Ajker Patrika

মাসকাটা নদী খননে বাধা বালু ব্যবসায়ীদের

খান রফিক, বরিশাল
মাসকাটা নদী খননে বাধা বালু ব্যবসায়ীদের

বালু ব্যবসায়ী ও খেয়াঘাটের ইজারাদারদের কারণে মাসকাটা নদী খনন করতে পারছে না বিআইডব্লিউটিএ। ভাঙনের অজুহাত দেখিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নদী খনন বন্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। ফলে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ স্টিমারঘাটে লঞ্চ ভেড়ানো যাচ্ছে না। এ নিয়ে বিআইডব্লিউটিএর এক সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নৌযান মালিক ও শ্রমিকেরা।

নৌযানচালকেরা অভিযোগ করেন, পাতারহাট স্টিমারঘাটসংলগ্ন মাসকাটা নদীতে খনন না হওয়ায় সেখান থেকে লঞ্চ চলাচল করতে পারছে না। তাই নৌযান ইলিশা থেকে মজুচৌধুরীর হাটে যেতে পারছে না। ফলে তুলাতলী হয়ে মাঝেরচর ঘুরে যেতে হচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযানকে। আর এ কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা বেশি ঘুরতে হচ্ছে। ফলে প্রতি নৌযানের ৪০-৬০ লিটার পর্যন্ত তেল খরচ ও সময় বেশি লাগছে।

লঞ্চ স্টাফরা জানান, নদীতে পলি পড়ে যাওয়ায় এখন পাতারহাট লঞ্চঘাটে লঞ্চ ভেড়ানো যাচ্ছে না। মাঝনদীতে লঞ্চ রেখে যাত্রীদের ওঠানামা করাতে হচ্ছে। এ জন্য ঘাট ইজারাদারকে প্রতি ট্রলারের জন্য ২ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে।

এদিকে ৪ ডিসেম্বর বরিশালের বিভিন্ন নদী খননের পরিকল্পনা নিয়ে এক সভা করে ড্রেজিং বিভাগ। ওই সভায় উপস্থিত লঞ্চমালিক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মেহেন্দীগঞ্জের পাতারহাটের মাসকাটা নদীতে খনন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নৌকায় করে যাত্রীরা মাঝনদীতে এসে লঞ্চে ওঠে। বালু বেচবে, তাই খনন করতে দেওয়া হচ্ছে না। এর জবাবে বরিশাল নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক মো. আ. রাজ্জাক জানান, স্থানীয়দের নদীভাঙনের আপত্তির কারণে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসকাটা নদী খনন অন্য স্থানে করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছেন। জেলা প্রশাসক এটি সমন্বয়ের নির্দেশ দিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাতারহাট স্টিমারঘাটের ইজারাদার মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মনির জমাদ্দার বালু ব্যবসায়ী। তাই স্থানীয় প্রশাসনকে বুঝিয়ে খনন বাধাগ্রস্ত করছেন।

তবে মনির জমাদ্দার বলেন, পাতারহাট স্টিমারঘাটে খননে কোনো বাধা নেই। নদী খনন বন্ধের বিষয়েও তাঁর কোনো হাত নেই। এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ভূইয়া বলেন, স্থানীয় ও জনপ্রতিনিধিদের বাধার কারণে খনন বন্ধ রয়েছে। মেহেন্দীগঞ্জের ইউএনওর পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে, খননের ফলে তাঁদের নদী ভেঙে যায়।

এ ব্যাপারে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নূরুন নবী সাংবাদিকদের বলেন, নদী খননের স্থায়ী সমাধান করতে ড্রেজিং বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কীভাবে খনন করলে স্থায়ী সমাধান আসবে এবং নদীভাঙন হবে না, সেটা নির্ধারণ করে খনন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত