উপল বড়ুয়া, ঢাকা
‘নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেত হয়’—পরক্ষণে ফের কবি জীবনানন্দ দাশের সন্দিহান চোখে জানতে চাওয়া, ‘হয় নাকি?’ এ প্রশ্ন যে অমূলক নয়, সেটিই যেন বুঝিয়ে দিলেন পেলে। কিছু মৃত্যু শুধু দৈহিক। কিন্তু যে মানুষ আমৃত্যু বিনোদিত করে এসেছেন, কোটি মানুষকে জুগিয়েছেন বেঁচে থাকার রসদ, তিনি যে অমর!
গত পরশু পেলের দৈহিক মৃত্যু হয়েছে বটে কিন্তু ফুটবলপ্রেমীদের কাছে তিনি অমর, অক্ষয়। আজীবন ভাস্বর হয়ে থাকবেন সবার কাছে। ফুটবল আর পেলে সমার্থক হয়ে গেছে চিরদিনের জন্য। বলতে গেলে, এডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তোর মৃত্যু হয়েছে, পেলের নয়। পেলে এমন এক মিথ, যাঁর মৃত্যু নেই।
১৯৪০ সালে ব্রাজিলের এক বস্তি থেকে উঠে এসে বিশ্ব ফুটবলের সম্রাটের সিংহাসনে বসা মোটেও সহজ ছিল না পেলের জন্য। দারিদ্র্য ও প্রতিপক্ষ যেখানে দমিয়ে রাখতে পারেনি সেখানে আজীবনের এক যোদ্ধাকে হারাতে কী বেগই না পেতে হয়েছে যমদূতকে! বয়স ৮০ পেরিয়ে যাওয়ায় অসুস্থতা জেঁকে বসেছিল শরীরে। বাসা বেঁধেছিল মরণব্যাধি ক্যানসার। কিন্তু একমুহূর্তের জন্যও মুখ থেকে হাসি উবে যায়নি পেলের ঠোঁট থেকে। মৃত্যু কাছে এলে কখনো ডজ দিয়ে ড্রিবল করে বেরিয়ে গেছেন বারবার। গত নভেম্বরের শেষ দিকে রুটিন পরীক্ষায় গিয়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু এবার আর ঘরে ফেরা হয়নি মহারাজার।
বছরের শেষটায় কাঁদিয়ে গেলেন সবাইকে। নভেম্বর আর ডিসেম্বর চিরদিন শোকের মাস হয়ে থাকবে ফুটবল ভক্তদের মনে। দুই বছর আগে ২৫ নভেম্বর শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। ফুটবল ঈশ্বরের মৃত্যুতে পেলে টুইটারে লিখেছিলেন, ‘আশা করি, একদিন স্বর্গে একত্রে ফুটবল খেলব।’ বন্ধুকে ছেড়ে যেন আর থাকতে পারলেন না ফুটবলের রাজা। বল নিয়ে ফের মেতে উঠতে গত বৃহস্পতিবার রাতে দিব্যলোকে পাড়ি দিলেন অমর্ত্যলোকে।
ফুটবলের অসংখ্য রূপকথার জন্ম পেলের পায়ে। বল পায়ে গেলে হয়ে উঠতেন নিখুঁত শিল্পী। আর মাঠকে বানাতেন এক সবুজ ক্যানভাস। পাবলো পিকাসোর মতো রং ছড়িয়ে মূর্ত করে তুলতেন একেকটি কিউবিক ফিগার। পেলের একেকটি ডজ, ড্রিবল, জাগলিং দেখার জন্য মাঠে শুরু হতো হুল্লোড়। শুধু তাঁর খেলা দেখতে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল যুদ্ধ। ১৯৬৯ সালে সান্তোসের হয়ে আফ্রিকা সফরে গিয়েছিলেন পেলে। ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি নাইজেরিয়ার লাগোসে পা রাখার পর দেশটির গৃহযুদ্ধ থেমে গিয়েছিল তিন দিনের জন্য।
ফুটবল ইতিহাসে অসংখ্য ঘটনার প্রথম জন্ম হয়েছিল পেলের পায়ে। রেকর্ড তিনটি বিশ্বকাপ জয়, ১৭ বছর বয়সে বিশ্বকাপে অভিষেকের পর সবচেয়ে কম বয়সে গোল, হ্যাটট্রিক আর ফাইনালে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার সেসব রেকর্ড এখনো টিকে আছে। পেলেকে পরিমাপের জন্য অনেক পরিসংখ্যান-হিসাব হয়তো দেওয়া যায়। কিন্তু তাঁর আগে ফুটবলে শৈল্পিক তুলির আঁচড় আর দেখা যায়নি। মানুষ ফুটবলকে ভালোবাসতে শিখেছে পেলের খেলা দেখে।
১৯৬৫ সালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে আকাশে ভেসে ওভারহেড কিক, ১৯৭০ বিশ্বকাপে উরুগুয়ের বিপক্ষে জাদুকরী ড্রিবলিং, একই বিশ্বকাপে চেকোস্লোভাকিয়ার বিপক্ষে মাঝমাঠ থেকে লম্বা শট কিংবা সুইডেনের বিপক্ষে ১৯৫৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে বল রিসিভের পর চিপ করে ডিফেন্ডারের মাথার ওপর দিয়ে গোল—২১ বছরের ক্যারিয়ারে কী করে দেখাননি পেলে!
একের পর এক চোট পেয়েছেন, তবু থামেননি। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের হাত থেকে বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত পেলেকে ‘জাতীয় সম্পদ’ ঘোষণা করে ব্রাজিল সরকার। ইউরোপের অঢেল অর্থের হাতছানি উপেক্ষা করে ১৮ বছর ধরে সান্তোসের হয়ে খেলে গেছেন তিনি। ক্লাবটির লাতিন আমেরিকার তো বটে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি হিসেবেও গড়ে ওঠা পেলের জাদুতে। হাজার ম্যাচ খেলে হাজার গোল কি চাট্টিখানি কথা! পেলেই সেসব অবিশ্বাস্য সব করে দেখিয়েছেন।
১৯৫০ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠ মারাকানায় ব্রাজিল শিরোপা জিততে না পারায় কেঁদেছিলেন পেলের বাবা দোনদিনহো। যিনি নিজেই ছিলেন একজন ফুটবলার। বাবার দুঃখ দেখে পেলে নামের ৯ বছর বয়সী এক ছেলে বলেছিল, ‘আমি ব্রাজিল ও তোমাকে বিশ্বকাপ এনে দেব’।বিস্ময়বালক থেকে সৌন্দর্যের রূপক হয়ে ওঠা প্রজাপতির মতো পেলে তাঁর কথা রেখেছিলেন পরের ৮ বছরের মধ্যেই।
ফুটবল সম্রাটের বিদায় কাঁদছে ফুটবল, কাঁদছে পুরো বিশ্ব। ব্রাজিল সরকারের ঘোষিত তিন দিনের শোক সে তুলনায় কিছুই নয়। পেলের শেষ বিদায় জানাতে আগামী দুই দিন হাজার হাজার মানুষ ভিড় করবে সান্তোসে, যে ক্লাব ছিল তাঁর কাছে ভালোবাসার আরেক নাম।
‘নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেত হয়’—পরক্ষণে ফের কবি জীবনানন্দ দাশের সন্দিহান চোখে জানতে চাওয়া, ‘হয় নাকি?’ এ প্রশ্ন যে অমূলক নয়, সেটিই যেন বুঝিয়ে দিলেন পেলে। কিছু মৃত্যু শুধু দৈহিক। কিন্তু যে মানুষ আমৃত্যু বিনোদিত করে এসেছেন, কোটি মানুষকে জুগিয়েছেন বেঁচে থাকার রসদ, তিনি যে অমর!
গত পরশু পেলের দৈহিক মৃত্যু হয়েছে বটে কিন্তু ফুটবলপ্রেমীদের কাছে তিনি অমর, অক্ষয়। আজীবন ভাস্বর হয়ে থাকবেন সবার কাছে। ফুটবল আর পেলে সমার্থক হয়ে গেছে চিরদিনের জন্য। বলতে গেলে, এডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তোর মৃত্যু হয়েছে, পেলের নয়। পেলে এমন এক মিথ, যাঁর মৃত্যু নেই।
১৯৪০ সালে ব্রাজিলের এক বস্তি থেকে উঠে এসে বিশ্ব ফুটবলের সম্রাটের সিংহাসনে বসা মোটেও সহজ ছিল না পেলের জন্য। দারিদ্র্য ও প্রতিপক্ষ যেখানে দমিয়ে রাখতে পারেনি সেখানে আজীবনের এক যোদ্ধাকে হারাতে কী বেগই না পেতে হয়েছে যমদূতকে! বয়স ৮০ পেরিয়ে যাওয়ায় অসুস্থতা জেঁকে বসেছিল শরীরে। বাসা বেঁধেছিল মরণব্যাধি ক্যানসার। কিন্তু একমুহূর্তের জন্যও মুখ থেকে হাসি উবে যায়নি পেলের ঠোঁট থেকে। মৃত্যু কাছে এলে কখনো ডজ দিয়ে ড্রিবল করে বেরিয়ে গেছেন বারবার। গত নভেম্বরের শেষ দিকে রুটিন পরীক্ষায় গিয়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু এবার আর ঘরে ফেরা হয়নি মহারাজার।
বছরের শেষটায় কাঁদিয়ে গেলেন সবাইকে। নভেম্বর আর ডিসেম্বর চিরদিন শোকের মাস হয়ে থাকবে ফুটবল ভক্তদের মনে। দুই বছর আগে ২৫ নভেম্বর শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। ফুটবল ঈশ্বরের মৃত্যুতে পেলে টুইটারে লিখেছিলেন, ‘আশা করি, একদিন স্বর্গে একত্রে ফুটবল খেলব।’ বন্ধুকে ছেড়ে যেন আর থাকতে পারলেন না ফুটবলের রাজা। বল নিয়ে ফের মেতে উঠতে গত বৃহস্পতিবার রাতে দিব্যলোকে পাড়ি দিলেন অমর্ত্যলোকে।
ফুটবলের অসংখ্য রূপকথার জন্ম পেলের পায়ে। বল পায়ে গেলে হয়ে উঠতেন নিখুঁত শিল্পী। আর মাঠকে বানাতেন এক সবুজ ক্যানভাস। পাবলো পিকাসোর মতো রং ছড়িয়ে মূর্ত করে তুলতেন একেকটি কিউবিক ফিগার। পেলের একেকটি ডজ, ড্রিবল, জাগলিং দেখার জন্য মাঠে শুরু হতো হুল্লোড়। শুধু তাঁর খেলা দেখতে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল যুদ্ধ। ১৯৬৯ সালে সান্তোসের হয়ে আফ্রিকা সফরে গিয়েছিলেন পেলে। ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি নাইজেরিয়ার লাগোসে পা রাখার পর দেশটির গৃহযুদ্ধ থেমে গিয়েছিল তিন দিনের জন্য।
ফুটবল ইতিহাসে অসংখ্য ঘটনার প্রথম জন্ম হয়েছিল পেলের পায়ে। রেকর্ড তিনটি বিশ্বকাপ জয়, ১৭ বছর বয়সে বিশ্বকাপে অভিষেকের পর সবচেয়ে কম বয়সে গোল, হ্যাটট্রিক আর ফাইনালে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার সেসব রেকর্ড এখনো টিকে আছে। পেলেকে পরিমাপের জন্য অনেক পরিসংখ্যান-হিসাব হয়তো দেওয়া যায়। কিন্তু তাঁর আগে ফুটবলে শৈল্পিক তুলির আঁচড় আর দেখা যায়নি। মানুষ ফুটবলকে ভালোবাসতে শিখেছে পেলের খেলা দেখে।
১৯৬৫ সালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে আকাশে ভেসে ওভারহেড কিক, ১৯৭০ বিশ্বকাপে উরুগুয়ের বিপক্ষে জাদুকরী ড্রিবলিং, একই বিশ্বকাপে চেকোস্লোভাকিয়ার বিপক্ষে মাঝমাঠ থেকে লম্বা শট কিংবা সুইডেনের বিপক্ষে ১৯৫৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে বল রিসিভের পর চিপ করে ডিফেন্ডারের মাথার ওপর দিয়ে গোল—২১ বছরের ক্যারিয়ারে কী করে দেখাননি পেলে!
একের পর এক চোট পেয়েছেন, তবু থামেননি। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের হাত থেকে বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত পেলেকে ‘জাতীয় সম্পদ’ ঘোষণা করে ব্রাজিল সরকার। ইউরোপের অঢেল অর্থের হাতছানি উপেক্ষা করে ১৮ বছর ধরে সান্তোসের হয়ে খেলে গেছেন তিনি। ক্লাবটির লাতিন আমেরিকার তো বটে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি হিসেবেও গড়ে ওঠা পেলের জাদুতে। হাজার ম্যাচ খেলে হাজার গোল কি চাট্টিখানি কথা! পেলেই সেসব অবিশ্বাস্য সব করে দেখিয়েছেন।
১৯৫০ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠ মারাকানায় ব্রাজিল শিরোপা জিততে না পারায় কেঁদেছিলেন পেলের বাবা দোনদিনহো। যিনি নিজেই ছিলেন একজন ফুটবলার। বাবার দুঃখ দেখে পেলে নামের ৯ বছর বয়সী এক ছেলে বলেছিল, ‘আমি ব্রাজিল ও তোমাকে বিশ্বকাপ এনে দেব’।বিস্ময়বালক থেকে সৌন্দর্যের রূপক হয়ে ওঠা প্রজাপতির মতো পেলে তাঁর কথা রেখেছিলেন পরের ৮ বছরের মধ্যেই।
ফুটবল সম্রাটের বিদায় কাঁদছে ফুটবল, কাঁদছে পুরো বিশ্ব। ব্রাজিল সরকারের ঘোষিত তিন দিনের শোক সে তুলনায় কিছুই নয়। পেলের শেষ বিদায় জানাতে আগামী দুই দিন হাজার হাজার মানুষ ভিড় করবে সান্তোসে, যে ক্লাব ছিল তাঁর কাছে ভালোবাসার আরেক নাম।
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে