রাশেদ রাব্বি, ঢাকা
বেসরকারি হাসপাতালে রোগ নির্ণয় পরীক্ষার মূল্য বাড়িয়ে ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে ৯৫টি পরীক্ষার ফি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রস্তাবটি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
চিকিৎসকেরা বলছেন, সরকার মূল্য নির্ধারণ করে দিলে স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। তবে বিএসএমএমইউর উপাচার্য বলেছেন, সারা দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এমন মূল্য তালিকা বাস্তবায়ন করা কঠিন।
২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবামূল্য নির্ধারণে মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, রোগীরা যেন প্রতারিত না হন, সে জন্য এই ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। ওই সংবাদ সম্মেলনের প্রায় চার বছর পর সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, অধিদপ্তর ১৩৯টি রোগ নির্ণয় পরীক্ষার তালিকা পাঠালেও ফি প্রস্তাব করেছে ৯৫টির। ৪৪টি পরীক্ষার ক্ষেত্রে মূল্য প্রস্তাব করা হয়নি। এ ছাড়া ৮টি বিশেষায়িত পরীক্ষা এবং ২১টি অস্ত্রোপচারের মূল্যও প্রস্তাব করা হয়নি। অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে এসব পরীক্ষা ও সেবামূল্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও বারডেম হাসপাতালের বর্তমান ফি উল্লেখ করে এগুলোর আলোকে ফি প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, প্রস্তাবিত ফি উচ্চমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সেবামূল্যের প্রায় দ্বিগুণ।
এই প্রস্তাব নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে সভা হয়। এতে অধিদপ্তরের কয়েকজন পরিচালক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। সভায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের সভাপতিত্ব করার কথা থাকলেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে স্বাচিপ সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সব হাসপাতালের সেবামূল্য এক হতে পারে না। এ জন্য হাসপাতালগুলোর গ্রেডিং করে মূল্য নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটা করতে পারলে জনগণের উপকার হবে। তিনি বলেন, সরকার একটি মূল্যতালিকা বেঁধে দিলে সবাই মানতে বাধ্য হবে। এতে স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা থাকবে। এটি বাস্তবায়নে একটি কমিটি করা হবে। এই কমিটি সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে, যা পরে বাস্তবায়ন করা হবে।
সূত্র জানায়, অধিদপ্তর বিএসএমএমইউতে সিরাম আয়রন পরীক্ষার ফি বর্তমানে ২৫০ টাকা হলেও তা ১ হাজার ১১৮ টাকা করার প্রস্তাব করেছে। অথচ বেসরকারি তিনটি বড় রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে এই ফি ৭৫০ টাকা। প্রস্তাবে সিটিস্ক্যানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে কিডনি ফাউন্ডেশনের ফির ওপর ভিত্তি করে। সেখানে সিটিস্ক্যানের (ওষুধ ছাড়া) বর্তমান ফি ১০ হাজার টাকা। প্রস্তাব করা হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। একই প্রতিষ্ঠানে ব্রেইন সিটিস্ক্যান ফি ৪ হাজার টাকা, প্রস্তাব করা হয়েছে ৫ হাজার ২০০ টাকা। তবে বড় তিনটি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে দিতে হচ্ছে ৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার ৫০০ টাকা।
প্রস্তাবে আলট্রাসনোগ্রাম ফির ভিত্তিও কিডনি ফাউন্ডেশন। সেখানে আলট্রাসনোগ্রাম (হোল অ্যাবডোমিন) ফি বর্তমানে ১ হাজার ৩০০ টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৬৯০ টাকা। সেখানে আলট্রাসনোগ্রাম (প্রেগনেন্সি প্রোফাইল) করাতে নেওয়া হয় ১ হাজার ২০০ টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৫৬০ টাকা। বেসরকারি বড় তিনটি কেন্দ্রে এই ফি ২ হাজার ৩১০ থেকে ৩ হাজার ৫২০ টাকা। কিডনি ফাউন্ডেশনে এক্স-রে (হোল অ্যাবডোমিন) ফি এখন ৫৫০ টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ৭১৫ টাকা। দেশে সবচেয়ে বেশি হয় চেস্ট এক্স-রে। কিডনি ফাউন্ডেশনে এর ফি ৪৫০ টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ৫৮৫ টাকা। সার্ভিক্যাল স্পাইন এক্স-রে ফি এখন ৬০০ টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ৭৮০ টাকা। বড় তিনটি প্রতিষ্ঠানে এই ফি যথাক্রমে ৫০০, ৬০০ ও ৮০০ টাকা।
লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি ফি নেয় আইসিডিডিআরবি ১ হাজার ২৬০ টাকা, যা বিএসএমএমইউতে ৬০০ টাকা। মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৬৩৮ টাকা। বড় তিনটি কেন্দ্রে এখন এই ফি ১ হাজার ৫০০ টাকা।
রক্তের যে পরীক্ষাটি সবচেয়ে বেশি হয় সেটি হলো ‘সিবিসি’। বিএসএমএমইউতে এই পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা। বড় তিনটি কেন্দ্রে ৪০০ টাকা। তবে এর মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে ৯১০ টাকা। ইউরিন আর/ই পরীক্ষার ফি বিএসএমএমইউতে ১৫০ টাকা; বেসরকারি তিনটি বড় কেন্দ্রে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এই পরীক্ষার ফি প্রস্তাব করা হয়েছে ৫২০ টাকা। বিএসএমএমইউতে ট্রোপিনিন-আই পরীক্ষার ফি ৬০০ টাকা, প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৮৪৬ টাকা। বড় তিনটি বেসরকারি কেন্দ্রে বর্তমানে এই ফি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। বিএসএমএমইউতে ভিটামিন-ডি পরীক্ষার ফি ২ হাজার ৫০০ টাকা। বেসরকারির জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে ৩ হাজার ২৫০ টাকা। অবশ্য বেসরকারি বড় তিন প্রতিষ্ঠানে এখন নেওয়া হয় সাড়ে ৫ হাজার টাকা। এইচবিএসএজি (হেপাটাইটিস) পরীক্ষার ফি বিএসএমএমইউতে ১ হাজার টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ টাকা। বেসরকারি তিন কেন্দ্রে যা এখন ১ হাজার টাকা। বিএসএমএমইউতে প্রেগনেন্সি পরীক্ষার ফি ১০০ টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ৫২০ টাকা।
এফএনএসি, বায়োপসি, এন্ডোস্কপি, কোলনস্কপি, বোনম্যারো এসপিরেশন, ফাইব্রোপটিক ব্রনোস্কপি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিএসএমএমইউ, বারডেমের পাশাপাশি স্কয়ার হাসপাতাল, শমরিতা হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল ও এভারকেয়ার হাসপাতালের ফি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এসব ক্ষেত্রে অধিদপ্তর কোনো মূল্য প্রস্তাব করেনি। একইভাবে প্রস্তাবে এসব হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের বিভিন্ন সেবার মূল্য তুলে ধরা হলেও মূল্য প্রস্তাব করা হয়নি। এসব সেবার মধ্যে রয়েছে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ), করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)। এ ছাড়া প্রস্তাবে হাসপাতালগুলোতে বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের মূল্যও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো সেবামূল্য প্রস্তাব করা হয়নি। এসব অস্ত্রোপচারের মধ্যে রয়েছে অ্যাপেনডিসাইট, হার্নিয়া, পাকস্থলী, টনসিল ইত্যাদি।
বেসরকারি হাসপাতালের জন্য সেবামূল্য প্রস্তাবের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণে অধিদপ্তরের সীমাবদ্ধতার কারণে সব পরীক্ষার মূল্য প্রস্তাব করা হয়নি। এসব সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নেওয়া হবে। প্রস্তাবিত ফির ক্ষেত্রে তালিকায় যে হাসপাতালগুলোর সেবামূল্য সবচেয়ে বেশি, তার সঙ্গে আমদানি ব্যয় ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় যুক্ত করে প্রস্তাব করা হয়েছে।
তবে বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত সেবামূল্য নিশ্চিত করা কঠিন। এ ছাড়া এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার উপযুক্ত সময় এখন নয়। আইন করা হলো, কিন্তু সেটি বাস্তবায়ন হলো না, তাহলে আইন অমান্য করা হবে। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের পর স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সব অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
