Ajker Patrika

আদালতে মীমাংসা হওয়ার পরেও স্ত্রীকে নির্যাতন

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
আদালতে মীমাংসা হওয়ার পরেও স্ত্রীকে নির্যাতন

যৌতুক দাবি ও নির্যাতনের অভিযোগে আদালতে করা হয় মামলা। বিচারকের হস্তক্ষেপে করা হয় মীমাংসা। পরে বাড়িতে এসে আবারও করা হয় স্ত্রীকে নির্যাতন। সর্বশেষ গত শুক্রবার নির্যাতন করা হলে গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্ত্রী নির্যাতনের এসব অভিযোগ উঠেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সোহেল রানা নামের এক বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে।

সোহেল রানার বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলার গিতালগাছ গ্রামে। তিনি বান্দরবান রুমা বিজিবি ব্যাটালিয়ন-৯-এ কর্মরত। দুই মাসের ছুটিতে তিনি গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন। জানা গেছে, ২০২০ সালে উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের প্রধানগছ গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের মেয়ে সিদ্দিকা নাহারের বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের গিতালগছ গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে সোহেল রানার। বিয়ের সময় সোহেলকে উপহার হিসেবে তিন লাখ টাকা দেয় মেয়ের পরিবার। এরপরও বিয়ের কয়েক দিনের মাথায় শুরু হয় মানসিক নির্যাতন। নতুন করে চার লাখ টাকা যৌতুক চেয়ে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন সোহেল ও তাঁর পরিবার। ২০২১ সালে যৌতুকের দাবির অভিযোগে সিদ্দিকা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আদালতে মামলা করেন। বিষয়টি নিয়ে ২৩ আগস্ট পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বি এম তারিকুল কবির ওই দম্পতিসহ দুই পরিবারকে ডেকে মীমাংসা করে দেন। এ সময় বিচারক সোহেলকে দুই মাসের ছুটির মধ্যে ১ মাস বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে অবস্থান করা ও ১ মাস স্ত্রীকে বাইরে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করানোর শর্ত দেন।

এদিকে আদালত থেকে বাড়ি ফিরেই সিদ্দিকাকে আবারও মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়। সর্বশেষ গত শুক্রবার পুনরায় যৌতুক দাবি ও মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করেন সোহেল। এরপর স্থানীয়দের সহযোগিতায় সিদ্দিকাকে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।

সিদ্দিকা নাহার বলেন, ‘স্বামীর সঙ্গে আমাকে মিল করিয়ে দেন বিচারক; কিন্তু আদালত থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর আবারও নির্যাতন করে। আমি এর বিচার চাই।’ 
সোহেল রানার সঙ্গে যোগযোগ করা সম্ভব না হলে তাঁর বাবা রফিকুল ইসলাম যৌতুক দাবি ও নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের শারীরিক সমস্যা আছে। এ কারণে আমাদের বিরুদ্ধে তারা লেগেছে। তাঁরা চাচ্ছে যাতে ছেলেটার চাকরি চলে যায়।’

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘আদালতে তাঁদের সমঝোতা হওয়ার পর আমাদের বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিকে গত শনিবার আবারও সিদ্দিকাকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত