জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ গঠন করার জন্য ১৯৭৫ সালের ৬ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ৭ লাখ টাকার একটি চেক তুলে দিয়েছিলেন তখনকার তথ্য ও বেতারমন্ত্রী এম কোরবান আলী। চেক হাতে পেয়েই বঙ্গবন্ধু সেটি শ্রম, সমাজকল্যাণ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিমন্ত্রী অধ্যাপক ইউসুফ আলীর কাছে হস্তান্তর করেন। পরদিনের পত্রিকার প্রথম পাতায় যে ছবিটি ছাপা হয়েছিল, তাতে বঙ্গবন্ধু এবং উল্লিখিত দুই মন্ত্রীর সঙ্গে মুজিব কোট পরিহিত তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহেরউদ্দিন ঠাকুরকেও দেখা যায়। বঙ্গবন্ধু কি বুঝতে পেরেছিলেন, তাহেরউদ্দিন ঠাকুর তলে তলে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত?
মাহবুবুল আলম চাষী যখন কুমিল্লার বার্ডে (বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি) ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন, তখন প্রায় প্রতিদিন তিনি ঢাকায় তাহেরউদ্দিন ঠাকুরের সঙ্গে কথা বলতেন। মাহবুবুল আলম চাষী তাহেরউদ্দিন ঠাকুরের ছেলেবেলার বন্ধু ছিলেন না। ১৯৭১ সালে কলকাতায় বাংলাদেশ সরকারের মধ্যেই যে অশুভ চক্রটি গড়ে উঠেছিল, তার নেতা ছিলেন খন্দকার মোশতাক আহমদ। সেই মোশতাকের দুই হাত ছিলেন মাহবুবুল আলম চাষী আর তাহেরউদ্দিন ঠাকুর। বার্ডে চাষীর কাছে একটা বাঁধানো ছবি ছিল, তাতে এই তিন ‘কীর্তিমান’কে একসঙ্গে দেখা যেত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই তিনজন একই সঙ্গে সব কাজ করতেন। ১৯৭৫ সালে চাষী বার্ডে চাকরি করছিলেন বটে, কিন্তু মূলত এটাকে তিনি ‘টেম্পোরারি হাইডআউট’ বলে মনে করতেন। ১৯৭১ সালে যে ষড়যন্ত্র সফল করতে পারেননি, সেটাই ঘটিয়ে ফেলবেন ১৯৭৫ সালে—এই বিশ্বাস তাঁর ছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর খন্দকার মোশতাক ক্ষমতায় এলে কুমিল্লা থেকে সোজা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হয়ে এসেছিলেন মাহবুবুল আলম চাষী।
মোশতাক-চাষী-ঠাকুরের একসঙ্গে চলার গল্পটি ওখানেই শেষ হওয়ার নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং নিজেদের পায়ের নিচের মাটি শক্ত করার জন্য মার্কিনদের সহযোগিতা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল তাঁদের। ১৯৭১ সালে মার্কিনরা তাঁদের সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিল, ১৯৭৪ সালের শেষ দিক থেকে তাঁদের সঙ্গেই মার্কিনিদের যোগাযোগ নতুন করে গড়ে ওঠে।
গোপনে গোপনে মোশতাক-চাষী-ঠাকুর যে ষড়যন্ত্র করেছেন, তার সব তথ্য হয়তো এখনো উদ্ঘাটিত হয়নি। কিন্তু তাঁদের অশুভ তৎপরতা নিয়ে এ পর্যন্ত যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, তাতে এটা পরিষ্কার হয়েছে যে ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ড মোটেই কিছু বিপথগামী সেনাসদস্যের আকস্মিক আক্রমণ ছিল না। সেটি ছিল একটি স্বাধীন দেশকে বিপদে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্রের বাস্তবায়ন। খন্দকার মোশতাক ও পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর দেশের গতিপথের দিকে তাকালেই বোঝা যায়, দেশটিকে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে মিনি পাকিস্তানে পরিণত করা হয়েছিল। দেশি-বিদেশি চক্র ঠান্ডা মাথায় এই ষড়যন্ত্র করেছিল। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে দেশটিকে তার যাত্রাপথ থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিণতি ছিল সুদূরপ্রসারী। এখনো সেই সংকট কাটিয়ে ওঠা যায়নি।
[সূত্র: আহমদ ছফা, রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক প্রবন্ধ; মিজানুর রহমান খান, মার্কিন দলিলে মুজিব হত্যাকাণ্ড]
‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ গঠন করার জন্য ১৯৭৫ সালের ৬ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ৭ লাখ টাকার একটি চেক তুলে দিয়েছিলেন তখনকার তথ্য ও বেতারমন্ত্রী এম কোরবান আলী। চেক হাতে পেয়েই বঙ্গবন্ধু সেটি শ্রম, সমাজকল্যাণ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিমন্ত্রী অধ্যাপক ইউসুফ আলীর কাছে হস্তান্তর করেন। পরদিনের পত্রিকার প্রথম পাতায় যে ছবিটি ছাপা হয়েছিল, তাতে বঙ্গবন্ধু এবং উল্লিখিত দুই মন্ত্রীর সঙ্গে মুজিব কোট পরিহিত তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহেরউদ্দিন ঠাকুরকেও দেখা যায়। বঙ্গবন্ধু কি বুঝতে পেরেছিলেন, তাহেরউদ্দিন ঠাকুর তলে তলে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত?
মাহবুবুল আলম চাষী যখন কুমিল্লার বার্ডে (বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি) ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন, তখন প্রায় প্রতিদিন তিনি ঢাকায় তাহেরউদ্দিন ঠাকুরের সঙ্গে কথা বলতেন। মাহবুবুল আলম চাষী তাহেরউদ্দিন ঠাকুরের ছেলেবেলার বন্ধু ছিলেন না। ১৯৭১ সালে কলকাতায় বাংলাদেশ সরকারের মধ্যেই যে অশুভ চক্রটি গড়ে উঠেছিল, তার নেতা ছিলেন খন্দকার মোশতাক আহমদ। সেই মোশতাকের দুই হাত ছিলেন মাহবুবুল আলম চাষী আর তাহেরউদ্দিন ঠাকুর। বার্ডে চাষীর কাছে একটা বাঁধানো ছবি ছিল, তাতে এই তিন ‘কীর্তিমান’কে একসঙ্গে দেখা যেত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই তিনজন একই সঙ্গে সব কাজ করতেন। ১৯৭৫ সালে চাষী বার্ডে চাকরি করছিলেন বটে, কিন্তু মূলত এটাকে তিনি ‘টেম্পোরারি হাইডআউট’ বলে মনে করতেন। ১৯৭১ সালে যে ষড়যন্ত্র সফল করতে পারেননি, সেটাই ঘটিয়ে ফেলবেন ১৯৭৫ সালে—এই বিশ্বাস তাঁর ছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর খন্দকার মোশতাক ক্ষমতায় এলে কুমিল্লা থেকে সোজা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হয়ে এসেছিলেন মাহবুবুল আলম চাষী।
মোশতাক-চাষী-ঠাকুরের একসঙ্গে চলার গল্পটি ওখানেই শেষ হওয়ার নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং নিজেদের পায়ের নিচের মাটি শক্ত করার জন্য মার্কিনদের সহযোগিতা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল তাঁদের। ১৯৭১ সালে মার্কিনরা তাঁদের সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিল, ১৯৭৪ সালের শেষ দিক থেকে তাঁদের সঙ্গেই মার্কিনিদের যোগাযোগ নতুন করে গড়ে ওঠে।
গোপনে গোপনে মোশতাক-চাষী-ঠাকুর যে ষড়যন্ত্র করেছেন, তার সব তথ্য হয়তো এখনো উদ্ঘাটিত হয়নি। কিন্তু তাঁদের অশুভ তৎপরতা নিয়ে এ পর্যন্ত যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, তাতে এটা পরিষ্কার হয়েছে যে ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ড মোটেই কিছু বিপথগামী সেনাসদস্যের আকস্মিক আক্রমণ ছিল না। সেটি ছিল একটি স্বাধীন দেশকে বিপদে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্রের বাস্তবায়ন। খন্দকার মোশতাক ও পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর দেশের গতিপথের দিকে তাকালেই বোঝা যায়, দেশটিকে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে মিনি পাকিস্তানে পরিণত করা হয়েছিল। দেশি-বিদেশি চক্র ঠান্ডা মাথায় এই ষড়যন্ত্র করেছিল। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে দেশটিকে তার যাত্রাপথ থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিণতি ছিল সুদূরপ্রসারী। এখনো সেই সংকট কাটিয়ে ওঠা যায়নি।
[সূত্র: আহমদ ছফা, রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক প্রবন্ধ; মিজানুর রহমান খান, মার্কিন দলিলে মুজিব হত্যাকাণ্ড]
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে