পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতে অভিনব শর্ত দিয়ে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার জন্য দরপত্র আহ্বানের অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ও দরপত্র কমিটির সভাপতির কাছে অভিযোগ দিয়েছেন এক ঠিকাদার।

সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের অভিযোগ, তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে বিশেষ কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশ থেকে ব্যাংক স্থিতি ও অভিজ্ঞতার অস্বাভাবিক শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তত্ত্বাবধায়কের দাবি, ঠিকাদারের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২ অক্টোবর কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের এমএসআর দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ২ নভেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু দরপত্র ক্রয় ও ঠিকাদার নির্ধারণে কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে, যা অসামঞ্জস্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করছেন এমএসআর পণ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারেরা।

দরপত্রে শর্তের বিষয়ে আপত্তি তুলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্বর্ণা এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মো. সাহাদৎ হোসেন খন্দকার বলেন, ‘ছয়টি গ্রুপের পণ্যের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

দরপত্রের শর্তের ১৯(ছ) অংশে বলা হয়েছে, পত্রিকায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ থেকে দরপত্র দাখিলের দিন পর্যন্ত ঠিকাদারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঁচ কোটি টাকা থাকতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিটি গ্রুপে পাঁচ কোটি টাকার পণ্য নেবে না। পুরো বছর মিলে দুই বা তিন কিস্তিতে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকার পণ্য নিয়ে থাকে। অথচ তারা পাঁচ কোটি টাকার ব্যাংক স্থিতি চেয়েছে। সেই চাওয়াতেও বড় একটি অসামঞ্জস্যতা ও দুরভিসন্ধি রয়েছে। শর্তে উল্লেখ করা হয়েছে, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে দরপত্র দাখিলের দিন পর্যন্ত সময়ে স্থিতি থাকতে হবে। অর্থাৎ এর আগের হলেও হবে না, পরের থেকে হলেও হবে না। আমরা কীভাবে জানব, সুনির্দিষ্ট কত তারিখে এবং কোন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হচ্ছে?’

ঠিকাদারদের এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. শহিদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘যে ঠিকাদার কাজ করবেন তাঁকে অবশ্যই খোঁজ রাখতে হবে, কবে কোন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। আমি নিয়ম অনুযায়ী শর্তারোপ করেছি।’

শর্ত সংশোধন করার আবেদন জানিয়ে ঠিকাদারের দেওয়া অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তত্ত্বাবধায়ক। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে তাঁর অভিযোগ ভিত্তিহীন মনে হওয়ায় তাঁকে কোনো জবাব দেওয়া হয়নি।’