প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে সারা দেশের মতো মানিকগঞ্জে গণটিকার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টায় মানিকগঞ্জের দুটি পৌরসভা ও সাতটি উপজেলার ৬৫টি ইউনিয়নে এক যোগে টিকা কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।

মানিকগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমীন আকন্দ জানান, মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায় ৬৫টি ইউনিয়নের ৬৫টি কেন্দ্র এবং দুটি পৌরসভার সাতটি কেন্দ্রে মোট এক লাখ চার হাজার ৪০০ টিকার মধ্যে এক লাখ তিন হাজারের বেশি টিকা প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, টিকা গ্রহণে যারা নিবন্ধন করতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে তাদের ভোটার আইডি কার্ড দেখে ভোগান্তি ছাড়া টিকা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে টিকা গ্রহণে জেলার কোথাও কোনো ধরনের গোলমালের খবর পাওয়া যায়নি। জেলার প্রতিটি টিকা কেন্দ্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তদারকি করেছেন। মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. রমজান আলী সকালে টিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর কেন্দ্রে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের কোথাও কোনো ধরনের গোলযোগের খবর পাওয়া যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে যারা এত দিন টিকা গ্রহণ করেননি তারা উৎসাহ নিয়ে টিকা গ্রহণ করছে এসেছেন।’

হরিরামপুরের ১৩ ইউনিয়নের গণটিকার (২য় কিস্তি) প্রথম ডোজ নিতে জনসাধারণের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল সকাল নয়টা থেকে গণটিকার ডোজ দেওয়া শুরু হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড় ছিল। উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন, চালা ইউনিয়ন, গালা ইউনিয়ন কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে।

জানা যায়, প্রতিটি ইউনিয়নের কেন্দ্রে ১ হাজার ৫০০ জনকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি আগেই নিয়ে রেখেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস।

বয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, গণটীকা কর্মসূচি প্রথম ডোজে দুপুরের আগেই ৫০০ জন টিকা নিয়েছেন।

হারুকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান চুন্নু বলেন, গণটীকা কর্মসূচি সফল করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রেখেছি। টিকা নিতে হাজারো মানুষ এসেছেন।

চালা ইউনিয়নের টিকা কেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মী আনোয়ারা বেগম ও সেলিনা বেগম ও কায়কোবাদ হোসেন টিকা দিচ্ছেন।

সাড়ে চারটার দিকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মী কায়কোবাদ বলেন, বিকেলেও আমরা টিকা দিচ্ছি। আজ এক হাজার জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গণটিকাদান কর্মসূচির (২য় পর্ব) প্রথম ডোজের দিন বিভিন্ন ইউনিয়নের কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসরাত জাহান।

অপরদিকে গতকাল তৎক্ষণাৎ নিবন্ধনের মাধ্যমে ঘিওরে সকাল ৯টা থেকে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৭টি কেন্দ্রে থেকে প্রথম ডোজের টিকা কর্মসূচি শুরু হয়। টিকা কেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে এলাকার লোকজনের উপচে পড়া ভিড় দেখা করা গেছে। জনগণের স্বত: স্ফূর্ত অংশগ্রহণে এই টিকাদান কার্যক্রমে পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশসহ স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান দিশারি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের তৎপরতা দেখা গেছে।

ঘিওর উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ৭ টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৫০০ মোট ১০ হাজার ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এতে ৪২ জন টিকাদানকারী, ৬৩ জন স্বাস্থ্যসেবী ও ৭ জন সুপারভাইজার একযোগে কাজ এ কর্মসূচিতে কাজ করেছেন।