বেসরকারি হাসপাতালে রোগ নির্ণয় পরীক্ষার মূল্য বাড়িয়ে ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে ৯৫টি পরীক্ষার ফি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রস্তাবটি নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
চিকিৎসকেরা বলছেন, সরকার মূল্য নির্ধারণ করে দিলে স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। তবে বিএসএমএমইউর উপাচার্য বলেছেন, সারা দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এমন মূল্য তালিকা বাস্তবায়ন করা কঠিন।
২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবামূল্য নির্ধারণে মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, রোগীরা যেন প্রতারিত না হন, সে জন্য এই ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। ওই সংবাদ সম্মেলনের প্রায় চার বছর পর সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, অধিদপ্তর ১৩৯টি রোগ নির্ণয় পরীক্ষার তালিকা পাঠালেও ফি প্রস্তাব করেছে ৯৫টির। ৪৪টি পরীক্ষার ক্ষেত্রে মূল্য প্রস্তাব করা হয়নি। এ ছাড়া ৮টি বিশেষায়িত পরীক্ষা এবং ২১টি অস্ত্রোপচারের মূল্যও প্রস্তাব করা হয়নি। অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে এসব পরীক্ষা ও সেবামূল্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও বারডেম হাসপাতালের বর্তমান ফি উল্লেখ করে এগুলোর আলোকে ফি প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, প্রস্তাবিত ফি উচ্চমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান সেবামূল্যের প্রায় দ্বিগুণ।
এই প্রস্তাব নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে সভা হয়। এতে অধিদপ্তরের কয়েকজন পরিচালক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। সভায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের সভাপতিত্ব করার কথা থাকলেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে স্বাচিপ সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সব হাসপাতালের সেবামূল্য এক হতে পারে না। এ জন্য হাসপাতালগুলোর গ্রেডিং করে মূল্য নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটা করতে পারলে জনগণের উপকার হবে। তিনি বলেন, সরকার একটি মূল্যতালিকা বেঁধে দিলে সবাই মানতে বাধ্য হবে। এতে স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা থাকবে। এটি বাস্তবায়নে একটি কমিটি করা হবে। এই কমিটি সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে, যা পরে বাস্তবায়ন করা হবে।
সূত্র জানায়, অধিদপ্তর বিএসএমএমইউতে সিরাম আয়রন পরীক্ষার ফি বর্তমানে ২৫০ টাকা হলেও তা ১ হাজার ১১৮ টাকা করার প্রস্তাব করেছে। অথচ বেসরকারি তিনটি বড় রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে এই ফি ৭৫০ টাকা। প্রস্তাবে সিটিস্ক্যানের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে কিডনি ফাউন্ডেশনের ফির ওপর ভিত্তি করে। সেখানে সিটিস্ক্যানের (ওষুধ ছাড়া) বর্তমান ফি ১০ হাজার টাকা। প্রস্তাব করা হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। একই প্রতিষ্ঠানে ব্রেইন সিটিস্ক্যান ফি ৪ হাজার টাকা, প্রস্তাব করা হয়েছে ৫ হাজার ২০০ টাকা। তবে বড় তিনটি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে দিতে হচ্ছে ৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার ৫০০ টাকা।
প্রস্তাবে আলট্রাসনোগ্রাম ফির ভিত্তিও কিডনি ফাউন্ডেশন। সেখানে আলট্রাসনোগ্রাম (হোল অ্যাবডোমিন) ফি বর্তমানে ১ হাজার ৩০০ টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৬৯০ টাকা। সেখানে আলট্রাসনোগ্রাম (প্রেগনেন্সি প্রোফাইল) করাতে নেওয়া হয় ১ হাজার ২০০ টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৫৬০ টাকা। বেসরকারি বড় তিনটি কেন্দ্রে এই ফি ২ হাজার ৩১০ থেকে ৩ হাজার ৫২০ টাকা। কিডনি ফাউন্ডেশনে এক্স-রে (হোল অ্যাবডোমিন) ফি এখন ৫৫০ টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ৭১৫ টাকা। দেশে সবচেয়ে বেশি হয় চেস্ট এক্স-রে। কিডনি ফাউন্ডেশনে এর ফি ৪৫০ টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ৫৮৫ টাকা। সার্ভিক্যাল স্পাইন এক্স-রে ফি এখন ৬০০ টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ৭৮০ টাকা। বড় তিনটি প্রতিষ্ঠানে এই ফি যথাক্রমে ৫০০, ৬০০ ও ৮০০ টাকা।
লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি ফি নেয় আইসিডিডিআরবি ১ হাজার ২৬০ টাকা, যা বিএসএমএমইউতে ৬০০ টাকা। মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৬৩৮ টাকা। বড় তিনটি কেন্দ্রে এখন এই ফি ১ হাজার ৫০০ টাকা।
রক্তের যে পরীক্ষাটি সবচেয়ে বেশি হয় সেটি হলো ‘সিবিসি’। বিএসএমএমইউতে এই পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা। বড় তিনটি কেন্দ্রে ৪০০ টাকা। তবে এর মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে ৯১০ টাকা। ইউরিন আর/ই পরীক্ষার ফি বিএসএমএমইউতে ১৫০ টাকা; বেসরকারি তিনটি বড় কেন্দ্রে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এই পরীক্ষার ফি প্রস্তাব করা হয়েছে ৫২০ টাকা। বিএসএমএমইউতে ট্রোপিনিন-আই পরীক্ষার ফি ৬০০ টাকা, প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৮৪৬ টাকা। বড় তিনটি বেসরকারি কেন্দ্রে বর্তমানে এই ফি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। বিএসএমএমইউতে ভিটামিন-ডি পরীক্ষার ফি ২ হাজার ৫০০ টাকা। বেসরকারির জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে ৩ হাজার ২৫০ টাকা। অবশ্য বেসরকারি বড় তিন প্রতিষ্ঠানে এখন নেওয়া হয় সাড়ে ৫ হাজার টাকা। এইচবিএসএজি (হেপাটাইটিস) পরীক্ষার ফি বিএসএমএমইউতে ১ হাজার টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ টাকা। বেসরকারি তিন কেন্দ্রে যা এখন ১ হাজার টাকা। বিএসএমএমইউতে প্রেগনেন্সি পরীক্ষার ফি ১০০ টাকা; প্রস্তাব করা হয়েছে ৫২০ টাকা।
এফএনএসি, বায়োপসি, এন্ডোস্কপি, কোলনস্কপি, বোনম্যারো এসপিরেশন, ফাইব্রোপটিক ব্রনোস্কপি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিএসএমএমইউ, বারডেমের পাশাপাশি স্কয়ার হাসপাতাল, শমরিতা হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল ও এভারকেয়ার হাসপাতালের ফি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এসব ক্ষেত্রে অধিদপ্তর কোনো মূল্য প্রস্তাব করেনি। একইভাবে প্রস্তাবে এসব হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের বিভিন্ন সেবার মূল্য তুলে ধরা হলেও মূল্য প্রস্তাব করা হয়নি। এসব সেবার মধ্যে রয়েছে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ), করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)। এ ছাড়া প্রস্তাবে হাসপাতালগুলোতে বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের মূল্যও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো সেবামূল্য প্রস্তাব করা হয়নি। এসব অস্ত্রোপচারের মধ্যে রয়েছে অ্যাপেনডিসাইট, হার্নিয়া, পাকস্থলী, টনসিল ইত্যাদি।
বেসরকারি হাসপাতালের জন্য সেবামূল্য প্রস্তাবের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণে অধিদপ্তরের সীমাবদ্ধতার কারণে সব পরীক্ষার মূল্য প্রস্তাব করা হয়নি। এসব সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নেওয়া হবে। প্রস্তাবিত ফির ক্ষেত্রে তালিকায় যে হাসপাতালগুলোর সেবামূল্য সবচেয়ে বেশি, তার সঙ্গে আমদানি ব্যয় ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় যুক্ত করে প্রস্তাব করা হয়েছে।
তবে বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত সেবামূল্য নিশ্চিত করা কঠিন। এ ছাড়া এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার উপযুক্ত সময় এখন নয়। আইন করা হলো, কিন্তু সেটি বাস্তবায়ন হলো না, তাহলে আইন অমান্য করা হবে। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের পর স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সব অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে