কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন আগামী রোববার। শেষ মুহূর্তে প্রচারে আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক পড়েছে। গত মঙ্গল ও বুধবার আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে পাঁচ চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাতজন সদস্য প্রার্থীকে জরিমানা করা হয়েছে।

এদিকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

উপজেলার ছয়সূতী ও উছমানপুর ইউপিতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে দুজন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দুজন সাধারণ সদস্য প্রার্থীকে মোট ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে নির্বাহী হাকিম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম বুলবুল এ জরিমানা করেন।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর, ফরিদপুর ও উছমানপুর ইউপিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তিনজন সাধারণ সদস্য প্রার্থীকে মোট ১৪ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

জানতে চাইলে নির্বাহী হাকিম আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সমাপ্ত করার জন্য আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আগামী রোববার অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩৪ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৬৯ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ১৯৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

উপজেলার সালুয়া ইউপিতে নির্বাচন উপলক্ষে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ কাইয়ূমের নির্বাচনী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বুধবার রাতে ডুমরাকান্দা এমাদ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এ আলোচনা সভা হয়। এতে কয়েক শতাধিক নেতা-কর্মী ও সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে নোটিশ পাওয়া প্রার্থীরা হলেন ছয়সূতি ইউপিতে স্বতন্ত্র (চশমা) উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আনিসুজ্জামান জসিম এবং সালুয়া ইউপিতে স্বতন্ত্র (মোটরসাইকেল) ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইউসুফ মিয়া।

গত বুধবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান ও সাধারণ সম্পাদক মুর্শিদ উদ্দিন আহমেদের সই করা নোটিশে আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাঁদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও নানাবিধ তৎপরতাসহ দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী ও গঠনতন্ত্রের ৪৭ (ক) ধারা অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এ বিষয়ে লিখিত জবাব আগামী ৭ দিনের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান বলেন, যাঁরা দলীয় শৃঙ্খলা অমান্য করে ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন এবং দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নোটিশ পেয়েছেন স্বীকার করে সালুয়া ইউপির বিদ্রোহী প্রার্থী ইউসুফ মিয়া বলেন, যথাসময়ে নোটিশের জবাব দেওয়া হবে।

ছয়সূতি ইউপির বিদ্রোহী প্রার্থী আনিসুজ্জামান জসিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।