সুকুমার চক্রবর্তী
আমার সে যে কী নিদারুণ অবস্থা, মনে হচ্ছিল এই বোধ হয় মিলিটারি এসে আমাকে ধরে নিয়ে যাবে, প্রতিমুহূর্ত মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করছিলাম। ডল মাঝে মাঝে এসে আমাকে আয়াতগুলোর উচ্চারণ শেখাচ্ছিল আর সাহস দিচ্ছিল।
একাত্তরের ২৯ মার্চ আমার বন্ধু ডলের অফিসে গেলাম আশ্রয়ের খোঁজে। আমি ডলকে সব বললাম। ডল জিজ্ঞেস করল, ‘এ কয়দিন আপনি কোথায় ছিলেন?’ আমি বললাম, ‘২৫ ও ২৬ মার্চ কারফিউর সময় নিজের বাসায় ছিলাম। ২৭ মার্চ দেবেশদার (দেবেশ ভট্টাচার্য পরবর্তী সময়ে বিচারপতি) সঙ্গে অ্যাডভোকেট রৌফ সাহেবের শ্বশুর বিচারপতির বিজয়নগরের বাসায় রাত্রিবাস করেছি। ২৮ মার্চ ড. আলীম আল রাজি দেবেশদা ও বউদিকে তাঁর বাসায় নিয়ে যান। তখন রৌফ সাহেব আমাকে বললেন, “চলেন, আপনি আমার বাসায় থাকবেন।” আজ সেখান থেকেই অফিসে এসেছিলাম বোর্ডরুমের চাবি জমা দিতে। ওয়ারীতে আর থাকা নিরাপদ নয়, বনগ্রামের বিহারিরা সব হিন্দুবাড়ি আক্রমণ করছে, হিন্দু মারছে। তাই তোমার কাছে এলাম।’
ডল হেসে দিয়ে বলে, ‘কোনো চিন্তা নাই, আপনি নির্ভয়ে আমার সঙ্গে থাকবেন।’ দুপুরে অফিসেই ডলের সঙ্গে প্যাকেট লাঞ্চ করলাম। বিকেল ৪টায় আমরা দুজনে রিকশা নিয়ে ওর স্বামীবাগের ভাড়া বাসায় গেলাম। দেখি সেখানে অনেক লোক। দুই রুমের বাসা, ডল ও মজনু থাকে। সেখানে মজনুর বোন জামাই দারোগা, থানা থেকে পালিয়ে এসেছেন। তিনি ও তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও বুয়া, তাঁরা চারজন, আমাকে নিয়ে সংখ্যা পাঁচে দাঁড়াল। একজন হিন্দুকে বাসায় নিয়ে আসায় দারোগা সাহেব নাখোশ বোঝা গেল। ডল আমাকে বলল, ‘আপনি আমার সঙ্গে আমার খাটে শোবেন, ওদের কথায় কান দেবেন না। দু-এক দিনের মধ্যে বড় ভাই (মিজান ভাই) নরসিংদী থেকে আসবেন, তখন আমরা নরসিংদী চলে যাব।’
যা হোক, রাতের খাবার হতে হতে ১১টা বেজে গেল। খাওয়ার পর আমরা সবাই বসে গল্পগুজব করছি। রাত ১২টার দিকে হঠাৎ চারদিক আলো করে সার্চলাইট জ্বলে উঠল। একটা গুঞ্জন উঠল–মিলিটারি এলাকা ঘেরাও করেছে, সবাই ভীতসন্ত্রস্ত। মিলিটারি ঘেরাও করলে নির্বিচারে হত্যা শুরু করে, বিশেষ করে হিন্দু, পলাতক পুলিশ ও ইপিআর বাহিনীর লোকদের পেলে আর রক্ষা নেই। আগুন জ্বালিয়ে দেয়। দুদিন আগে বুড়িগঙ্গার ওপারে কেরানীগঞ্জে ভয়ংকর অগ্নিকাণ্ড-হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। দারোগা সাহেব তাঁর ইউনিফর্ম ও কাগজপত্র ছাদের কার্নিশে নিয়ে লুকালেন। তারপর তিনি আমাকে নিয়ে পড়লেন। এর মধ্যে ডল ও মজনু বাইরে গিয়ে খবর নিয়ে এল, মিলিটারি বিভিন্ন বাসায় ঢুকে সার্চ করছে, এখন পর্যন্ত কাউকে হত্যা করেনি, কোনো গুলির শব্দও পাওয়া যায়নি। তবে কয়েকজনকে ওদের গাড়িতে তুলেছে। এসব শুনে আমার তো আত্মারাম খাঁচাছাড়া। ভয়ে হাত-পা কাঁপতে শুরু করেছে।
দারোগা, মজনু ও ডল—তিনজনে মিলে আমাকে একজন মুসলমান বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। দারোগা আমাকে বললেন, ‘এখন থেকে আপনার নাম মো. আবদুল হাই, আব্বার নাম মো. আবদুল কাদের, আর দাদার নাম মো. আবদুল হামিদ। বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার বিন্নাফৈর গ্রাম। আপনি গোলাম রহমান ডলের দুলাভাই। আজ থেকে বুয়া রমিজা গোলাম রহমানের বোন এবং আপনার বেগম। আপনারা ঢাকায় বেড়াতে এসে আটকে পড়েছেন।’ ডল তার ডায়েরিতে এগুলো লিখে নিল আমাকে মুখস্থ করাবে বলে। এরপর দারোগা সাহেব বললেন, ‘আপনাকে আয়াত জিজ্ঞেস করতে পারে। তাহলে আপনাকে বলতে হবে, ১. আউজুবিল্লাহি মিনাস্সাইতানির রাহিম, ২। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, ৩। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।’ দারোগা সাহেব আরও বললেন, ‘এর পরও যদি আরও কোনো কিছু জিজ্ঞেস করে তখন শুধু আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর বলতে থাকবেন, তাতেও যদি না মানে, তবে এই শেষ দোয়াটা পাঠ করতে থাকবেন, লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জয়ালিমিন।’ ডল এই আয়াতগুলো ডায়েরিতে লিখে আমাকে উচ্চারণ শেখাতে লাগল। সে যে কী দারুণ অবস্থা! এর মধ্যে মজনু আবার খবর নিয়ে এল, মিলিটারি কাউকে সন্দেহজনক ভাবলে ভীষণ পেটাচ্ছে, তাদের চিৎকার-চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছে। মিলিটারি নাকি ক্রমেই এদিকে আসছে।
এ কথা শুনে কাজের বুয়া রমিজা দুটো রসুন ছেঁচে আমার দুই বগলে দিয়ে বলল, ‘খবরদার এইগুলা যেন পইড়ে না যায়। এখনই আপনার জ্বর আইসা যাইব।’ সে ডলকে বলল, ‘আপনার বন্ধুকে কোনার ঘরের চৌকিতে শোয়াইয়া একটা চাদরে গা ঢাইকা দেন, য্যান মনে হয় ওনার খুব জ্বর হইছে। আমি ওনার মাথায় পানি দিতাছি আর আপনি ওনাকে আয়াত মুখস্থ করান, ভয়ে তো উনি এমনি কাঁপাকাঁপি কইরতাছেন। যদি মিলিটারি আইসে তাইলে ওনাকে আমিই রক্ষা করমু। ওই আয়াতগুলা আমার মুখস্থ আছে।’
এই বলে সত্যি সত্যিই সে আমাকে শুইয়ে দিয়ে চাদর ঢাকা দিল এবং মাথায় পানি ঢালা শুরু করল। রসুনের গুণে আমার গা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। রমিজা আমার কানের কাছে ‘আউজু বিল্লাহ...’ গুন গুন করে ক্রমাগত বলে যাচ্ছে যেন আমার মুখস্থ হয়। এমন সাহসী মেয়ে আমার জীবনে আর দেখি নাই। আমার সে যে কী নিদারুণ অবস্থা, মনে হচ্ছিল এই বোধ হয় মিলিটারি এসে আমাকে ধরে নিয়ে যাবে, প্রতিমুহূর্ত মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করছিলাম। ডল মাঝে মাঝে এসে আমাকে আয়াতগুলোর উচ্চারণ শেখাচ্ছিল আর সাহস দিচ্ছিল।
ডল ও মজনু এই বাইরে যাচ্ছে আবার ভেতরে আসছে, সে এক চরম অস্থির অবস্থা! রাত দুটোর সময় হঠাৎ সব সার্চলাইট নিভে গেল। ডল ও মজনু দৌড়ে বাইরে গেল এবং কিছুক্ষণ পরে ফিরে এসে বলল, ‘আজ আল্লাহ বাঁচাইছে। মিলিটারি চলে গেছে, ওরা মুক্তি খুঁজতে এসেছিল।’ মিলিটারি চলে গেছে শুনে রমিজা আমার কানের কাছে আর একবার দোয়া ইউনুস পাঠ করে আমার বুকে তিনবার ফুঁ দিয়ে বলল, ‘আইজ আল্লাহ আপনারে বাঁচাইছে, আইজ থিকা আপনি মুসলমান, নাম মো. আবদুল হাই। এইটা মনে রাখবেন।’ তারপর পানি ঢালা বন্ধ করে আমাকে বলল, ‘উইঠা বইসেন, রসুনগুলা ফালাইয়া দেন, বাইরে গিয়া গায় হাওয়া-বাতাস লাগান, আর ডর নাই।’
রমিজার কথায় আমি যেন প্রাণ ফিরে পেলাম। সে যে কী স্বস্তি, তা ভাষায় ব্যক্ত করা যাবে না। এক সপ্তাহ পরে আমি বুঝেছিলাম যে আমি কী ভয় পেয়েছিলাম! প্রাণভয়ের চেয়ে বড় ভয় আর কিছু নেই।
সুকুমার চক্রবর্তী: অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ,সোনালী ব্যাংক স্টাফ কলেজ
আমার সে যে কী নিদারুণ অবস্থা, মনে হচ্ছিল এই বোধ হয় মিলিটারি এসে আমাকে ধরে নিয়ে যাবে, প্রতিমুহূর্ত মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করছিলাম। ডল মাঝে মাঝে এসে আমাকে আয়াতগুলোর উচ্চারণ শেখাচ্ছিল আর সাহস দিচ্ছিল।
একাত্তরের ২৯ মার্চ আমার বন্ধু ডলের অফিসে গেলাম আশ্রয়ের খোঁজে। আমি ডলকে সব বললাম। ডল জিজ্ঞেস করল, ‘এ কয়দিন আপনি কোথায় ছিলেন?’ আমি বললাম, ‘২৫ ও ২৬ মার্চ কারফিউর সময় নিজের বাসায় ছিলাম। ২৭ মার্চ দেবেশদার (দেবেশ ভট্টাচার্য পরবর্তী সময়ে বিচারপতি) সঙ্গে অ্যাডভোকেট রৌফ সাহেবের শ্বশুর বিচারপতির বিজয়নগরের বাসায় রাত্রিবাস করেছি। ২৮ মার্চ ড. আলীম আল রাজি দেবেশদা ও বউদিকে তাঁর বাসায় নিয়ে যান। তখন রৌফ সাহেব আমাকে বললেন, “চলেন, আপনি আমার বাসায় থাকবেন।” আজ সেখান থেকেই অফিসে এসেছিলাম বোর্ডরুমের চাবি জমা দিতে। ওয়ারীতে আর থাকা নিরাপদ নয়, বনগ্রামের বিহারিরা সব হিন্দুবাড়ি আক্রমণ করছে, হিন্দু মারছে। তাই তোমার কাছে এলাম।’
ডল হেসে দিয়ে বলে, ‘কোনো চিন্তা নাই, আপনি নির্ভয়ে আমার সঙ্গে থাকবেন।’ দুপুরে অফিসেই ডলের সঙ্গে প্যাকেট লাঞ্চ করলাম। বিকেল ৪টায় আমরা দুজনে রিকশা নিয়ে ওর স্বামীবাগের ভাড়া বাসায় গেলাম। দেখি সেখানে অনেক লোক। দুই রুমের বাসা, ডল ও মজনু থাকে। সেখানে মজনুর বোন জামাই দারোগা, থানা থেকে পালিয়ে এসেছেন। তিনি ও তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও বুয়া, তাঁরা চারজন, আমাকে নিয়ে সংখ্যা পাঁচে দাঁড়াল। একজন হিন্দুকে বাসায় নিয়ে আসায় দারোগা সাহেব নাখোশ বোঝা গেল। ডল আমাকে বলল, ‘আপনি আমার সঙ্গে আমার খাটে শোবেন, ওদের কথায় কান দেবেন না। দু-এক দিনের মধ্যে বড় ভাই (মিজান ভাই) নরসিংদী থেকে আসবেন, তখন আমরা নরসিংদী চলে যাব।’
