গাজীপুরের কালীগঞ্জে পরকীয়ার অভিযোগে সোহেল ভূঁইয়া (৩৮) নামের এক যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গত শুক্রবার রাতে তাঁকে মারধর করা হয়। নিহত সোহেল ভূঁইয়া উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য প্রয়াত ছালাম ভূঁইয়ার ছেলে।

অভিযুক্তরা হলেন—একই এলাকার মৃত মঞ্জুর ভূঁইয়ার ছেলে জুবায়েল ভূঁইয়া (২২) ও মেয়ে জেমি ভূঁইয়া (৩০), আব্দুল মজিদের ছেলে শুকুর আলী (৩৮) এবং জামালপুর এলাকার ফিরোজ শেখের ছেলে মামুন শেখ (৩৫) ও অজ্ঞাত আরও চার-পাঁচজন। মামুন শেখ মঞ্জুর ভূঁইয়ার মেজো মেয়ে জেরিন ভূঁইয়ার স্বামী।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে স্থানীয় মোতালেবের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন সোহেল ভূঁইয়া। সে সময় অভিযুক্তরা সোহেলকে ধরে মঞ্জুরের বাড়ি নিয়ে যান। তাঁরা সোহেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, জেরিনের সঙ্গে তিনি পরকীয়ায় জড়িত। এ অভিযোগে সোহেলকে অভিযুক্তরা গাছের সঙ্গে বেঁধে, মুখে গামছা পেঁচিয়ে পিটিয়ে তাঁর হাত পা-ভেঙে ফেলেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে কালীগঞ্জ থানার এএসআই আজাদ পারভেজসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হন। পুলিশ যাওয়ার পর অভিযুক্তরা সোহলেকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। শনিবার সকাল ৮টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) অভিজিৎ দাস জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে আহত অবস্থায় প্রতিবেশী পরিচয়ে জুবায়েল ও পনির নামে দুজন লোক সোহেলকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে সেখানে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জান্নাতুল ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু এরই মধ্যে সোহেলকে হাসপাতালে নিয়ে আসা ওই দুজন পালিয়ে যান। শনিবার সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহেলের মৃত্যু হয়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. যোবায়ের বলেন, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের বাম পায়ে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন আছে। এ ছাড়া ডান পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।