Ajker Patrika

গোপনে দুই পদে নিয়োগ নেপথ্যে সভাপতির স্বামী?

বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
গোপনে দুই পদে নিয়োগ নেপথ্যে সভাপতির স্বামী?

বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাউনিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে গোপনে অফিস সহায়ক (পিয়ন) এবং আয়া নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক ও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। নিয়োগ প্রক্রিয়াটি স্কুলের অন্য শিক্ষক ও কমিটির অনেক সদস্যের অজান্তেই হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই দুজন টাকার বিনিময়ে গোপনে নিয়োগের সব প্রক্রিয়া শেষ করেছেন।

জানা গেছে, গত ৭ নভেম্বর গোপনেই নিয়োগ বোর্ড করে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। পরীক্ষায় মোট নয়জন সাজানো প্রার্থী অংশ নেন। ওই নিয়োগে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রওশন আরা নোমানের স্বামী মিনার খানের পছন্দের দুই প্রার্থীকে চূড়ান্তভাবে বাছাই করা হয়। নিয়োগের আগে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার কাজও গোপনে করা হয়েছে। এমনকি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নোটিশও বিদ্যালয়ে টাঙানো হয়নি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে ব্যবস্থাপনা কমিটির অনেক সদস্যই জানেন না।

কাউনিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক বারেক মোল্লা বলেন, ‘স্কুলের নিয়োগের বিষয়ে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। শুনেছি সভাপতি এসে নিয়োগ দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাকে বলেন, কোনো নিয়োগ হয়নি।’ বারেক মোল্লা বলেন, ‘সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মিলে সবকিছু করেন। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সাবেক সভাপতির (বর্তমান সভাপতির স্বামী মিনার খান) ভালো সম্পর্ক। প্রধান শিক্ষক আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এ জন্য চাকরির স্বার্থে এসব বিষয়ে কেউ মুখ খোলেন না। এমনকি এক শিক্ষিকার বিএড স্কেল করানোর জন্য প্রধান শিক্ষক এক লাখ টাকাও নিয়েছেন।’

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নারী শিক্ষক প্রতিনিধি কাজল রেখা ও কৃষি বিষয়ের শিক্ষক মো. ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা সাধারণ শিক্ষক। আমাদের স্কুলে যে নিয়োগ হয়েছে, সেটাই আমরা জানি না। সভাপতি আর প্রধান শিক্ষক কী করেছেন, সে বিষয়ে আমরা কিছু জানতে পারিনি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি টাকার বিনিময়ে রাতের অন্ধকারে নিয়োগ দিয়েছেন। তাঁরা কাউকে বিষয়টি জানতে দেননি। স্কুলের সাবেক সভাপতি মিনার খান তাঁর মেয়াদ শেষে তাঁর স্ত্রীকে সভাপতি বানিয়েছেন। কাগজে-কলমে স্ত্রী সভাপতি হলেও তিনিই মূলত স্কুল নিয়ন্ত্রণ করছেন। তিনি আর তাঁর ভাইয়েরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু বলতে পারে না।’

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘স্কুলের সভাপতির স্বামী মিনার খান আমাকে কাগজে যেখানে যেখানে স্বাক্ষর করতে বলেছেন, আমি সেখানে স্বাক্ষর করেছি। নিয়োগের সব কাগজপত্র ও ডকুমেন্ট তাঁর কাছে আছে। এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে পারব না।’

নিয়োগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও বর্তমান সভাপতি রওশন আরা নোমানের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তবে তাঁর স্বামী মিনার খান বলেন, ‘স্কুল সভাপতির সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাতে আপনাদের সমস্যা কোথায়? নিয়োগের বিষয়ে আপনাদের বলতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুর রহমান বলেন, ওই বিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগে কোনো অনিয়ম হলে তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত