মো. জাহিদুল ইসলাম, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)
‘বাঁশি কেন গায়/ আমারে কাঁদায়’। কিন্নরী লতা মঙ্গেশকরের বেদনার্ত কণ্ঠে ঝরে পড়া সুরের মতো নয়, মহারাজ বাঁশি বাজিয়ে চলেছেন মনের আনন্দে। পিঞ্জুরী গ্রাম তখন শীতলাপূজার আনন্দে মাতোয়ারা। মেলায় আসা শত শত মানুষের কোলাহল ছাপিয়ে মহারাজের বাঁশির সুর তখন চরাচরে ছড়িয়ে পড়েছে। অনুরণিত হতে শুরু করেছে মস্তিষ্কের নিউরনে। বিকেলের চুরিয়ে যাওয়া আলোয় তাঁর মোহনবাঁশির সুর কেমন যেন আনমনা করে তোলে মেলায় আসা মানুষদের। তারা এগিয়ে গিয়ে জটলা বেঁধে দাঁড়ায় মহারাজার সামনে। আমরাও এগিয়ে যাই তাঁর দিকে। তিনি বাঁশি বাজিয়ে যান। ক্লান্ত ভঙ্গিতে একবার থামেন। আমরা মনে মনে বলি, ও বাঁশিওয়ালা, আর একবার, আর একবার বাজুক না তোমার মোহনবাঁশি! মেলার জটলা তাঁকে ঘিরে আছে, নাকি হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার মতো তিনিই সবাইকে টেনে এনেছেন সুরের ইন্দ্রজালে বেঁধে—বোঝা দায়।
কোটালীপাড়ার পিঞ্জুরী গ্রামের এই শীতলা মেলার বয়স নাকি ২০০ বছর—এলাকার লোকে তা-ই বলে। বর্তমান মেলা কমিটির সভাপতি মনি সেনগুপ্তর পূর্বপুরুষ ক্ষীরোদ সেনগুপ্ত এই মেলা শুরু করেছিলেন বলে জানা যায়। সেই শুরু থেকে প্রতি বৈশাখের শেষ শনিবার মেলাটি বসে, চলে ৩ দিন। ধীরে ধীরে দিনের সূর্যের মতো মেলার কোলাহল স্তিমিত হয়ে এলে আমরা মহারাজের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করি। জানতে চাই বাঁশি আর সুরের গল্প।
বাঁশিওয়ালার পুরো নাম মহারাজ হালদার। বয়স ৮০ পেরিয়েছে। কোটালীপাড়ার হরিণাহাটি গ্রামে তাঁর বাড়ি। সেই ছোটবেলা থেকে পিঞ্জুরী গ্রামের এই শীতলা মেলায় আসেন তিনি। দীর্ঘ জীবন বয়ে বেড়ানো মানুষটি বাবাকে দেখেননি। মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় তাঁর বাবা মারা যান। মা অনেক কষ্ট করে বড় করেন তাঁকে। শিশু বয়সেই মহারাজের বাঁশি বাজানোর হাতেখড়ি। এক কুড়ি বয়সে যোগ দেন যাত্রাদলে; বয়স দুই কুড়ি হলে ঘরের ছেলে ঘরে ফেরেন। মাঝের সেই সময় তিনি যাত্রাদলের সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশের বিভিন্ন এলাকা; আর বাঁশি বাজিয়েছেন। বাড়ি ফিরে তিনি বাঁশি তৈরি ও বিক্রি করা শুরু করেন। গত ৩০ বছরের বেশি সময় তিনি দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মেলায় মেলায় বাঁশি বিক্রি করেছেন। এ আয় দিয়ে মহারাজ হালদারের সংসার চলেছে। ব্যক্তিগত জীবনে মহারাজ হালদার চার সন্তানের জনক। কুমিল্লা থেকে ঢুলু বাঁশ এনে তা দিয়ে বাঁশি তৈরি করেন। সেই বাঁশ দিয়ে খিলা, আড়, বিন ও দোয়েলজাতীয় বাঁশি তৈরি হয়। আর অবসর সময়ে কেউ তাঁর বাড়িতে গেলে তাঁকে বাঁশি বাজানো শেখান।
৮০ বছর তো আর কম বয়স নয়! বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়েছে শরীর, বাসা বেঁধেছে রোগ। ফলে আগের মতো আর একটানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাঁশি বাজাতে পারেন না। গোপালগঞ্জের বাইরের মেলায়ও যেতে পারেন না বাঁশি বিক্রির জন্য। তবে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে আসেন তাঁর বাড়িতে, বাঁশি কিনতে। দীর্ঘ জীবনে তাঁর কাছে বাঁশি বাজানো শিখেছেন অনেকে, কিন্তু বানাতে শেখেননি কেউ। অথচ মহারাজের আশা, মৃত্যুর আগে তাঁর মতো বাঁশি বানানো শিখুক কেউ। সেই যোগ্য উত্তরসূরির মাধ্যমে তাঁর একজীবনের সাধনার ফসল হয়ে বেঁচে থাকবেন তিনি। মহাকালের গর্ভ থেকে মহারাজ বলে ওঠেন, ‘মৃত্যুর পরে আমি এই কর্মের মধ্যে বেঁচে থাকতে চাই।’
মহারাজের বাঁশি বিক্রি হয় ২০ থেকে ৫০০ টাকায়। তিনি জানেন, এখন আর আগের মতো বিক্রি হয় না বাঁশি। তারপরেও জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মহারাজ হালদার তাঁর এই জীবন ঘষে শেখা পেশাটা ধরে রাখতে চান।
‘বাঁশি কেন গায়/ আমারে কাঁদায়’। কিন্নরী লতা মঙ্গেশকরের বেদনার্ত কণ্ঠে ঝরে পড়া সুরের মতো নয়, মহারাজ বাঁশি বাজিয়ে চলেছেন মনের আনন্দে। পিঞ্জুরী গ্রাম তখন শীতলাপূজার আনন্দে মাতোয়ারা। মেলায় আসা শত শত মানুষের কোলাহল ছাপিয়ে মহারাজের বাঁশির সুর তখন চরাচরে ছড়িয়ে পড়েছে। অনুরণিত হতে শুরু করেছে মস্তিষ্কের নিউরনে। বিকেলের চুরিয়ে যাওয়া আলোয় তাঁর মোহনবাঁশির সুর কেমন যেন আনমনা করে তোলে মেলায় আসা মানুষদের। তারা এগিয়ে গিয়ে জটলা বেঁধে দাঁড়ায় মহারাজার সামনে। আমরাও এগিয়ে যাই তাঁর দিকে। তিনি বাঁশি বাজিয়ে যান। ক্লান্ত ভঙ্গিতে একবার থামেন। আমরা মনে মনে বলি, ও বাঁশিওয়ালা, আর একবার, আর একবার বাজুক না তোমার মোহনবাঁশি! মেলার জটলা তাঁকে ঘিরে আছে, নাকি হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার মতো তিনিই সবাইকে টেনে এনেছেন সুরের ইন্দ্রজালে বেঁধে—বোঝা দায়।
কোটালীপাড়ার পিঞ্জুরী গ্রামের এই শীতলা মেলার বয়স নাকি ২০০ বছর—এলাকার লোকে তা-ই বলে। বর্তমান মেলা কমিটির সভাপতি মনি সেনগুপ্তর পূর্বপুরুষ ক্ষীরোদ সেনগুপ্ত এই মেলা শুরু করেছিলেন বলে জানা যায়। সেই শুরু থেকে প্রতি বৈশাখের শেষ শনিবার মেলাটি বসে, চলে ৩ দিন। ধীরে ধীরে দিনের সূর্যের মতো মেলার কোলাহল স্তিমিত হয়ে এলে আমরা মহারাজের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করি। জানতে চাই বাঁশি আর সুরের গল্প।
বাঁশিওয়ালার পুরো নাম মহারাজ হালদার। বয়স ৮০ পেরিয়েছে। কোটালীপাড়ার হরিণাহাটি গ্রামে তাঁর বাড়ি। সেই ছোটবেলা থেকে পিঞ্জুরী গ্রামের এই শীতলা মেলায় আসেন তিনি। দীর্ঘ জীবন বয়ে বেড়ানো মানুষটি বাবাকে দেখেননি। মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় তাঁর বাবা মারা যান। মা অনেক কষ্ট করে বড় করেন তাঁকে। শিশু বয়সেই মহারাজের বাঁশি বাজানোর হাতেখড়ি। এক কুড়ি বয়সে যোগ দেন যাত্রাদলে; বয়স দুই কুড়ি হলে ঘরের ছেলে ঘরে ফেরেন। মাঝের সেই সময় তিনি যাত্রাদলের সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশের বিভিন্ন এলাকা; আর বাঁশি বাজিয়েছেন। বাড়ি ফিরে তিনি বাঁশি তৈরি ও বিক্রি করা শুরু করেন। গত ৩০ বছরের বেশি সময় তিনি দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মেলায় মেলায় বাঁশি বিক্রি করেছেন। এ আয় দিয়ে মহারাজ হালদারের সংসার চলেছে। ব্যক্তিগত জীবনে মহারাজ হালদার চার সন্তানের জনক। কুমিল্লা থেকে ঢুলু বাঁশ এনে তা দিয়ে বাঁশি তৈরি করেন। সেই বাঁশ দিয়ে খিলা, আড়, বিন ও দোয়েলজাতীয় বাঁশি তৈরি হয়। আর অবসর সময়ে কেউ তাঁর বাড়িতে গেলে তাঁকে বাঁশি বাজানো শেখান।
৮০ বছর তো আর কম বয়স নয়! বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়েছে শরীর, বাসা বেঁধেছে রোগ। ফলে আগের মতো আর একটানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাঁশি বাজাতে পারেন না। গোপালগঞ্জের বাইরের মেলায়ও যেতে পারেন না বাঁশি বিক্রির জন্য। তবে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে আসেন তাঁর বাড়িতে, বাঁশি কিনতে। দীর্ঘ জীবনে তাঁর কাছে বাঁশি বাজানো শিখেছেন অনেকে, কিন্তু বানাতে শেখেননি কেউ। অথচ মহারাজের আশা, মৃত্যুর আগে তাঁর মতো বাঁশি বানানো শিখুক কেউ। সেই যোগ্য উত্তরসূরির মাধ্যমে তাঁর একজীবনের সাধনার ফসল হয়ে বেঁচে থাকবেন তিনি। মহাকালের গর্ভ থেকে মহারাজ বলে ওঠেন, ‘মৃত্যুর পরে আমি এই কর্মের মধ্যে বেঁচে থাকতে চাই।’
মহারাজের বাঁশি বিক্রি হয় ২০ থেকে ৫০০ টাকায়। তিনি জানেন, এখন আর আগের মতো বিক্রি হয় না বাঁশি। তারপরেও জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মহারাজ হালদার তাঁর এই জীবন ঘষে শেখা পেশাটা ধরে রাখতে চান।
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে