বিভুরঞ্জন সরকার
আজকের পত্রিকা: ভারত কি এক জাতির দেশ?
কাকলী সাহা: এককথায় উত্তর হলো, না। ভারতের বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার এক জাতিতত্ত্বের আদর্শ প্রচার করলেও মনে রাখতে হবে, ভারতবর্ষ একটি জাতি ও সম্প্রদায়ের দেশ নয়; বরং বহু জাতীয় জনসমাজ সহযোগে এ দেশ গঠিত। এর মধ্যে হিন্দু ও মুসলিম দুটি প্রধান সম্প্রদায়, এ ছাড়া সেখানে বহু ভাষাভাষী মানুষের বসবাস। সেখানে এ ধরনের মনোভাব পোষণ করা যে কেবল অবাস্তব বা অবান্তর তা নয়, এতে সর্বনাশ ঘটে যাবে। এযাবৎকাল অবধি ধর্মের দোহাই দিয়ে ভারতে দাঙ্গা হয়েছে বারবার, ভাবগত দাঙ্গারও উদাহরণ কম নেই।
আজকের পত্রিকা: মণিপুর রাজ্য হঠাৎ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠল কেন?
কাকলী সাহা: এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমাকে একটু পেছনে যেতে হবে। ১৮২৪ সালে তৎকালীন বার্মার আসাম আক্রমণ থেকে নিষ্কৃতি পেতে মণিপুর রাজ গম্ভীর সিং ব্রিটিশ সাহায্য চাইলে তৎকালীন ভারতের গভর্নর জেনারেল উইলিয়াম আমহার্স্টের নেতৃত্বে প্রথম অ্যাংলো-বার্মা যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে মণিপুর ভারতের একটি দেশীয় রাজ্য হিসেবে অঙ্গীভূত হয়।
১৯৪৭ সালে মণিপুর স্বাধীন রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশের ইচ্ছা প্রকাশ করে। পার্শ্ববর্তী বার্মার আগ্রাসী মনোভাবে ১৯৪৯ সালে রাজা বোধচন্দ্র সিং ভারত অন্তর্ভুক্তির সম্মতিপত্রে সই করেন। ১৯৫৬ সালে এটি কেন্দ্রশাসিত রাজ্য হয়। ১৯৭২ সালে তা পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পায়।
মণিপুরে তিন গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের বাস: বিষ্ণুপ্রিয়া, মেইতেই ও পাঙাল। মণিপুরে গন্ধর্বদের পরে আর্য-ক্ষত্রিয়দের শাসন শুরু হয়। অর্জুনের বংশধর বক্রবাহন ক্ষত্রিয় বংশী এবং বিষ্ণুর উপাসক বলে তাদের বিষ্ণুপ্রিয়া বলা হয়। মোঙ্গলীয় তিব্বতিবর্মী-পরিবারের কুকি-চীন গোত্রভুক্ত মেইতেইরা দশম-ত্রয়োদশ শতাব্দীর কোনো এক সময় চীন থেকে মণিপুরে প্রবেশ করে। তারা মণিপুরের উত্তরে অবস্থিত কবরু পর্বতে উপনিবেশ স্থাপন করে। মেইতেই মণিপুরিরা বিষ্ণুর উপাসক বিষ্ণুপ্রিয়া ও মেইতেইরা সনাতন বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত বলে পেঁয়াজ, রসুন ও মাংস খায় না। মা মেইতেই ও পিতা পাঠান মুসলিম বংশোদ্ভূত সম্প্রদায়কে পাঙাল জাতি বলে। তাদের মণিপুরি মুসলিমও বলা হয়। তারা মায়ের ভাষায় কথা বলে এবং পিতার ইসলাম ধর্ম পালন করে। তারা পেঁয়াজ, রসুন ও মাংসভোজী। সনাতনধর্মী মণিপুরিরা সাধারণত সাংস্কৃতিক জাতি হিসেবে উদারপন্থী। তাদের নারী-পুরুষদের মধ্যে মানববন্ধনে যুবক-যুবতী, নারী-পুরুষ একসঙ্গে খেলাধুলা, গান-বাজনা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্বাভাবিক চলাফেরা এবং মেলামেশায় অভ্যস্ত। তাদের ছেলেমেয়ে, নারী-পুরুষ সবাই নৃত্যগীতে অংশ নেয়। পাঙাল সম্প্রদায়ের নারীরা ইসলামিক শরিয়ত অনুসরণ করার চেষ্টা করেন।
আজকের পত্রিকা: জাতিগত সহিংসতার মূল কারণ কী?
কাকলী সাহা: জাতিগত হিংসা উত্তর-পূর্ব ভারতের ছোট রাজ্য মণিপুরকে ঘিরে ফেলেছে। একে অনেকেই গৃহযুদ্ধের রাজ্য হিসেবে অভিহিত করেছে। এই রাজ্যের দুটি বৃহৎ গোষ্ঠী—সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই ও সংখ্যালঘু কুকির মধ্যে ক্রমাগত সমস্যা বাড়ছে। জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া মণিপুরের কুকি-অধ্যুষিত জেলায় প্রচুর পরিমাণে পেট্রোলিয়াম মজুত এবং অন্যান্য খনিজ খুঁজে পেয়েছে। কুকি সম্প্রদায়ের মানুষের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অভিযোগ, মেইতেইদের দখলে থাকা সবকিছু সরকার কেড়ে নিতে চায়।
হঠাৎই মেইতেইরা সরকারিভাবে নিজেদের উপজাতি ঘোষণার দাবি জানায়। এই দাবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে শুরু করে কুকিরা। এরপরই উত্তেজনা বেড়ে যায়। মেইতেইদের এই দাবির বিপক্ষে কুকি সম্প্রদায়ের প্রধান যুক্তি ছিল, সরকার ও সমাজের ওপর মেইতেইদের ইতিমধ্যেই শক্তিশালী প্রভাবকে আরও জোরদার করবে তাদের উপজাতি স্ট্যাটাস। তাদের উপজাতি হিসেবে ঘোষণা করলে সেটা তাদের কুকিপ্রধান অঞ্চলে বসতি স্থাপনের বা জমি কেনার সুযোগ দেবে।
মে মাসে শুরু হওয়া হিংসার ঘটনায় কমপক্ষে ১৩০ জন নিহত ও প্রায় ৪০০ জন আহত হয়েছে। সেনাবাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী এই হিংসা দমন করতে লড়াই করছে। ফলে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ ঘরছাড়া হতে বাধ্য হয়েছে। পুলিশের অস্ত্রাগার লুট হয়েছে। শতাধিক গির্জা, এক ডজনের বেশি মন্দির ধ্বংস ও বহু গ্রামে আক্রমণ হয়েছে।
মর্মান্তিক ঘটনা হলো, মেইতেই পুরুষদের হাতে দুই কুকি নারীকে নগ্ন করে সবার সামনে প্যারেড করানো এবং তার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া। আসলে উচ্ছেদ অভিযান আদিবাসীদের মধ্যে প্রবল বিক্ষোভের জন্ম দেয়। ১১ এপ্রিল ইম্ফলের উপজাতি অঞ্চলে তিনটি গির্জার ‘অবৈধ নির্মাণ’ ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি নিউ লামকা শহরে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে জনতা সভাস্থল জ্বালিয়ে দেয়।
আজকের পত্রিকা: এরই মধ্যে আবার হরিয়ানা অশান্ত হয়ে উঠল কেন?
কাকলী সাহা: একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের জেরে সেখানে তিনজনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। বাস, বাইক ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা সামনে আসে। পুলিশ সূত্রের খবর, নুহতে দুটি মসজিদ লক্ষ্য করে আগুন ধরানো বোতল নিক্ষেপ করা হয়। অশান্তি ঠেকাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই পুলিশ সদস্য সজ্জন সিং ও সন্দীপ কুমারের।
বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল নুহতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্রিজ মণ্ডলের জলাভিষেক যাত্রাকে সামনে রেখে। বজরং দলের তরফে মনু মানেসর সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তেজনা ছড়ানোর মতো কথা বলেন। তাঁর কথা শুনে কিছু মানুষ তপ্ত হয়ে ওঠে এবং সেই থেকেই অশান্তি শুরু। এদিকে এই মনুর বিষয়ে কিছু জানেন না বলেই জানিয়েছেন রাজ্যর মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর! যদিও হরিয়ানার একাধিক পুলিশকর্তা দাবি করেছেন, মনু সেদিনের নির্ধারিত মিছিলের আগে ভিডিওগুলো ছড়িয়েছিলেন, আর তাতেই ঘটনা নিয়ন্ত্রণের
বাইরে চলে যায়।
আজকের পত্রিকা: এক জাতিতত্ত্বের প্রচারণায় ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কি?
কাকলী সাহা: দেখে নেওয়া প্রয়োজন, এক জাতিতত্ত্ব এই বহু ভাষাভাষী এবং বিবিধ ধর্মের ভারতবর্ষে এল কোথা থেকে? এই ভাবনার উৎসই-বা কী? আমরা জানি, ১৯৩৮ সালে অ্যাডলফ হিটলার এক জাতি, এক রাষ্ট্র এবং এক নেতা এই স্লোগানে জার্মানি ও অস্ট্রিয়াকে একীভূত করেন। অ্যাডলফ হিটলার একজন জার্মান রাজনীতিবিদ এবং নাৎসি পার্টির নেতা ছিলেন।
ভারতবর্ষে কেউ কেউ আবার এই এক জাতিতত্ত্বের বিপক্ষে দাঁড়াতে গিয়ে দ্বিজাতিতত্ত্বের যুক্তিও খাড়া করতে পিছপা হননি। ১৯৪০ সালের মার্চ মাসে পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে দ্বিজাতিতত্ত্বের ঘোষণা দেওয়া হয়।
দ্বিজাতিতত্ত্ব হলো এমন একটি মতাদর্শ, যেখানে ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের প্রাথমিকভাবে কেবল তাদের ধর্মের ভিত্তিতে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতীয় মুসলমান এবং হিন্দু দুটি স্বতন্ত্র সম্প্রদায়ের পরিচয় দেওয়া হয়েছে, যেখানে ভাষা, বর্ণ এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের তুলনায় ধর্মকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। পাকিস্তান আন্দোলন এবং ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের অন্যতম কারণ ছিল এই দ্বিজাতিতত্ত্ব।
দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে জিন্নাহ আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের দাবি তুলে ধরে এটাও বলেছিলেন, ‘একই রাষ্ট্রে দুটি জাতিকে বেঁধে রাখলে সেই জাতিদ্বয়ের মধ্যে যদি একটি সংখ্যালঘু এবং অপরটি সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়, তাহলে কালক্রমে তা থেকে অসন্তোষ বৃদ্ধি পাবে এবং শাসনব্যবস্থা একদিন ভেঙে পড়বে।’
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর আশঙ্কা যে ভ্রান্ত ছিল না, এর প্রমাণ মেলে ১৯৭১-এ স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের মধ্য দিয়েই। পূর্ব বাংলায় নিজেদের ক্ষমতা কায়েম রাখতে পাকিস্তান একের পর এক স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করে এবং পূর্ব বাংলার মানুষের ওপর নেমে আসে অকথ্য অত্যাচার, গণহত্যা। পূর্ব বাংলার মানুষ দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়। ফলস্বরূপ বিদ্রোহের আগুন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ত্রিশ লাখ মানুষের আত্মদান, বিপুলসংখ্যক মানুষের অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্ভোগ এবং তিন লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে অবশেষে ১৯৭১-এ স্বাধীন বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করে।
আজকের পত্রিকা: পরিত্রাণের কোনো উপায় দেখেন?
কাকলী সাহা: জাতীয় জনসমাজের প্রধান উপাদানগুলো হলো, ভৌগোলিক সান্নিধ্য, বংশগত ঐক্য, ভাষাগত ঐক্য, ধর্মগত ঐক্য, রাজনৈতিক ঐক্য, অর্থনৈতিক সমস্বার্থ ও ভাবগত উপাদান।
জাতীয়তাবাদের মহান আদর্শ গণতান্ত্রিক ধ্যানধারণার অনুপন্থী হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষকে মুক্তিসংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছে। এই আদর্শ জাতিকে আত্মপ্রত্যয়ের যেমন শিক্ষা দেয়, তেমনি সমস্ত ক্ষুদ্রতা ও সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রেরণা জোগায়। বন্তুত আদর্শ জাতীয়তাবাদ ‘নিজে বাঁচো, অপরকে বাঁচতে দাও’ এই সুমহান আদর্শ প্রচার করে বিশ্বসভ্যতার প্রগতির পথ উন্মুক্ত করেছে। কিন্তু উগ্র জাতীয়তাবোধ জাত্যভিমান সৃষ্টি করে সভ্যতার সংকট ডেকে আনে।
তবে আন্তর্জাতিকতাবাদ উগ্র জাতীয়তাবাদের হাত থেকে বিশ্বসভ্যতা রক্ষা করে। পৃথিবীর সভ্য জাতিগুলোর সমৃদ্ধি ও উন্নতি এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে। বিশ্বশান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ব রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিকতাবাদের প্রয়োজন।
জাতীয়তাবাদ হলো জাতির প্রতি ভালোবাসা। দেশের মানুষকে আপন করে নেওয়ার মানসিকতা। এটি একটি মহৎ রাজনৈতিক আদর্শ।
পরাধীন জাতিকে শৃঙ্খলমোচনের সংগ্রামে এই আদর্শ প্রেরণা দিয়েছে। জাতীয় ঐক্য সাধনের ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদের কোনো বিকল্প নেই। প্রকৃত জাতীয়তাবাদ সভ্যতার শত্রু নয়।
আন্তর্জাতিকতাবাদ হলো একটি ভাবগত বা মানসিক অনুভূতি। এই অনুভূতির জন্য ব্যক্তি নিজেকে নিজ রাষ্ট্রের নাগরিক ভাবার পাশাপাশি বিশ্ব নাগরিক হিসেবেও ভাবতে শেখে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো সাম্য ও সহযোগিতার ভিত্তিতে এক প্রীতিপূর্ণ বিশ্বসমাজের প্রতিষ্ঠা।
রাষ্ট্রের প্রধান উপাদান চারটি—জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব। কিন্তু জাতিগঠনের মূল উপাদান জাতীয় জনসমাজের মধ্যে গভীর ঐক্যবোধ ও রাজনৈতিক চেতনা।
এই চেতনার যথাযথ বিকাশই পারে জাতিগত বিদ্বেষের সমাপ্তি ঘটাতে।
আজকের পত্রিকা: ভারত কি এক জাতির দেশ?
কাকলী সাহা: এককথায় উত্তর হলো, না। ভারতের বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার এক জাতিতত্ত্বের আদর্শ প্রচার করলেও মনে রাখতে হবে, ভারতবর্ষ একটি জাতি ও সম্প্রদায়ের দেশ নয়; বরং বহু জাতীয় জনসমাজ সহযোগে এ দেশ গঠিত। এর মধ্যে হিন্দু ও মুসলিম দুটি প্রধান সম্প্রদায়, এ ছাড়া সেখানে বহু ভাষাভাষী মানুষের বসবাস। সেখানে এ ধরনের মনোভাব পোষণ করা যে কেবল অবাস্তব বা অবান্তর তা নয়, এতে সর্বনাশ ঘটে যাবে। এযাবৎকাল অবধি ধর্মের দোহাই দিয়ে ভারতে দাঙ্গা হয়েছে বারবার, ভাবগত দাঙ্গারও উদাহরণ কম নেই।
আজকের পত্রিকা: মণিপুর রাজ্য হঠাৎ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠল কেন?
কাকলী সাহা: এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমাকে একটু পেছনে যেতে হবে। ১৮২৪ সালে তৎকালীন বার্মার আসাম আক্রমণ থেকে নিষ্কৃতি পেতে মণিপুর রাজ গম্ভীর সিং ব্রিটিশ সাহায্য চাইলে তৎকালীন ভারতের গভর্নর জেনারেল উইলিয়াম আমহার্স্টের নেতৃত্বে প্রথম অ্যাংলো-বার্মা যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে মণিপুর ভারতের একটি দেশীয় রাজ্য হিসেবে অঙ্গীভূত হয়।
১৯৪৭ সালে মণিপুর স্বাধীন রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশের ইচ্ছা প্রকাশ করে। পার্শ্ববর্তী বার্মার আগ্রাসী মনোভাবে ১৯৪৯ সালে রাজা বোধচন্দ্র সিং ভারত অন্তর্ভুক্তির সম্মতিপত্রে সই করেন। ১৯৫৬ সালে এটি কেন্দ্রশাসিত রাজ্য হয়। ১৯৭২ সালে তা পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পায়।
মণিপুরে তিন গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের বাস: বিষ্ণুপ্রিয়া, মেইতেই ও পাঙাল। মণিপুরে গন্ধর্বদের পরে আর্য-ক্ষত্রিয়দের শাসন শুরু হয়। অর্জুনের বংশধর বক্রবাহন ক্ষত্রিয় বংশী এবং বিষ্ণুর উপাসক বলে তাদের বিষ্ণুপ্রিয়া বলা হয়। মোঙ্গলীয় তিব্বতিবর্মী-পরিবারের কুকি-চীন গোত্রভুক্ত মেইতেইরা দশম-ত্রয়োদশ শতাব্দীর কোনো এক সময় চীন থেকে মণিপুরে প্রবেশ করে। তারা মণিপুরের উত্তরে অবস্থিত কবরু পর্বতে উপনিবেশ স্থাপন করে। মেইতেই মণিপুরিরা বিষ্ণুর উপাসক বিষ্ণুপ্রিয়া ও মেইতেইরা সনাতন বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত বলে পেঁয়াজ, রসুন ও মাংস খায় না। মা মেইতেই ও পিতা পাঠান মুসলিম বংশোদ্ভূত সম্প্রদায়কে পাঙাল জাতি বলে। তাদের মণিপুরি মুসলিমও বলা হয়। তারা মায়ের ভাষায় কথা বলে এবং পিতার ইসলাম ধর্ম পালন করে। তারা পেঁয়াজ, রসুন ও মাংসভোজী। সনাতনধর্মী মণিপুরিরা সাধারণত সাংস্কৃতিক জাতি হিসেবে উদারপন্থী। তাদের নারী-পুরুষদের মধ্যে মানববন্ধনে যুবক-যুবতী, নারী-পুরুষ একসঙ্গে খেলাধুলা, গান-বাজনা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্বাভাবিক চলাফেরা এবং মেলামেশায় অভ্যস্ত। তাদের ছেলেমেয়ে, নারী-পুরুষ সবাই নৃত্যগীতে অংশ নেয়। পাঙাল সম্প্রদায়ের নারীরা ইসলামিক শরিয়ত অনুসরণ করার চেষ্টা করেন।
আজকের পত্রিকা: জাতিগত সহিংসতার মূল কারণ কী?
কাকলী সাহা: জাতিগত হিংসা উত্তর-পূর্ব ভারতের ছোট রাজ্য মণিপুরকে ঘিরে ফেলেছে। একে অনেকেই গৃহযুদ্ধের রাজ্য হিসেবে অভিহিত করেছে। এই রাজ্যের দুটি বৃহৎ গোষ্ঠী—সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই ও সংখ্যালঘু কুকির মধ্যে ক্রমাগত সমস্যা বাড়ছে। জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া মণিপুরের কুকি-অধ্যুষিত জেলায় প্রচুর পরিমাণে পেট্রোলিয়াম মজুত এবং অন্যান্য খনিজ খুঁজে পেয়েছে। কুকি সম্প্রদায়ের মানুষের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অভিযোগ, মেইতেইদের দখলে থাকা সবকিছু সরকার কেড়ে নিতে চায়।
হঠাৎই মেইতেইরা সরকারিভাবে নিজেদের উপজাতি ঘোষণার দাবি জানায়। এই দাবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে শুরু করে কুকিরা। এরপরই উত্তেজনা বেড়ে যায়। মেইতেইদের এই দাবির বিপক্ষে কুকি সম্প্রদায়ের প্রধান যুক্তি ছিল, সরকার ও সমাজের ওপর মেইতেইদের ইতিমধ্যেই শক্তিশালী প্রভাবকে আরও জোরদার করবে তাদের উপজাতি স্ট্যাটাস। তাদের উপজাতি হিসেবে ঘোষণা করলে সেটা তাদের কুকিপ্রধান অঞ্চলে বসতি স্থাপনের বা জমি কেনার সুযোগ দেবে।
মে মাসে শুরু হওয়া হিংসার ঘটনায় কমপক্ষে ১৩০ জন নিহত ও প্রায় ৪০০ জন আহত হয়েছে। সেনাবাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী এই হিংসা দমন করতে লড়াই করছে। ফলে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ ঘরছাড়া হতে বাধ্য হয়েছে। পুলিশের অস্ত্রাগার লুট হয়েছে। শতাধিক গির্জা, এক ডজনের বেশি মন্দির ধ্বংস ও বহু গ্রামে আক্রমণ হয়েছে।
মর্মান্তিক ঘটনা হলো, মেইতেই পুরুষদের হাতে দুই কুকি নারীকে নগ্ন করে সবার সামনে প্যারেড করানো এবং তার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া। আসলে উচ্ছেদ অভিযান আদিবাসীদের মধ্যে প্রবল বিক্ষোভের জন্ম দেয়। ১১ এপ্রিল ইম্ফলের উপজাতি অঞ্চলে তিনটি গির্জার ‘অবৈধ নির্মাণ’ ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি নিউ লামকা শহরে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে জনতা সভাস্থল জ্বালিয়ে দেয়।
আজকের পত্রিকা: এরই মধ্যে আবার হরিয়ানা অশান্ত হয়ে উঠল কেন?
কাকলী সাহা: একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের জেরে সেখানে তিনজনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। বাস, বাইক ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা সামনে আসে। পুলিশ সূত্রের খবর, নুহতে দুটি মসজিদ লক্ষ্য করে আগুন ধরানো বোতল নিক্ষেপ করা হয়। অশান্তি ঠেকাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই পুলিশ সদস্য সজ্জন সিং ও সন্দীপ কুমারের।
বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল নুহতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্রিজ মণ্ডলের জলাভিষেক যাত্রাকে সামনে রেখে। বজরং দলের তরফে মনু মানেসর সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তেজনা ছড়ানোর মতো কথা বলেন। তাঁর কথা শুনে কিছু মানুষ তপ্ত হয়ে ওঠে এবং সেই থেকেই অশান্তি শুরু। এদিকে এই মনুর বিষয়ে কিছু জানেন না বলেই জানিয়েছেন রাজ্যর মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর! যদিও হরিয়ানার একাধিক পুলিশকর্তা দাবি করেছেন, মনু সেদিনের নির্ধারিত মিছিলের আগে ভিডিওগুলো ছড়িয়েছিলেন, আর তাতেই ঘটনা নিয়ন্ত্রণের
বাইরে চলে যায়।
আজকের পত্রিকা: এক জাতিতত্ত্বের প্রচারণায় ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কি?
কাকলী সাহা: দেখে নেওয়া প্রয়োজন, এক জাতিতত্ত্ব এই বহু ভাষাভাষী এবং বিবিধ ধর্মের ভারতবর্ষে এল কোথা থেকে? এই ভাবনার উৎসই-বা কী? আমরা জানি, ১৯৩৮ সালে অ্যাডলফ হিটলার এক জাতি, এক রাষ্ট্র এবং এক নেতা এই স্লোগানে জার্মানি ও অস্ট্রিয়াকে একীভূত করেন। অ্যাডলফ হিটলার একজন জার্মান রাজনীতিবিদ এবং নাৎসি পার্টির নেতা ছিলেন।
ভারতবর্ষে কেউ কেউ আবার এই এক জাতিতত্ত্বের বিপক্ষে দাঁড়াতে গিয়ে দ্বিজাতিতত্ত্বের যুক্তিও খাড়া করতে পিছপা হননি। ১৯৪০ সালের মার্চ মাসে পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে দ্বিজাতিতত্ত্বের ঘোষণা দেওয়া হয়।
দ্বিজাতিতত্ত্ব হলো এমন একটি মতাদর্শ, যেখানে ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানদের প্রাথমিকভাবে কেবল তাদের ধর্মের ভিত্তিতে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতীয় মুসলমান এবং হিন্দু দুটি স্বতন্ত্র সম্প্রদায়ের পরিচয় দেওয়া হয়েছে, যেখানে ভাষা, বর্ণ এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের তুলনায় ধর্মকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। পাকিস্তান আন্দোলন এবং ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের অন্যতম কারণ ছিল এই দ্বিজাতিতত্ত্ব।
দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে জিন্নাহ আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের দাবি তুলে ধরে এটাও বলেছিলেন, ‘একই রাষ্ট্রে দুটি জাতিকে বেঁধে রাখলে সেই জাতিদ্বয়ের মধ্যে যদি একটি সংখ্যালঘু এবং অপরটি সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়, তাহলে কালক্রমে তা থেকে অসন্তোষ বৃদ্ধি পাবে এবং শাসনব্যবস্থা একদিন ভেঙে পড়বে।’
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর আশঙ্কা যে ভ্রান্ত ছিল না, এর প্রমাণ মেলে ১৯৭১-এ স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের মধ্য দিয়েই। পূর্ব বাংলায় নিজেদের ক্ষমতা কায়েম রাখতে পাকিস্তান একের পর এক স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করে এবং পূর্ব বাংলার মানুষের ওপর নেমে আসে অকথ্য অত্যাচার, গণহত্যা। পূর্ব বাংলার মানুষ দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়। ফলস্বরূপ বিদ্রোহের আগুন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ত্রিশ লাখ মানুষের আত্মদান, বিপুলসংখ্যক মানুষের অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্ভোগ এবং তিন লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে অবশেষে ১৯৭১-এ স্বাধীন বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করে।
আজকের পত্রিকা: পরিত্রাণের কোনো উপায় দেখেন?
কাকলী সাহা: জাতীয় জনসমাজের প্রধান উপাদানগুলো হলো, ভৌগোলিক সান্নিধ্য, বংশগত ঐক্য, ভাষাগত ঐক্য, ধর্মগত ঐক্য, রাজনৈতিক ঐক্য, অর্থনৈতিক সমস্বার্থ ও ভাবগত উপাদান।
জাতীয়তাবাদের মহান আদর্শ গণতান্ত্রিক ধ্যানধারণার অনুপন্থী হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষকে মুক্তিসংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছে। এই আদর্শ জাতিকে আত্মপ্রত্যয়ের যেমন শিক্ষা দেয়, তেমনি সমস্ত ক্ষুদ্রতা ও সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রেরণা জোগায়। বন্তুত আদর্শ জাতীয়তাবাদ ‘নিজে বাঁচো, অপরকে বাঁচতে দাও’ এই সুমহান আদর্শ প্রচার করে বিশ্বসভ্যতার প্রগতির পথ উন্মুক্ত করেছে। কিন্তু উগ্র জাতীয়তাবোধ জাত্যভিমান সৃষ্টি করে সভ্যতার সংকট ডেকে আনে।
তবে আন্তর্জাতিকতাবাদ উগ্র জাতীয়তাবাদের হাত থেকে বিশ্বসভ্যতা রক্ষা করে। পৃথিবীর সভ্য জাতিগুলোর সমৃদ্ধি ও উন্নতি এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে। বিশ্বশান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ব রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিকতাবাদের প্রয়োজন।
জাতীয়তাবাদ হলো জাতির প্রতি ভালোবাসা। দেশের মানুষকে আপন করে নেওয়ার মানসিকতা। এটি একটি মহৎ রাজনৈতিক আদর্শ।
পরাধীন জাতিকে শৃঙ্খলমোচনের সংগ্রামে এই আদর্শ প্রেরণা দিয়েছে। জাতীয় ঐক্য সাধনের ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদের কোনো বিকল্প নেই। প্রকৃত জাতীয়তাবাদ সভ্যতার শত্রু নয়।
আন্তর্জাতিকতাবাদ হলো একটি ভাবগত বা মানসিক অনুভূতি। এই অনুভূতির জন্য ব্যক্তি নিজেকে নিজ রাষ্ট্রের নাগরিক ভাবার পাশাপাশি বিশ্ব নাগরিক হিসেবেও ভাবতে শেখে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো সাম্য ও সহযোগিতার ভিত্তিতে এক প্রীতিপূর্ণ বিশ্বসমাজের প্রতিষ্ঠা।
রাষ্ট্রের প্রধান উপাদান চারটি—জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব। কিন্তু জাতিগঠনের মূল উপাদান জাতীয় জনসমাজের মধ্যে গভীর ঐক্যবোধ ও রাজনৈতিক চেতনা।
এই চেতনার যথাযথ বিকাশই পারে জাতিগত বিদ্বেষের সমাপ্তি ঘটাতে।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১৪ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে