সাইফুল মাসুম, ঢাকা
‘ওয়াসার বৈধ লাইনে আমরা পানি পাই না। রাতে অবৈধ লাইনের খুবই সামান্য পানি সংগ্রহ করি। ওই সময় আমাদের মেয়েদের নানা রকম হয়রানি-সহিংসতার শিকার হতে হয়। এসব বললে ভুক্তভোগীকেই সামাজিকভাবে দোষারোপ করা হয়। তাই এ নিয়ে কিছু বলি না।’ এমন মন্তব্য রাজধানীর কড়াইল বস্তির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারীর। সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি এসব তথ্য দিয়েছেন বলে জানান।
গতকাল সোমবার ওই বস্তিতে গেলে বউ বাজারসংলগ্ন ক-ব্লকের আরেক নারী বলেন, ‘সমস্যা তো আছেই। থাকলেই কী! ওগুলা কেউ আইসা দেখে? আর বইলাও শুধু শুধু মানুষের কাছে কালারিং হওয়া। লজ্জার ভয়ে কেউ তো আর ওইসব কইতে চায় না।’
পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে বস্তির ৫ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার হন বলে তথ্য মিলেছে বেসরকারি সংস্থা ডরপের এক সমীক্ষায়। রাজধানীর কড়াইল ও রসুলপুর এলাকা থেকে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সম্প্রতি এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। সমীক্ষার তথ্যমতে, সাধারণত যেসব নারী দরিদ্র, নিরক্ষর বা যাঁদের বাড়িতে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা নেই, হয়রানির শিকার হওয়ার ঝুঁকি তাঁদেরই বেশি। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৪ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতা যৌন হয়রানির প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।
বনানী থানার ওসি নুরে আযম মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘থানায় কেউ অভিযোগ জানালে আমরা অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। কড়াইলে আইন-শৃঙ্খলার বিষয় নিয়ে মাঝেমধ্যে মিটিং করি। সমাজে সবাই যাতে ভালো থাকে সে বিষয়ে তৎপর আছি।’
১৩ বছর ধরে মোহাম্মদপুরের সোনা মিয়ার টেক বস্তিতে বসবাস করেন আনোয়ারা বেগম (৪২)। ২৬ অক্টোবর তিনি বলেন, ‘পানি জোগাড় করতে প্রতিদিন মারামারি করতে হয়। কলসে করে পানি এনে ড্রামে জমিয়ে রাখি। মাঝেমধ্যে পানির জন্য রান্না, বাথরুম বন্ধ হয়ে যায়।’
ওই বস্তির কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গভীর নলকূপের মাধ্যমে ব্যক্তি উদ্যোগে জেনারেটর দিয়ে তোলা পানি দিনে দুবার সরবরাহ করা হয় সোনা মিয়ার টেক বস্তিতে। এর জন্য বস্তির মানুষদের অনেক বেশি দাম পরিশোধ করতে হয়। তারপরও প্রয়োজনমতো পানি মেলে না। বছরের পর বছর ধরে এই বস্তিতে পানির এমন সংকট। এতে চরম ভোগান্তিতে আছে বস্তির দুই শতাধিক পরিবার।
একই অবস্থা রাজধানীর অধিকাংশ বস্তির। নগরের অর্ধেকের মতো বস্তিতে ঢাকা ওয়াসা পানি সরবরাহ করলেও তা অপ্রতুল।হাজারীবাগ বস্তির হোসনে আরা রাফেজা গত বুধবার বলেন, চাপকল থেকে পানি নিয়ে বিক্রি করা হয় বস্তিতে। কিন্তু এত মানুষের ভিড় থাকে যে প্রয়োজনমতো পানি নিতে পারি না।
যদিও ঢাকা ওয়াসার দাবি, ৬০ শতাংশ বস্তি এলাকায় তারা পানি সরবরাহ করছে। ২০২৩ সালের মধ্যে ঢাকার নিম্ন আয়ের বসতি এলাকায় শতভাগ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যমাত্রা সংস্থাটির। ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) এ কে এম শহীদ উদ্দিন অবশ্য সব বস্তিতে পানির লাইন না দেওয়ার জন্য দুষলেন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন রাস্তা কাটার অনুমতি দিলে এ বছরই সব বস্তিতে পানির লাইন দেব। রাস্তা কাটতে না দিলে ওপরওয়ালা জানে, কবে শেষ হবে বস্তিতে পানি সরবরাহের কাজ।’
কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ)-এর নির্বাহী পরিচালক খোন্দকার রেবেকা সান ইয়াত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকার ৫০ শতাংশ বস্তিতে বৈধ পানি নেই। কিছু বস্তিতে পানির লাইন আছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। ওয়াসার পুরোনো লাইনের কারণে পানির অবস্থা খুবই খারাপ। অনেকে মসজিদ-মাদ্রাসা বা অন্য জায়গা থেকে পানি কিনে ব্যবহার করে। বস্তিবাসীকে চড়া দামে পানি কিনতে হয়।
ঢাকা ওয়াসা ২০১৬ সালের মধ্যে ঢাকার শতভাগ বস্তি এলাকায় পানি সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এখন বলা হচ্ছে ২০২৩ সালের মধ্যে ঢাকার সব বস্তি ওয়াসার সুপেয় পানির আওতায় আসবে।
বেসরকারি হিসাবে, ঢাকায় ৫ সহস্রাধিক বস্তিতে ৪০ লাখের বেশি মানুষের বসবাস।
লজ্জা, ট্রমায় সংকটে ভুক্তভোগীরা
ডরপের গবেষণা পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পানির সুবিধা, গোসল ও টয়লেট সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার বস্তির নারীরা। ভুক্তভোগীরা লজ্জা, ট্রমা, অবাঞ্ছিত গর্ভধারণসহ নানা সামাজিক সংকটে পড়েন। কম দামে বড়লোক ওয়াসার পানি পাবে, আর গরিবেরা হাহাকার করবে, এটা তো ঠিক না।’ তাঁর মতে, পানির প্রাপ্যতা, গুণগতমান ও ক্রয়ক্ষমতা নিশ্চিত করা গেলে বস্তিবাসী পানির অধিকার পাবে।
‘ওয়াসার বৈধ লাইনে আমরা পানি পাই না। রাতে অবৈধ লাইনের খুবই সামান্য পানি সংগ্রহ করি। ওই সময় আমাদের মেয়েদের নানা রকম হয়রানি-সহিংসতার শিকার হতে হয়। এসব বললে ভুক্তভোগীকেই সামাজিকভাবে দোষারোপ করা হয়। তাই এ নিয়ে কিছু বলি না।’ এমন মন্তব্য রাজধানীর কড়াইল বস্তির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারীর। সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি এসব তথ্য দিয়েছেন বলে জানান।
গতকাল সোমবার ওই বস্তিতে গেলে বউ বাজারসংলগ্ন ক-ব্লকের আরেক নারী বলেন, ‘সমস্যা তো আছেই। থাকলেই কী! ওগুলা কেউ আইসা দেখে? আর বইলাও শুধু শুধু মানুষের কাছে কালারিং হওয়া। লজ্জার ভয়ে কেউ তো আর ওইসব কইতে চায় না।’
পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে বস্তির ৫ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার হন বলে তথ্য মিলেছে বেসরকারি সংস্থা ডরপের এক সমীক্ষায়। রাজধানীর কড়াইল ও রসুলপুর এলাকা থেকে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সম্প্রতি এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। সমীক্ষার তথ্যমতে, সাধারণত যেসব নারী দরিদ্র, নিরক্ষর বা যাঁদের বাড়িতে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা নেই, হয়রানির শিকার হওয়ার ঝুঁকি তাঁদেরই বেশি। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৪ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতা যৌন হয়রানির প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।
বনানী থানার ওসি নুরে আযম মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘থানায় কেউ অভিযোগ জানালে আমরা অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। কড়াইলে আইন-শৃঙ্খলার বিষয় নিয়ে মাঝেমধ্যে মিটিং করি। সমাজে সবাই যাতে ভালো থাকে সে বিষয়ে তৎপর আছি।’
১৩ বছর ধরে মোহাম্মদপুরের সোনা মিয়ার টেক বস্তিতে বসবাস করেন আনোয়ারা বেগম (৪২)। ২৬ অক্টোবর তিনি বলেন, ‘পানি জোগাড় করতে প্রতিদিন মারামারি করতে হয়। কলসে করে পানি এনে ড্রামে জমিয়ে রাখি। মাঝেমধ্যে পানির জন্য রান্না, বাথরুম বন্ধ হয়ে যায়।’
ওই বস্তির কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গভীর নলকূপের মাধ্যমে ব্যক্তি উদ্যোগে জেনারেটর দিয়ে তোলা পানি দিনে দুবার সরবরাহ করা হয় সোনা মিয়ার টেক বস্তিতে। এর জন্য বস্তির মানুষদের অনেক বেশি দাম পরিশোধ করতে হয়। তারপরও প্রয়োজনমতো পানি মেলে না। বছরের পর বছর ধরে এই বস্তিতে পানির এমন সংকট। এতে চরম ভোগান্তিতে আছে বস্তির দুই শতাধিক পরিবার।
একই অবস্থা রাজধানীর অধিকাংশ বস্তির। নগরের অর্ধেকের মতো বস্তিতে ঢাকা ওয়াসা পানি সরবরাহ করলেও তা অপ্রতুল।হাজারীবাগ বস্তির হোসনে আরা রাফেজা গত বুধবার বলেন, চাপকল থেকে পানি নিয়ে বিক্রি করা হয় বস্তিতে। কিন্তু এত মানুষের ভিড় থাকে যে প্রয়োজনমতো পানি নিতে পারি না।
যদিও ঢাকা ওয়াসার দাবি, ৬০ শতাংশ বস্তি এলাকায় তারা পানি সরবরাহ করছে। ২০২৩ সালের মধ্যে ঢাকার নিম্ন আয়ের বসতি এলাকায় শতভাগ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যমাত্রা সংস্থাটির। ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) এ কে এম শহীদ উদ্দিন অবশ্য সব বস্তিতে পানির লাইন না দেওয়ার জন্য দুষলেন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন রাস্তা কাটার অনুমতি দিলে এ বছরই সব বস্তিতে পানির লাইন দেব। রাস্তা কাটতে না দিলে ওপরওয়ালা জানে, কবে শেষ হবে বস্তিতে পানি সরবরাহের কাজ।’
কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ)-এর নির্বাহী পরিচালক খোন্দকার রেবেকা সান ইয়াত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকার ৫০ শতাংশ বস্তিতে বৈধ পানি নেই। কিছু বস্তিতে পানির লাইন আছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। ওয়াসার পুরোনো লাইনের কারণে পানির অবস্থা খুবই খারাপ। অনেকে মসজিদ-মাদ্রাসা বা অন্য জায়গা থেকে পানি কিনে ব্যবহার করে। বস্তিবাসীকে চড়া দামে পানি কিনতে হয়।
ঢাকা ওয়াসা ২০১৬ সালের মধ্যে ঢাকার শতভাগ বস্তি এলাকায় পানি সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এখন বলা হচ্ছে ২০২৩ সালের মধ্যে ঢাকার সব বস্তি ওয়াসার সুপেয় পানির আওতায় আসবে।
বেসরকারি হিসাবে, ঢাকায় ৫ সহস্রাধিক বস্তিতে ৪০ লাখের বেশি মানুষের বসবাস।
লজ্জা, ট্রমায় সংকটে ভুক্তভোগীরা
ডরপের গবেষণা পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পানির সুবিধা, গোসল ও টয়লেট সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার বস্তির নারীরা। ভুক্তভোগীরা লজ্জা, ট্রমা, অবাঞ্ছিত গর্ভধারণসহ নানা সামাজিক সংকটে পড়েন। কম দামে বড়লোক ওয়াসার পানি পাবে, আর গরিবেরা হাহাকার করবে, এটা তো ঠিক না।’ তাঁর মতে, পানির প্রাপ্যতা, গুণগতমান ও ক্রয়ক্ষমতা নিশ্চিত করা গেলে বস্তিবাসী পানির অধিকার পাবে।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে