অনাদরে বাংলাবাজার যানজটে ব্যবসায় ভাটা

আয়নাল হোসেন, ঢাকা
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২২, ১২: ১৭

পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের বাংলাবাজার। দেশের প্রায় সব প্রান্ত থেকে ক্রেতারা আসেন এখানে বই কেনার জন্য। সময়ের পরিবর্তনে এই স্থানে গড়ে উঠেছে বড় বড় অট্টালিকা।

তবে এখানে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নেই বললেই চলে। তীব্র যানজটে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।

বাংলাবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানে রয়েছে অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবেই সারা দেশে পরিচিত।

অনেকেই বাসাবাড়ি গুদামঘর হিসেবে ভাড়া দিয়েছেন। বাসাবাড়িতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাসকারী লোকজনের সংখ্যা খুবই সীমিত। যাঁরা থাকছেন তাঁরাও নানা ধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। ব্যবসায়ীরাও নানা নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত। এসবের পরও ব্যবসায়ীরা নানাভাবে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।

বাংলাবাজার এলাকার হেরা ট্রেডার্সের জহিরুল ইসলাম জানান, তাঁদের এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যে চরম মন্দাবস্থা চলছে। বেচাবিক্রিও আগের তুলনায় অনেক কমেছে। এর মধ্যে দোকানে কোনো ময়লা-আবর্জনা না থাকলেও প্রতি মাসে দোকানপ্রতি ১০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হচ্ছে সিটি করপোরেশন পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠানকে। কেউ টাকা না দিলে তাঁদের সঙ্গে ঝগড়া হয়। অনেকে মানসম্মানের ভয়ে টাকা দিয়ে যাচ্ছেন।

আদনান মুকুল নামের আরেক ব্যবসায়ী জানান, তাঁদের এলাকায় যানজট প্রধান সমস্যা। এখানে লেগুনা চলাচলের কারণে সার্বক্ষণিক তীব্র যানজট লেগে থাকে।

জানা গেছে, সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান ময়লা-আবর্জনা ফেলার দায়িত্বে রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান প্রত্যেক দোকানে চাঁদা আদায়ের কার্ড দিয়েছে। প্রতি মাসে ময়লা থাকুক আর না থাকুক ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে। এ বিষয়ে সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও ওপাশ থেকে সাড়া মেলেনি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রহমান মিয়াজি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ময়লা ফেলা বাবদ দোকানিদের কাছ থেকে মাসে ৩০ টাকা করে নেওয়ার কথা রয়েছে। এর চেয়ে বেশি আদায়ের বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি।

লেগুনা চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদরঘাট ওভারব্রিজ থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত ৪৪টি লেগুনা দিনে চলাচল করছে। এসব লেগুনা চলাচলের জন্য পুলিশ, দলীয় লোকজনসহ বিভিন্ন স্তরে দিনে ৪০০-৫০০ টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদরঘাট-পোস্তগোলা রুটে চলাচলকারী লেগুনা থেকে পুলিশের পাশাপাশি ওয়ার্ড যুবলীগ নেতারা নিয়মিত চাঁদা নেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (লালবাগ বিভাগ) জাফর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সেখানে কারা চাঁদা আদায় করছে সেটি নিশ্চিত নই। পুলিশের কেউ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত