কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দক্ষিণ সাদুল্যা দহবন্দ বিলে ইটভাটার ধোঁয়ায় শতাধিক একর জমির ধানগাছ পুড়ে গেছে। পাক ধরা ধান পুড়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, গত শনিবার রাতে উপজেলার দহবন্দ বিলে অবস্থিত এইচ আর ইটভাটা কর্তৃপক্ষ ভাটা বন্ধ করে দেওয়ার সময় নিয়ম অনুযায়ী বন্ধ করেনি। এতে চিমনি দিয়ে বিষাক্ত ধোঁয়া বের হয়ে এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বোরো ধানখেত পুড়ে গেছে।

উপজেলার দক্ষিণ সাদুল্যা, দহবন্দ, আকাই বিলসহ আশপাশের এলাকার ধানখেত অনেকটাই সাদা ও হলুদ রঙের হয়ে গেছে। উঠতি ফসলের এমন অবস্থা দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা।

উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের ডম্বের মোড় এলাকার হায়দার আলী ধারদেনা করে দহবন্দ বিলে শ্যালো মেশিনে পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলেন। আশা করেছিলেন, উৎপাদিত ফসল দিয়ে ভালোভাবে দিন কাটবে তাঁর। কিন্তু ধান পাকার সময় নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক হায়দার আলী। ইটভাটার গরম ধোয়ায় তাঁর জমির ধান পুড়ে গেছে।

হায়দার আলী ছাড়াও ভাটার ইটের সঙ্গে পুড়ল ওই এলাকার আইয়ুব আলী, আবু তাহের, মকমল মিয়া, নূরুন্নবী মিয়া, মোসলেম উদ্দিন, নাজমুল ইসলামসহ শতাধিক কৃষকের স্বপ্ন। দহবন্দ বিলে প্রায় ১২০ থেকে ১৩০ একর জমির ধান পুড়ে গেছে এইচ আর ব্রিকসের ইট পোড়ানোর ধোঁয়ার তাপে। শুধু ধানগাছ নয়, এর প্রভাব পড়েছে ফলদ ও বনজ গাছের ওপর। স্থানীয় লোকজনের দাবি, পুড়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতিপূরণসহ পরবর্তীকালে যাতে এমনটা না ঘটে এর ব্যবস্থা করা হোক।

ইটভাটার ধোঁয়ায় কৃষকদের বোরো ধানের ক্ষতি হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে এইচ আর ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘১৯৯৫ সাল থেকে ইটভাটা পরিচালনা করে আসছি। কোনো বছর এমন হয়নি। এবার শুধু আমার ভাটায় নয়, আরও অনেক ভাটায় এমন হয়েছে। কৃষকদের সঙ্গে বসে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ইউএনও স্যার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে কৃষকদের পাশে থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার বলেন, ‘এখনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে কৃষি কার্যালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’