Ajker Patrika

মহাসড়কে অবৈধ স্ট্যান্ড বেড়েছে যানজট, ঝুঁকি

রুবেল আহমেদ, কসবা
মহাসড়কে অবৈধ স্ট্যান্ড বেড়েছে যানজট, ঝুঁকি

সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে অটোরিকশা, ইজিবাইক চলাচল অব্যাহত রয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডের পাশেই গড়ে উঠেছে অটোরিকশা ও ইজিবাইকের অবৈধ স্ট্যান্ড। এর ফলে একদিকে যেমন বেড়েছে যানজট, তেমনি রয়েছে মৃত্যুঝুঁকিও। এ সমস্যা নিরসনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। তবে অটোরিকশা ও ইজিবাইকের চালকেরা বলছেন, পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় মহাসড়কের পাশেই গাড়ি রাখতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার তিনলাখপীর, সৈয়দাবাদ, মনকাশাইর, খাড়েরা, কাঠেরপুল ও কুটি-চৌমুহনী বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কের ওপর জটলা পাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শত শত অটোরিকশা ও ইজিবাইক। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে উঠানামা করতে হচ্ছে যাত্রীদের। বেপরোয়া গতির গাড়ি যেকোনো সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘটতে পারে প্রাণহানির মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বিশেষ করে তিনলাখপীর ও কুটি-চৌমুহনী এলাকা বেশি দুর্ঘটনা প্রবণ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে-মধ্যে লোকদেখানো অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় অবৈধ স্ট্যান্ডগুলো তুলে নিলেও প্রশাসনের লোকজন চলে আসার পরপরই আবার আগের অবস্থা তৈরি হয়। কুটি-চৌমুহনীতে চতুর্দিক থেকে এসে যে যার মতো করে সড়কে দাঁড়িয়ে যানবাহন চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। প্রতিদিন এই চৌমুহনীর ওপর দিয়ে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ ও সিলেটগামী কয়েক হাজার বাস ও ট্রাক যাতায়াত করে। অধিকাংশ সময় অটোরিকশা ও ইজিবাইকের কারণে সড়ক সরু হয়ে যানজট সৃষ্টি হয়।

কুটি-চৌমুহনীর আকবর হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী জানান, কাঠেরপুল থেকে তিনলাখপীর সবগুলো বাসস্ট্যান্ড কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ওপর অবস্থিত। প্রতিটি জায়গায় মহাসড়কের ওপর অবৈধ স্ট্যান্ড বানিয়ে অবস্থান করছে অটোরিকশা ও ইজিবাইক। বিশেষ করে চৌমুহনী বাসস্ট্যান্ডে চতুর্দিক থেকে অটোরিকশা ও ইজিবাইক জটলার কারণে কিছুক্ষণ পরপরই যানজট সৃষ্টি হয়। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দা ও যানবাহনের যাত্রী ও চালকেরা। আকবর হোসেন বলেন, যানজট নিরসন করতে এখানে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

তিনলাখপীর বাসস্ট্যান্ডের ব্যবসায়ী দিলীপ ভূইয়া জানান, আগে এত অটোরিকশা ও ইজিবাইক ছিল না। মহামারি করোনা হানা দেওয়ার পর অনেক প্রবাসী চাকরি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরেছেন। তাঁদের অনেকই দেশে এসে পরিবারের জন্য জীবিকা নির্বাহে বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে ইজিবাইক কিনে চালাচ্ছেন। প্রতিটি গ্রামেই বর্তমানে গড়ে ৪০ টির অধিক করে গাড়ি রয়েছে। এই অটোগুলো প্রতিদিন সকালে বেরিয়ে এলে প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডের জটলা তৈরি হয়। এসব অনুমোদনহীন অধিকাংশ চালকই ট্রাফিক আইন কী তা জানেন না। এ কারণে যানজট দিন দিন বাড়ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদেশফেরত এক চালক বলেন, করোনার কারণে খালি হাতে দেশে আসতে হয়েছে। আবার যে সেখানে যাব সে সামর্থ্য নেই। তাই পরিবার ও পেটের দায়ে ইজিবাইক চালাচ্ছি। বাসস্ট্যান্ডে অতিরিক্ত জায়গা না থাকায় মহাসড়কের পাশেই গাড়ি রাখতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম জানান, মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পাশাপাশি মহাসড়কে স্ট্যান্ড করে সারিবদ্ধভাবে গাড়ি না রাখার বিষয়ে মাঝে মাঝে অভিযান করা হচ্ছে। জানমালের নিরাপত্তা ও জনভোগান্তি লাঘবে শিগগিরই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত