কাজের ধীর গতিতে ভোগান্তি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৮: ২৪
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৩০

সড়কের সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৫ মাসের মধ্যে। কিন্তু প্রায় ৪৪ মাস পার হওয়ার পরও শেষ হয়নি ত্রিশাল উপজেলায় একটি সড়কের সংস্কারকাজ। কাজের ধীর গতিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক গ্রামের মানুষ। কর্তৃপক্ষ বলছে, এ মেয়াদে কাজ শেষ না হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল না দেওয়ার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বইলর থেকে ফুলবাড়িয়া সীমানা পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ২৪ ফুট প্রস্থের সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের জুন মাসে। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসের ১৩ তারিখের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ১২ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ঢালী কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। সে কাজ শেষ হয়নি চার বছরেও। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দাবি, বিল না পাওয়ার কারণে কাজে ধীর গতি হচ্ছে।

নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সড়কের আশপাশে বসবাসরত মানুষসহ সড়ক ব্যবহারকারী সবাইকে। বইলর এলাকার বাসিন্দা হযরত আলী বলেন, ‘আট থেকে ১০ গ্রামের মানুষ এই সড়ক হয়ে ময়মনসিংহ এবং ত্রিশাল শহরে যায়। বইলর এলাকা মৎস্য চাষের জন্য বিখ্যাত। সড়ক বেহাল হওয়ায় এখানকার মাছচাষিরা খুব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রায় ১০ বছর ধরে মানুষ সড়কের জন্য অনেক কষ্ট করছেন। তবে যে মানের কাজ হচ্ছে, তাতে শেষ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে সড়ক আবারও ভেঙে যাবে। আমাদের ভোগান্তি আর শেষ হবে না।’

ভ্যানচালক তাজুল মিয়া বলেন, ‘রাস্তার খানাখন্দের কারণে মানুষ ভ্যানে উঠতে চায় না। একটু পরপর ভ্যান থেকে মানুষকে নামিয়ে আবার ওঠাতে হয়। আমরা ভ্যানওয়ালারা খুব কষ্টে রয়েছি। রাস্তার কাজ শুরু দেখে ভালো লেগেছিল। কিন্তু কাজ শুরুর চার বছরেও তেমন অগ্রগতি না হওয়া এবং কাজের মানে কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কিছু না।’

মেসার্স ঢালী কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সুনামের সহিত কাজ করি। কিন্তু এই কাজটিতে বিল না পাওয়ার কারণে আমাদের কাজের ধীর গতি শুরু হয়। এত টাকার কাজে দুটা বিল পেয়েছি আড়াই কোটি টাকার মতো হবে। পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী এপ্রিলের মধ্যে আমরা কাজ শেষ করব।’

নিম্নমানের কাজের বিষয়ে তিনি বলেন, রাস্তা লেভেলের ক্ষেত্রে ইটের গুঁড়া যত পচা হবে ততই ভালো। মানুষ তা না যেনে সমালোচনা করে। তবে রাস্তার দুপাশে কিছু ইট এবার নিম্নমানের এসেছে তা উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশে পরিবর্তন করা হচ্ছে।

ত্রিশাল উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘রাস্তার কাজ আমরা নিয়মিত তদারকি করছি। খারাপ হওয়ার সুযোগ নেই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে শেষ বারের মতো সময় দেওয়া হয়েছে। এই অর্থবছরে কাজ সম্পন্ন না করলে বিল পাবে না। কিছু ইট নিম্নমানের থাকায় পরিবর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

ময়মনসিংহ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুজ্জামান খান বলেন, ‘কোনো ঠিকাদার খারাপ কাজ করে বিল তুলতে পারবে না। যারা অন্যায় কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশনা রয়েছে। বইলরের কাজটি আমরা চেষ্টা করছি ভালো ভাবে সম্পন্ন করার জন্য। এখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কিছুটা গাফিলতি রয়েছে। তাদের শেষবারের মতো সতর্ক করা হয়েছে। অন্যথায় আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত