সিলেট সরকারি কলেজে ৬ বছরেও হয়নি একাডেমিক ভবন ছাত্রীনিবাসে পাঠদান

লবীব আহমদ, সিলেট
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮: ৪৮

সিলেট সরকারি কলেজে শ্রেণিকক্ষের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এতে কলেজের ছাত্রীদের আবাসনের জন্য নির্মিত ভবনে পাঠদান চলছে শিক্ষার্থীদের। এ দিকে, ভবন-সংকট দূর করতে ২০১৭ সালে ১০ তলার একটি একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলেও ছয় বছরেও সেটির কাজ শুরু হয়নি। এতে সংকট আরও বেড়েছে।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রীদের আবাসন-সংকট নিরসনে ২০০৫ সালে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মাণ করা হয় ১০০ আসনের চারতলা ভবন। তখন কলেজ প্রশাসন থেকে ছাত্রী হোস্টেলে ভর্তি হওয়ার জন্য বারবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও অবস্থানগত কারণে কোনো ছাত্রী হোস্টেলে উঠতে আগ্রহ দেখায়নি। এভাবে ১৬ বছর পড়ে ছিল ভবনটি।

পরে কলেজের একাডেমিক স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০২২ সালে বোর্ডে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রী হোস্টেলকে অনার্স ভবনে রূপান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে কলেজের বাংলা, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ।সেখানেই এখন চলছে শ্রেণি-কার্যক্রম। এ ছাড়া ওই ভবনের নিচতলা বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সিলেট সরকারি কলেজে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। কিন্তু কলেজে পর্যাপ্ত ভবন নেই। সংকট কাটাতে ২০১৭ সালে সিলেটের টিলাগড়ে ১০ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তখনকার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। কিন্তু ২০২৪ সালে এসেও সেখানে ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সাইনবোর্ড ছাড়া আর কিছুই নেই।

এ বিষয়ে কলেজের তখনকার অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল আনাম মো. রিয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১০ তলা ভবনের কাজের অগ্রগতির জন্য দুই দফায় যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পাইনি। পরে বোর্ডে আবেদন করে কলেজের অভ্যন্তরে নির্মিত ছাত্রীনিবাসে শ্রেণি-কার্যক্রম শুরু করা হয়।’

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয় সূত্র জানায়, সিলেট সরকারি কলেজে ১০ তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হলেও এর কোনো বরাদ্দ আসেনি। এতে ভবনটির কাজ আর শুরু হয়নি। তবে এবার ছয়তলা ভবনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মাটি পরীক্ষা করার জন্য বলা হয়েছে। গত বছরের ২৪ জুলাই মাটি পরীক্ষা করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সিলেট সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাব্বির আহমদ বলেন, ‘কলেজের একাদশ শ্রেণির ক্লাসরুম একেবারে ভাঙাচোরা। দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাসরুমে বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। এই ভবনগুলোতে ক্লাস করতে গেলেই ভয় লাগে।’

সিলেট সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক নাজমুল খন্দকার বলেন, পুরোনো ভবনে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করাতে হয়। স্থায়ীভাবে ভবন-সংকট দূর করা প্রয়োজন।

সিলেট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ জেড এম মাঈনুল হোসেন বলেন, ‘কলেজে ছয়তলা ভবনের জন্য মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। ছয়তলা ভবনটি হলে সংকট অনেকটা কমে যাবে।’

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার নাজমুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বরাদ্দ না আসায় কলেজটির ১০ তলা ভবনের কাজ শুরু হয়নি। নতুন করে ছয়তলার জন্য মাটি পরীক্ষা করে গত বছরের জুলাই মাসে ঢাকায় প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায় আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে টেন্ডার হয়ে যাবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত