মোবাশ্বেরা খানম
চলচ্চিত্রের সঙ্গে আমার যোগসূত্র ছিল একটিই, আমি চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত একজনের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলাম জীবনের পথ একসঙ্গে চলব বলে। বাড়িতে ছবি দেখার অনুমতি ছিল না। টুটুলের সঙ্গে বিয়ের পর কিছু ছবি দেখেছি, আগে খুব অল্পই। কিন্তু আমাদের ভেতরে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও বোঝাপড়াটা ভালো ছিল। একটু-আধটু লেখালিখি করি বলে ওকে কিছু নাটকের স্ক্রিপ্ট করে দিয়েছিলাম।
‘আধিয়ার’ ছবির সাবটাইটেল আমি আর আমার এক সহকর্মী মিলে করেছিলাম। ওর সঙ্গে শুটিংয়ে যেতে পারিনি কখনো, সংসার ও নিজের পেশাগত ব্যস্ততার জন্য। ‘কালবেলা’ ছবির কাজে ও আমাকে প্রথম থেকে যুক্ত করেছিল। ওর শরীর তখন খুবই অসুস্থ ছিল, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে একটা ম্যাসিভ অ্যাটাকের কারণে। ওকে একা কোথাও যেতে দিতাম না। কিন্তু ওর অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছবি করার। শরীরটা বেশি খারাপ হওয়ায় ও যেন আরও মরিয়া হয়ে উঠেছিল। স্ক্রিপ্ট তৈরি করছিল। বীর মুক্তিযোদ্ধা টুটুল বোধ হয় ভেবেছিল জীবনের শেষবেলায় একাত্তরের স্মৃতিকে আরও একবার এই বিস্মৃতপ্রবণ জাতির মনে উসকে দিয়ে যাবে। তবে ও যুদ্ধের ভয়াবহতাকে প্রত্যক্ষভাবে আনতে চায়নি, সেটিকে পরোক্ষে রেখে সাধারণ মানুষের আকস্মিক বিপর্যয় ও ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তিকে বড় করে দেখাতে চেয়েছিল। বিশেষ করে যুদ্ধের সময়ে নারীর নারীত্বই যে তাকে আরও বেশি বিপন্ন করে তোলে, সেটি ওর ভাবনায় স্থান পেয়েছিল।
সৃজনশীল কাজে কষ্ট থাকলেও এর আনন্দের বোধ অলৌকিক। সেই আনন্দটি ও চলে যাওয়ার আগে আরেকবার পেয়েছিল শুটিংয়ের সময়ে। ২০১৮ সালের ২৪ নভেম্বর শুটিং শেষ করে যখন ফিরে এল তখন খুব দুর্বল বোধ করছিল। কিন্তু শুধু মনের জোরে কাজ করে যাচ্ছিল। ১৫ ডিসেম্বর মাঝরাতে হার্ট অ্যাটাক হলো। হাসপাতালে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই লাইফ সাপোর্টে। ১৮ তারিখে চলে গেল। আমি নিশ্চিত, হাসপাতালে যাওয়ার পথে পুরো সময়টাই ও ভাবছিল ছবিটার কী হবে। তাই ও চলে যাওয়ার পর প্রথমেই আমার মনে হয়েছে, এটা এখন আমাকেই করতে হবে, এটাই আমাকে ওর শেষ দান। আমি প্রাণ দিয়ে সেই দান গ্রহণ করেছিলাম।
টুটুল খুবই গোছানো স্বভাবের, ছবির স্টোরি বোর্ড তৈরি করে হাতে এঁকে দৃশ্যগুলো সাজিয়ে নিত। কোথায় কী মিউজিক হবে, সবকিছুর ছক করে কাজের একটা পরিকল্পনা করে নিত। ওর এসব রেখে যাওয়া নির্দেশনাই ছিল আমার ভরসা। আমার মেয়েরা খবর পেয়েই ছুটে এসেছিল, দুর্ভাগ্য বাবার সঙ্গে দেখা ও কথা হয়নি। ওরাই সাহস দিল, বাবার কাজ শেষ করতে হবে। ওদের নিয়ে কাজ শুরু করে দিলাম। আমাদের ইউনিটের সবাই আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল টুটুলের প্রতি তাঁদের গভীর ভালোবাসা ও দায়বোধ থেকে। বিশেষ করে সংগীত পরিচালক ফরিদ ভাই, যাঁকে করোনা কেড়ে নিয়েছে এ বছর, আর ওর দীর্ঘদিনের সহযোগী রতন কুমার বর্মন আমাকে যেভাবে সাহায্য করেছেন, তা ভোলার নয়।
পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ করতে গিয়ে অনেক নতুন শব্দ আর কাজের সঙ্গে পরিচয় হলো, সম্পাদনার ব্যাপারটি জানতাম, কিন্তু আমার কোনো ধারণা ছিল না মিউজিক, সাউন্ড, কালার করেকশন এসব বিষয়ে। দিনের পর দিন বসে থাকতাম সম্পাদকের টেবিলের পাশে। মিউজিক করার সময়েও বসে থাকতাম। কাজটি বোঝার চেষ্টা করতাম। ধীরে ধীরে এগুলোকে যতটা পারি জেনে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করে এক বছরের মধ্যে ছবিটি শেষ করলাম।
‘কালবেলা’ ছবিতে অভিনয় করেছেন তাহমিনা অথৈ, শিশির, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, লুৎফর রহমান জর্জ, জুলফিকার চঞ্চল, প্রমুখ। সংগীত করেছেন ফরিদ আহমেদ।
চলচ্চিত্রের সঙ্গে আমার যোগসূত্র ছিল একটিই, আমি চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত একজনের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলাম জীবনের পথ একসঙ্গে চলব বলে। বাড়িতে ছবি দেখার অনুমতি ছিল না। টুটুলের সঙ্গে বিয়ের পর কিছু ছবি দেখেছি, আগে খুব অল্পই। কিন্তু আমাদের ভেতরে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও বোঝাপড়াটা ভালো ছিল। একটু-আধটু লেখালিখি করি বলে ওকে কিছু নাটকের স্ক্রিপ্ট করে দিয়েছিলাম।
‘আধিয়ার’ ছবির সাবটাইটেল আমি আর আমার এক সহকর্মী মিলে করেছিলাম। ওর সঙ্গে শুটিংয়ে যেতে পারিনি কখনো, সংসার ও নিজের পেশাগত ব্যস্ততার জন্য। ‘কালবেলা’ ছবির কাজে ও আমাকে প্রথম থেকে যুক্ত করেছিল। ওর শরীর তখন খুবই অসুস্থ ছিল, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে একটা ম্যাসিভ অ্যাটাকের কারণে। ওকে একা কোথাও যেতে দিতাম না। কিন্তু ওর অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছবি করার। শরীরটা বেশি খারাপ হওয়ায় ও যেন আরও মরিয়া হয়ে উঠেছিল। স্ক্রিপ্ট তৈরি করছিল। বীর মুক্তিযোদ্ধা টুটুল বোধ হয় ভেবেছিল জীবনের শেষবেলায় একাত্তরের স্মৃতিকে আরও একবার এই বিস্মৃতপ্রবণ জাতির মনে উসকে দিয়ে যাবে। তবে ও যুদ্ধের ভয়াবহতাকে প্রত্যক্ষভাবে আনতে চায়নি, সেটিকে পরোক্ষে রেখে সাধারণ মানুষের আকস্মিক বিপর্যয় ও ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তিকে বড় করে দেখাতে চেয়েছিল। বিশেষ করে যুদ্ধের সময়ে নারীর নারীত্বই যে তাকে আরও বেশি বিপন্ন করে তোলে, সেটি ওর ভাবনায় স্থান পেয়েছিল।
সৃজনশীল কাজে কষ্ট থাকলেও এর আনন্দের বোধ অলৌকিক। সেই আনন্দটি ও চলে যাওয়ার আগে আরেকবার পেয়েছিল শুটিংয়ের সময়ে। ২০১৮ সালের ২৪ নভেম্বর শুটিং শেষ করে যখন ফিরে এল তখন খুব দুর্বল বোধ করছিল। কিন্তু শুধু মনের জোরে কাজ করে যাচ্ছিল। ১৫ ডিসেম্বর মাঝরাতে হার্ট অ্যাটাক হলো। হাসপাতালে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই লাইফ সাপোর্টে। ১৮ তারিখে চলে গেল। আমি নিশ্চিত, হাসপাতালে যাওয়ার পথে পুরো সময়টাই ও ভাবছিল ছবিটার কী হবে। তাই ও চলে যাওয়ার পর প্রথমেই আমার মনে হয়েছে, এটা এখন আমাকেই করতে হবে, এটাই আমাকে ওর শেষ দান। আমি প্রাণ দিয়ে সেই দান গ্রহণ করেছিলাম।
টুটুল খুবই গোছানো স্বভাবের, ছবির স্টোরি বোর্ড তৈরি করে হাতে এঁকে দৃশ্যগুলো সাজিয়ে নিত। কোথায় কী মিউজিক হবে, সবকিছুর ছক করে কাজের একটা পরিকল্পনা করে নিত। ওর এসব রেখে যাওয়া নির্দেশনাই ছিল আমার ভরসা। আমার মেয়েরা খবর পেয়েই ছুটে এসেছিল, দুর্ভাগ্য বাবার সঙ্গে দেখা ও কথা হয়নি। ওরাই সাহস দিল, বাবার কাজ শেষ করতে হবে। ওদের নিয়ে কাজ শুরু করে দিলাম। আমাদের ইউনিটের সবাই আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল টুটুলের প্রতি তাঁদের গভীর ভালোবাসা ও দায়বোধ থেকে। বিশেষ করে সংগীত পরিচালক ফরিদ ভাই, যাঁকে করোনা কেড়ে নিয়েছে এ বছর, আর ওর দীর্ঘদিনের সহযোগী রতন কুমার বর্মন আমাকে যেভাবে সাহায্য করেছেন, তা ভোলার নয়।
পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ করতে গিয়ে অনেক নতুন শব্দ আর কাজের সঙ্গে পরিচয় হলো, সম্পাদনার ব্যাপারটি জানতাম, কিন্তু আমার কোনো ধারণা ছিল না মিউজিক, সাউন্ড, কালার করেকশন এসব বিষয়ে। দিনের পর দিন বসে থাকতাম সম্পাদকের টেবিলের পাশে। মিউজিক করার সময়েও বসে থাকতাম। কাজটি বোঝার চেষ্টা করতাম। ধীরে ধীরে এগুলোকে যতটা পারি জেনে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করে এক বছরের মধ্যে ছবিটি শেষ করলাম।
‘কালবেলা’ ছবিতে অভিনয় করেছেন তাহমিনা অথৈ, শিশির, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, লুৎফর রহমান জর্জ, জুলফিকার চঞ্চল, প্রমুখ। সংগীত করেছেন ফরিদ আহমেদ।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৩ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৭ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৭ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৭ দিন আগে