবে না। আবার ভোটদানের নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পরে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেবে। সুতরাং এখানে ভোটার নিজেই ভোট দিতে পারেন, অন্য কেউ জাল ভোট দিতে পারেন না।
ইভিএমে ভোট পরিবর্তন করা সম্ভব কি না; অর্থাৎ কোনো এক নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোট দিলে তা অন্য প্রতীকে নেওয়ার সুযোগ আছে কি না?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: এখানে ভোট কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। একজনের ভোট অন্যজন দিতে পারবে না, অন্য প্রতীকে ভোট নিয়ে নেওয়া যাবে না, এমনকি ভোটের ফলাফলও পরিবর্তন করতে পারবে না। কারণ, ভোট দেওয়া শেষ হলে মেশিন থেকে যে প্রিন্ট আউট বের হবে, তা পরিবর্তন করার ক্ষমতা কারও নেই। তবে টেকনোলজিতে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। এটা সব টেকনোলজির ক্ষেত্রেই, শুধু ইভিএম নয়। টিভি, গাড়ি, বিমান—সবকিছুতেই কিন্তু প্রোগ্রাম আছে, সব ডিভাইসে প্রোগ্রাম আছে। কাজেই ইভিএমেও প্রোগ্রাম আছে। তবে আমরা চাইলেই কিন্তু টিভি প্রোগ্রাম চেঞ্জ করা যায় না। কারণ, এটা ফিক্সড। ফ্যাক্টরি থেকে যখন এগুলো বের হয়, তখনই এই প্রোগ্রামগুলো দেওয়া থাকে। সুতরাং এখানে যে ডেটা দেওয়া হবে তার ওপর নির্ভর করে এটি কাজ করবে। সুতরাং ইভিএমে প্রোগ্রাম চেঞ্জ করার কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া পাঁচ বছর ধরে এই ইভিএম মেশিনগুলো আছে এবং এগুলো দিয়েই কিন্তু বারবার ভোট হচ্ছে। কাজেই এখানে এক প্রতীকের ভোট অন্য কোনো প্রতীকে নিয়ে যাবে, সেই প্রোগ্রাম রাখা সম্ভব নয়।
যেখানে বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তির অনেক দেশ ইভিএম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে এর উপযোগিতা কতটুকু?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: এ প্রশ্নটা আসবেই। কারণ, পৃথিবীর অনেক দেশ ইভিএম চালু করে আবার তা থেকে ফিরে এসেছে। তবে এখানে বুঝতে হবে, ওই সব দেশের ইভিএম মেশিনের সঙ্গে আমাদের দেশের ইভিএমের পার্থক্যটা আসলে কোথায়। অন্যান্য দেশে যে মেশিনগুলো আছে তাদের থেকে আমাদের দেশের মেশিনটা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। আমাদের মেশিন ভোটারকে আইডেনটিফাই করতে পারে এবং ভোটারকে ট্র্যাক করতে পারে। এখানে টাইম মেনটেইন করা যায়। যেখানে মেশিন নিজেই নিজেকে কন্ট্রোল করে। কিন্তু অন্যান্য দেশে যে মেশিনগুলো আছে, সেগুলো আসলে কাউন্টিং মেশিন। যেগুলো শুধু কতবার বাটন চাপ দেওয়া হয়েছে, তা কাউন্ট করে এবং ডিসপ্লেতে দেখায়।
বাংলাদেশ যদি এত উন্নত ও গ্রহণযোগ্য ইভিএম তৈরি করতে পারে, তাহলে অন্যান্য দেশ পারল না কেন?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: এটা আসলে খুব বিশাল টেকনোলজি না, যেটা আমরা পেরেছি কিন্তু আমেরিকা বা অন্যরা পারবে না। তবে অনেক কিছুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যদি উদ্ভাবক হয় তাহলে তারা এগিয়ে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। যদি উদাহরণ দিই, তাহলে আমাদের ফিঙ্গার প্রিন্টের কথা বলতে হবে। যেখানে নয় কোটি ভোটারের ফিঙ্গার প্রিন্টের সঙ্গে ডিটেইলস আছে। এই টেকনোলজি কিন্তু একমাত্র বাংলাদেশেরই আছে। অন্য কোথাও নেই। এভাবেই অনেক টেকনোলজিতে আমরা এগিয়ে আছি। তবে ইভিএমের টেকনোলজি এমন কোনো কঠিন টেকনোলজি না। যেটা অন্যান্য দেশ তৈরি করতে পারবে না। তাদের কাছে যে জিনিসটা নেই কিন্তু আমাদের কাছে আছে, সেটা হলো ন্যাশনাল ডেটাবেইস। যেখানে ফিঙ্গার প্রিন্ট আছে। আমরা এই ডেটাবেইস এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট কাজে লাগিয়ে এই মেশিন তৈরি করেছি। পৃথিবীর আর কোনো দেশ কিন্তু ফিঙ্গার প্রিন্টসহ ভোটারদের ডেটাবেইস তৈরি করেনি। যে কারণে তাদের ইভিএমের সঙ্গে আমাদের ইভিএমকে এক করে দেখা যাবে না।
অনেক সময় দেখা যায় ইভিএমে ফিঙ্গার প্রিন্ট মেলে না বা মেশিন ধীরে কাজ করে। এ বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: আমাদের একটা প্রবণতা হচ্ছে এক হাজারের মধ্যে যদি নয় শ নিরানব্বই সফল হয়, তাতে আমরা কিছু বলি না। কিন্তু একটা যদি ব্যর্থ হয়, সেটা নিয়েই তুলকালাম করে ফেলি। আমাদের প্রথমেই দেখতে হবে এটার পারসেন্টেজ কত। যেখানে ফিঙ্গার প্রিন্ট মেলে না। প্রথম যখন ইভিএম ব্যবহার হয় তখন প্রিসাইডিং অফিসারকে ২৫ শতাংশ ক্ষমতা দেওয়া ছিল। যেখানে কারও ফিঙ্গার না মিললে প্রিসাইডিং অফিসারের শর্ত ও অনুমতি সাপেক্ষে ২৫ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে পারত। মনে রাখতে হবে, তখন কিন্তু একটা ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। সেখানে একটা ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়েও ৯৯ শতাংশ মিলে যাচ্ছিল। শুধু ১ শতাংশ মিলত না। পরে প্রিসাইডিং অফিসারের ক্ষমতা কমিয়ে ২৫ থেকে ১ শতাংশে আনা হলো এবং পরে যে ইভিএম ডিজাইন করা হলো, সেখানে চারটি ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়া হলো। যেখানে ইভিএম নিজেই চারটি ফিঙ্গার প্রিন্টের মধ্যে কোনটি সবচেয়ে স্পষ্ট, সেটি নির্ধারণ করতে পারে এবং ইভিএমই কিন্তু নির্দিষ্ট করে বলে দিচ্ছে কোন হাতের কোন আঙুলের ছাপ দিতে হবে। সেখানে যদি নির্দেশিত আঙুলের ছাপ না দিয়ে অন্য কোনো আঙুলের ছাপ দেওয়া হয়, তখনই একধরনের সমস্যার তৈরি হয়। তবে এর আসল কারণ অদক্ষ জনবল, ডিভাইস নয়। এখন যে প্রোগ্রাম দেওয়া আছে, সেখানে ফিঙ্গার প্রিন্ট না মেলার হার শূন্য শতাংশ। তারপরেও প্রিসাইডিং অফিসারকে ১ শতাংশ ক্ষমতা দেওয়া আছে। যেখানে কেউ ভুলভাবে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিলে, শর্ত সাপেক্ষে প্রিসাইডিং অফিসারের অনুমতিক্রমে সে ভোট দিতে পারবে। কারণ, কেউ যদি ভোট দিতে এসে ভোট না দিয়ে চলে যায়, তাহলে বিষয়টা খুবই খারাপ। তবে এ ক্ষেত্রে প্রিসাইডিং অফিসার চাইলেই যে কাউকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে পারবেন না। যদি তিনি ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে চান তাহলে তাঁকে অবশ্যই নিজের ফিঙ্গার প্রিন্ট ইভিএমে দিয়ে অনুমতি দিতে হবে। যেখানে তাঁর এবং যিনি ফিঙ্গার প্রিন্ট দিচ্ছেন, তাঁর নামটাও রেকর্ড হয়ে যাবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সব আসনে ইভিএম ব্যবহারের সক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: এখনো দেড় বছর সময় আছে। এটা সম্ভব। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল গড়ে তোলাও সম্ভব। কারণ ইভিএমের প্রশিক্ষণ খুবই সহজ। যেখানে দুইটা জিনিস জানলেই হয়—এক. অপারেটিং সিস্টেম কেমন হবে; দুই. ফিঙ্গার পজিশন কেমন হবে।
ইভিএম নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে সংশয়, এটা দূর করার উপায় কী?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: ইভিএম কীভাবে কাজ করে, কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল আগেই জনসচেতনতা তৈরির জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা করা। কিন্তু তারা তা করেনি। হয়তো করবে। এই প্রচারণাগুলো যদি মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপক করা যায়, তাহলে হয়তো প্রশিক্ষণও লাগবে না। সেই সঙ্গে মানুষের ইভিএম নিয়ে সংশয় এবং ভীতি দুই-ই দূর হবে।
ইভিএম নির্বাচনের জন্য কতটা কার্যকরী?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: নির্বাচনের জন্য ইভিএম নিয়ে যদি বলতে চাই, তাহলে ব্যালট পেপারনির্ভর নির্বাচন এবং ইভিএমনির্ভর নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে হবে। আগে ব্যালট পেপারনির্ভর নির্বাচনে কী ঘটত? ব্যালট আগেই কেন্দ্রে চলে যেত। অনেক সময় দেখা যেত ব্যালটে আগের রাতেই সিল মেরে রাখা হয়েছে। যার ফলে মারামারি, রক্তারক্তি হতো। আমরা এই জায়গা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজছিলাম, তখন আমাদের মনে হলো এমন এক টেকনোলজি বের করতে হবে, যেখানে একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারবে না। ইভিএম ঠিক এমনই এক মেশিন, যেখানে ভোট শুরু হওয়ার আগে কেউ ভোট দিতে পারবে না। আবার ভোটদানের নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পরে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেবে। সুতরাং এখানে ভোটার নিজেই ভোট দিতে পারেন, অন্য কেউ জাল ভোট দিতে পারেন না।
ইভিএমে ভোট পরিবর্তন করা সম্ভব কি না; অর্থাৎ কোনো এক নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোট দিলে তা অন্য প্রতীকে নেওয়ার সুযোগ আছে কি না?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: এখানে ভোট কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। একজনের ভোট অন্যজন দিতে পারবে না, অন্য প্রতীকে ভোট নিয়ে নেওয়া যাবে না, এমনকি ভোটের ফলাফলও পরিবর্তন করতে পারবে না। কারণ, ভোট দেওয়া শেষ হলে মেশিন থেকে যে প্রিন্ট আউট বের হবে, তা পরিবর্তন করার ক্ষমতা কারও নেই। তবে টেকনোলজিতে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। এটা সব টেকনোলজির ক্ষেত্রেই, শুধু ইভিএম নয়। টিভি, গাড়ি, বিমান—সবকিছুতেই কিন্তু প্রোগ্রাম আছে, সব ডিভাইসে প্রোগ্রাম আছে। কাজেই ইভিএমেও প্রোগ্রাম আছে। তবে আমরা চাইলেই কিন্তু টিভি প্রোগ্রাম চেঞ্জ করা যায় না। কারণ, এটা ফিক্সড। ফ্যাক্টরি থেকে যখন এগুলো বের হয়, তখনই এই প্রোগ্রামগুলো দেওয়া থাকে। সুতরাং এখানে যে ডেটা দেওয়া হবে তার ওপর নির্ভর করে এটি কাজ করবে। সুতরাং ইভিএমে প্রোগ্রাম চেঞ্জ করার কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া পাঁচ বছর ধরে এই ইভিএম মেশিনগুলো আছে এবং এগুলো দিয়েই কিন্তু বারবার ভোট হচ্ছে। কাজেই এখানে এক প্রতীকের ভোট অন্য কোনো প্রতীকে নিয়ে যাবে, সেই প্রোগ্রাম রাখা সম্ভব নয়।
যেখানে বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তির অনেক দেশ ইভিএম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে এর উপযোগিতা কতটুকু?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: এ প্রশ্নটা আসবেই। কারণ, পৃথিবীর অনেক দেশ ইভিএম চালু করে আবার তা থেকে ফিরে এসেছে। তবে এখানে বুঝতে হবে, ওই সব দেশের ইভিএম মেশিনের সঙ্গে আমাদের দেশের ইভিএমের পার্থক্যটা আসলে কোথায়। অন্যান্য দেশে যে মেশিনগুলো আছে তাদের থেকে আমাদের দেশের মেশিনটা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। আমাদের মেশিন ভোটারকে আইডেনটিফাই করতে পারে এবং ভোটারকে ট্র্যাক করতে পারে। এখানে টাইম মেনটেইন করা যায়। যেখানে মেশিন নিজেই নিজেকে কন্ট্রোল করে। কিন্তু অন্যান্য দেশে যে মেশিনগুলো আছে, সেগুলো আসলে কাউন্টিং মেশিন। যেগুলো শুধু কতবার বাটন চাপ দেওয়া হয়েছে, তা কাউন্ট করে এবং ডিসপ্লেতে দেখায়।
বাংলাদেশ যদি এত উন্নত ও গ্রহণযোগ্য ইভিএম তৈরি করতে পারে, তাহলে অন্যান্য দেশ পারল না কেন?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: এটা আসলে খুব বিশাল টেকনোলজি না, যেটা আমরা পেরেছি কিন্তু আমেরিকা বা অন্যরা পারবে না। তবে অনেক কিছুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যদি উদ্ভাবক হয় তাহলে তারা এগিয়ে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। যদি উদাহরণ দিই, তাহলে আমাদের ফিঙ্গার প্রিন্টের কথা বলতে হবে। যেখানে নয় কোটি ভোটারের ফিঙ্গার প্রিন্টের সঙ্গে ডিটেইলস আছে। এই টেকনোলজি কিন্তু একমাত্র বাংলাদেশেরই আছে। অন্য কোথাও নেই। এভাবেই অনেক টেকনোলজিতে আমরা এগিয়ে আছি। তবে ইভিএমের টেকনোলজি এমন কোনো কঠিন টেকনোলজি না। যেটা অন্যান্য দেশ তৈরি করতে পারবে না। তাদের কাছে যে জিনিসটা নেই কিন্তু আমাদের কাছে আছে, সেটা হলো ন্যাশনাল ডেটাবেইস। যেখানে ফিঙ্গার প্রিন্ট আছে। আমরা এই ডেটাবেইস এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট কাজে লাগিয়ে এই মেশিন তৈরি করেছি। পৃথিবীর আর কোনো দেশ কিন্তু ফিঙ্গার প্রিন্টসহ ভোটারদের ডেটাবেইস তৈরি করেনি। যে কারণে তাদের ইভিএমের সঙ্গে আমাদের ইভিএমকে এক করে দেখা যাবে না।
অনেক সময় দেখা যায় ইভিএমে ফিঙ্গার প্রিন্ট মেলে না বা মেশিন ধীরে কাজ করে। এ বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: আমাদের একটা প্রবণতা হচ্ছে এক হাজারের মধ্যে যদি নয় শ নিরানব্বই সফল হয়, তাতে আমরা কিছু বলি না। কিন্তু একটা যদি ব্যর্থ হয়, সেটা নিয়েই তুলকালাম করে ফেলি। আমাদের প্রথমেই দেখতে হবে এটার পারসেন্টেজ কত। যেখানে ফিঙ্গার প্রিন্ট মেলে না। প্রথম যখন ইভিএম ব্যবহার হয় তখন প্রিসাইডিং অফিসারকে ২৫ শতাংশ ক্ষমতা দেওয়া ছিল। যেখানে কারও ফিঙ্গার না মিললে প্রিসাইডিং অফিসারের শর্ত ও অনুমতি সাপেক্ষে ২৫ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে পারত। মনে রাখতে হবে, তখন কিন্তু একটা ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। সেখানে একটা ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়েও ৯৯ শতাংশ মিলে যাচ্ছিল। শুধু ১ শতাংশ মিলত না। পরে প্রিসাইডিং অফিসারের ক্ষমতা কমিয়ে ২৫ থেকে ১ শতাংশে আনা হলো এবং পরে যে ইভিএম ডিজাইন করা হলো, সেখানে চারটি ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়া হলো। যেখানে ইভিএম নিজেই চারটি ফিঙ্গার প্রিন্টের মধ্যে কোনটি সবচেয়ে স্পষ্ট, সেটি নির্ধারণ করতে পারে এবং ইভিএমই কিন্তু নির্দিষ্ট করে বলে দিচ্ছে কোন হাতের কোন আঙুলের ছাপ দিতে হবে। সেখানে যদি নির্দেশিত আঙুলের ছাপ না দিয়ে অন্য কোনো আঙুলের ছাপ দেওয়া হয়, তখনই একধরনের সমস্যার তৈরি হয়। তবে এর আসল কারণ অদক্ষ জনবল, ডিভাইস নয়। এখন যে প্রোগ্রাম দেওয়া আছে, সেখানে ফিঙ্গার প্রিন্ট না মেলার হার শূন্য শতাংশ। তারপরেও প্রিসাইডিং অফিসারকে ১ শতাংশ ক্ষমতা দেওয়া আছে। যেখানে কেউ ভুলভাবে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিলে, শর্ত সাপেক্ষে প্রিসাইডিং অফিসারের অনুমতিক্রমে সে ভোট দিতে পারবে। কারণ, কেউ যদি ভোট দিতে এসে ভোট না দিয়ে চলে যায়, তাহলে বিষয়টা খুবই খারাপ। তবে এ ক্ষেত্রে প্রিসাইডিং অফিসার চাইলেই যে কাউকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে পারবেন না। যদি তিনি ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে চান তাহলে তাঁকে অবশ্যই নিজের ফিঙ্গার প্রিন্ট ইভিএমে দিয়ে অনুমতি দিতে হবে। যেখানে তাঁর এবং যিনি ফিঙ্গার প্রিন্ট দিচ্ছেন, তাঁর নামটাও রেকর্ড হয়ে যাবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সব আসনে ইভিএম ব্যবহারের সক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: এখনো দেড় বছর সময় আছে। এটা সম্ভব। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল গড়ে তোলাও সম্ভব। কারণ ইভিএমের প্রশিক্ষণ খুবই সহজ। যেখানে দুইটা জিনিস জানলেই হয়—এক. অপারেটিং সিস্টেম কেমন হবে; দুই. ফিঙ্গার পজিশন কেমন হবে।
ইভিএম নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে সংশয়, এটা দূর করার উপায় কী?
মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম: ইভিএম কীভাবে কাজ করে, কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল আগেই জনসচেতনতা তৈরির জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা করা। কিন্তু তারা তা করেনি। হয়তো করবে। এই প্রচারণাগুলো যদি মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপক করা যায়, তাহলে হয়তো প্রশিক্ষণও লাগবে না। সেই সঙ্গে মানুষের ইভিএম নিয়ে সংশয় এবং ভীতি দুই-ই দূর হবে।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৪ দিন আগে