যা হোক, রাতের খাবার হতে হতে ১১টা বেজে গেল। খাওয়ার পর আমরা সবাই বসে গল্পগুজব করছি। রাত ১২টার দিকে হঠাৎ চারদিক আলো করে সার্চলাইট জ্বলে উঠল। একটা গুঞ্জন উঠল–মিলিটারি এলাকা ঘেরাও করেছে, সবাই ভীতসন্ত্রস্ত। মিলিটারি ঘেরাও করলে নির্বিচারে হত্যা শুরু করে, বিশেষ করে হিন্দু, পলাতক পুলিশ ও ইপিআর বাহিনীর লোকদের পেলে আর রক্ষা নেই। আগুন জ্বালিয়ে দেয়। দুদিন আগে বুড়িগঙ্গার ওপারে কেরানীগঞ্জে ভয়ংকর অগ্নিকাণ্ড-হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। দারোগা সাহেব তাঁর ইউনিফর্ম ও কাগজপত্র ছাদের কার্নিশে নিয়ে লুকালেন। তারপর তিনি আমাকে নিয়ে পড়লেন। এর মধ্যে ডল ও মজনু বাইরে গিয়ে খবর নিয়ে এল, মিলিটারি বিভিন্ন বাসায় ঢুকে সার্চ করছে, এখন পর্যন্ত কাউকে হত্যা করেনি, কোনো গুলির শব্দও পাওয়া যায়নি। তবে কয়েকজনকে ওদের গাড়িতে তুলেছে। এসব শুনে আমার তো আত্মারাম খাঁচাছাড়া। ভয়ে হাত-পা কাঁপতে শুরু করেছে।
দারোগা, মজনু ও ডল—তিনজনে মিলে আমাকে একজন মুসলমান বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। দারোগা আমাকে বললেন, ‘এখন থেকে আপনার নাম মো. আবদুল হাই, আব্বার নাম মো. আবদুল কাদের, আর দাদার নাম মো. আবদুল হামিদ। বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার বিন্নাফৈর গ্রাম। আপনি গোলাম রহমান ডলের দুলাভাই। আজ থেকে বুয়া রমিজা গোলাম রহমানের বোন এবং আপনার বেগম। আপনারা ঢাকায় বেড়াতে এসে আটকে পড়েছেন।’ ডল তার ডায়েরিতে এগুলো লিখে নিল আমাকে মুখস্থ করাবে বলে। এরপর দারোগা সাহেব বললেন, ‘আপনাকে আয়াত জিজ্ঞেস করতে পারে। তাহলে আপনাকে বলতে হবে, ১. আউজুবিল্লাহি মিনাস্সাইতানির রাহিম, ২। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, ৩। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।’ দারোগা সাহেব আরও বললেন, ‘এর পরও যদি আরও কোনো কিছু জিজ্ঞেস করে তখন শুধু আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর বলতে থাকবেন, তাতেও যদি না মানে, তবে এই শেষ দোয়াটা পাঠ করতে থাকবেন, লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জয়ালিমিন।’ ডল এই আয়াতগুলো ডায়েরিতে লিখে আমাকে উচ্চারণ শেখাতে লাগল। সে যে কী দারুণ অবস্থা! এর মধ্যে মজনু আবার খবর নিয়ে এল, মিলিটারি কাউকে সন্দেহজনক ভাবলে ভীষণ পেটাচ্ছে, তাদের চিৎকার-চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছে। মিলিটারি নাকি ক্রমেই এদিকে আসছে।
এ কথা শুনে কাজের বুয়া রমিজা দুটো রসুন ছেঁচে আমার দুই বগলে দিয়ে বলল, ‘খবরদার এইগুলা যেন পইড়ে না যায়। এখনই আপনার জ্বর আইসা যাইব।’ সে ডলকে বলল, ‘আপনার বন্ধুকে কোনার ঘরের চৌকিতে শোয়াইয়া একটা চাদরে গা ঢাইকা দেন, য্যান মনে হয় ওনার খুব জ্বর হইছে। আমি ওনার মাথায় পানি দিতাছি আর আপনি ওনাকে আয়াত মুখস্থ করান, ভয়ে তো উনি এমনি কাঁপাকাঁপি কইরতাছেন। যদি মিলিটারি আইসে তাইলে ওনাকে আমিই রক্ষা করমু। ওই আয়াতগুলা আমার মুখস্থ আছে।’
এই বলে সত্যি সত্যিই সে আমাকে শুইয়ে দিয়ে চাদর ঢাকা দিল এবং মাথায় পানি ঢালা শুরু করল। রসুনের গুণে আমার গা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। রমিজা আমার কানের কাছে ‘আউজু বিল্লাহ...’ গুন গুন করে ক্রমাগত বলে যাচ্ছে যেন আমার মুখস্থ হয়। এমন সাহসী মেয়ে আমার জীবনে আর দেখি নাই। আমার সে যে কী নিদারুণ অবস্থা, মনে হচ্ছিল এই বোধ হয় মিলিটারি এসে আমাকে ধরে নিয়ে যাবে, প্রতিমুহূর্ত মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করছিলাম। ডল মাঝে মাঝে এসে আমাকে আয়াতগুলোর উচ্চারণ শেখাচ্ছিল আর সাহস দিচ্ছিল।
ডল ও মজনু এই বাইরে যাচ্ছে আবার ভেতরে আসছে, সে এক চরম অস্থির অবস্থা! রাত দুটোর সময় হঠাৎ সব সার্চলাইট নিভে গেল। ডল ও মজনু দৌড়ে বাইরে গেল এবং কিছুক্ষণ পরে ফিরে এসে বলল, ‘আজ আল্লাহ বাঁচাইছে। মিলিটারি চলে গেছে, ওরা মুক্তি খুঁজতে এসেছিল।’ মিলিটারি চলে গেছে শুনে রমিজা আমার কানের কাছে আর একবার দোয়া ইউনুস পাঠ করে আমার বুকে তিনবার ফুঁ দিয়ে বলল, ‘আইজ আল্লাহ আপনারে বাঁচাইছে, আইজ থিকা আপনি মুসলমান, নাম মো. আবদুল হাই। এইটা মনে রাখবেন।’ তারপর পানি ঢালা বন্ধ করে আমাকে বলল, ‘উইঠা বইসেন, রসুনগুলা ফালাইয়া দেন, বাইরে গিয়া গায় হাওয়া-বাতাস লাগান, আর ডর নাই।’
রমিজার কথায় আমি যেন প্রাণ ফিরে পেলাম। সে যে কী স্বস্তি, তা ভাষায় ব্যক্ত করা যাবে না। এক সপ্তাহ পরে আমি বুঝেছিলাম যে আমি কী ভয় পেয়েছিলাম! প্রাণভয়ের চেয়ে বড় ভয় আর কিছু নেই।
সুকুমার চক্রবর্তী: অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ,সোনালী ব্যাংক স্টাফ কলেজ
১০ বছর ধরে নিজের আত্মজীবনী লিখেছেন বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্মাতা আবুল হায়াত। নাম দিয়েছেন ‘রবি পথ’। অবশেষে প্রকাশ হচ্ছে তাঁর আত্মজীবনী। আগামী ২ নভেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজন করা হয়েছে রবি পথের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান।
৩ ঘণ্টা আগেপর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে