Ajker Patrika

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম: বাধার মুখে বন্ধ সেতুর কাজ

মো. ফরিদ রায়হান, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) 
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম: বাধার মুখে বন্ধ সেতুর কাজ

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায় মেঘনা নদীতে নির্মাণাধীন বাঙ্গালপাড়া-চাতলপাড় সেতুর কাজ এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। জমি অধিগ্রহণের টাকা না পাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা সেতুর কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। 

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইন উপজেলার সঙ্গে বারো মাস সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হবে এ সেতুর মাধ্যমে। 

জানা গেছে, অষ্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার মধ্যবর্তী মেঘনা নদীতে এক হাজার মিটার সেতু নির্মাণের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কিশোরগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

হাওরাঞ্চলের সঙ্গে বারো মাস সারা দেশের যোগাযোগ স্থাপনে চলতি বছরের জানুয়ারিতে নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রকল্পটির কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। ২০২৫ সালের অক্টোবরে সেতুটি হস্তান্তরের কথা রয়েছে। 

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর নোয়াগাঁও প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে রড, পাওয়ার পাম্প, পাথরসহ নির্মাণসামগ্রী। কোনো শ্রমিক বা কর্মযজ্ঞ নেই। রডের তৈরি পাইলিংয়ের খাঁচায় মরিচা ধরেছে। 

জানা গেছে, জানুয়ারি থেকে সেতুর অষ্টগ্রাম প্রান্তে ২ থেকে ৭ নম্বর পিলার পর্যন্ত ছয়টি পিলারের ৪৫টির পাইলিং সম্পন্ন হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর ১ নম্বর পিলারে পাইলিং শুরু করলে স্থানীয় জমির মালিকেরা কাজে বাধা দেন। পরে বাধ্য হয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে দেয়। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাওরের প্রবেশদ্বারখ্যাত এই সেতু নির্মাণে কিশোরগঞ্জ অংশে সংযোগ সড়কসহ ২৫০ মিটার জমি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর প্রান্তে প্রায় ৪৫০ মিটার জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। 

মো. হাবিব নামের জমির এক মালিক বলেন, ‘সেতুর জন্য জমি দিতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে আমাদের জমির ন্যায্য দাম যে পাব, সেই নিশ্চয়তা চাই। আমার ৩০ শতাংশ জমি নিয়ে যাচ্ছে, বিনিময়ে কী পাব? কিছুই জানি না, তাই বাধা দিয়েছি।’ 

মেমরাজ বেগম বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। কাজ করে খাই। সেতুর জন্য আমার বসতভিটা নিয়ে গেলে থাকব কোথায়?’ 

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের প্রকল্পের প্রকৌশলী মোহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘ইতিমধ্যে অনেক পাইলের কাজ শেষ করেছি। জমি অধিগ্রহণ সমস্যায় স্থানীয়দের বাধার কারণে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। এভাবে কাজ বন্ধ থাকলে যথাসময়ে হস্তান্তর করা সম্ভব না-ও হতে পারে।’ 

কিশোরগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রাথমিক জরিপ করা হয়েছিল। সে সময় জমির মালিকেরা বাধা দেন। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হলে তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য পাবেন। আমরা সমস্যা সমাধানের জন্য আবারও উদ্যোগ নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত