সাইফুল মাসুম, ঢাকা
একসময় পরিষ্কার জলে টলমল করত বুড়িগঙ্গা। নদীর পানি দিয়েই গোসল, রান্নাসহ যাবতীয় কাজ করা যেত। বুড়িগঙ্গায় জাল ফেলে মাছ ধরে ভালোই দিন কাটত জেলেদের। এসব এখন রূপকথার মতো শোনাবে। দখল-দূষণে বুড়িগঙ্গার অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। বুড়িগঙ্গার শ্যামপুর এলাকায় অক্সিজেনের মাত্রা শূন্যের কোঠায়। এমন বিষাক্ত পানিতে জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের এক গবেষণায় এসব দাবি করা হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষাক্ত পানিতে কিছুটা বেঁচে থাকতে পারে সাকার মাছ। সেই সাকার মাছও এখন বুড়িগঙ্গায় মরে ভেসে উঠছে। মাছ না পেয়ে গত দুই যুগে বুড়িগঙ্গাপারের জেলেরাও পেশা পাল্টেছেন। তাঁদেরই একজন শ্যামপুরের আনিসুল হক (৫০)। যিনি রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে ১০ বছর আগের পেশাটাতে সুযোগ পেলেই ফিরে যান। গতকাল মঙ্গলবার শ্যামপুরের বুড়িগঙ্গাপাড়ে কথা হয় আনিসুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘১০ বছর আগেও আমি এখানে মাছ ধরেছি। তখন বোয়াল, শোল, কই মাছ পাওয়া যেত; এখন শুধু সাকার মাছ আছে। দূষণের কারণে অন্য কোনো মাছ পাওয়া যায় না।’
২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পানির পিএইচ (হাইড্রোজেন আয়ন ঘনত্বের একটি পরিমাপ) নিরূপণ করে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ। এর ফলাফলে দেখা যায়, শ্যামপুর ডাইং কারখানার পানিতে পিএইচের মান বর্ষার আগে, বর্ষায় এবং বর্ষার পরের মৌসুমে যথাক্রমে ৭.৬, ৬.৭ এবং ৮.৫। পানিতে পিএইচের পরিমাণ ৭ এর থেকে বেশি থাকলে তা ক্ষারধর্মী এবং কম থাকলে তা অম্লধর্মী।
পরীক্ষায় আরও পাওয়া গেছে, ভাসমান বস্তুকণার পরিমাণ বর্ষার আগে, বর্ষায় ও বর্ষার পরে যথাক্রমে ১০৮, ৫৭ ও ১৯৫। পানিতে দ্রবীভূত বস্তুকণার আদর্শ মান ১০। তা ছাড়া শ্যামপুরের পানিতে যেসব ভাসমান বস্তুকণা পাওয়া যায়, সেগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয় না। পানির নিচে নদীতলে পাতলা আস্তরণ সৃষ্টি করে, যা জলজ উদ্ভিদের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে।
তিন মৌসুমে শ্যামপুরের পানিতে অক্সিজেনের চাহিদা পরীক্ষা করে দেখা যায়, সিওডির (রাসায়নিক অক্সিজেনের চাহিদা) পরিমাণ ১৯০, ২২৭, ২৭৬; যা আদর্শ মানের চেয়ে চার গুণ বেশি। জৈবিক অক্সিজেনের চাহিদার (বিওডি) পরিমাণ যথাক্রমে ৮৭, ৭২ ও ১০৬; যা আদর্শ মান ০.২ এর তুলনায় অত্যধিক বেশি। এই তথ্য মূলত পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকাকেই নির্দেশ করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তিন মৌসুমে শ্যামপুরের পানিতে তেল ও গ্রিজের পরিমাণ যথাক্রমে ২.৬, ১.৯ ও ৫.৬। পানিতে তেল ও গ্রিজের আদর্শ মান ০.০১। তেল ও গ্রিজ নদীতে স্বাভাবিক আলো প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে এবং পানির উপরিভাবে একটি আস্তরণ তৈরি করে। এ ছাড়া পানিতে ফেনলের উপস্থিতি আদর্শ মান ০.০০২ এর তুলনায় বেশি। অতিরিক্ত মাত্রায় ফেনল থাকায় এখানের পানি পান করলে ডায়রিয়াসহ লিভারে সমস্যা দেখা দেবে।
গবেষকেরা জানান, বুড়িগঙ্গার শ্যামপুর এলাকায় পানিদূষণের প্রকৃত অবস্থা যাচাইয়ের জন্য ওয়ারকিপার্স কনসোর্টিয়াম বিভিন্ন ঋতুতে পানিতে প্রাপ্ত নয়টি ভিন্ন ভিন্ন রাসায়নিক উপাদান নিয়ে গবেষণা চালায়। এতে চারটি ভিন্ন ইনডেক্সিং পদ্ধতির মধ্য থেকে সবচেয়ে আধুনিক ও উপযোগী সিসিএমই ওয়াটার কোয়ালিটি ইনডেক্স ব্যবহার করা হয়। এই সূচকে পানির অবস্থা বিশ্লেষণে পানিকে পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়; যেগুলোর মধ্যে শ্যামপুরের পানি সবচেয়ে নিচের ক্যাটাগরিতে অবস্থান করে।
গবেষণা কার্যক্রমের অন্যতম সদস্য স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘উচ্চ আদালত যদিও নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করেছে। বাস্তবে এটি একটি মৃত নদী।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপার্সের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, ‘শ্যামপুরে ডাইংয়ের রাসায়নিক দূষণ যদি আমরা বন্ধ না করি, তবে নদী বাঁচানো কঠিন। নদীর তীরে বড় মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, আগে বুড়িগঙ্গা দূষণের জন্য ৭০ ভাগ দায়ী ছিল হাজারীবাগের ট্যানারিশিল্প ও শ্যামপুরের ডাইং। ট্যানারিশিল্প হেমায়েতপুরে নেওয়ার পর বুড়িগঙ্গায় এখন বড় দূষণ ঘটাচ্ছে শ্যামপুর। এখানে প্রায় ১০০টি ডাইং কারখানা রয়েছে। তবে সরকারি তালিকায় রয়েছে ৬০ থেকে ৬৫টি।
একসময় পরিষ্কার জলে টলমল করত বুড়িগঙ্গা। নদীর পানি দিয়েই গোসল, রান্নাসহ যাবতীয় কাজ করা যেত। বুড়িগঙ্গায় জাল ফেলে মাছ ধরে ভালোই দিন কাটত জেলেদের। এসব এখন রূপকথার মতো শোনাবে। দখল-দূষণে বুড়িগঙ্গার অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। বুড়িগঙ্গার শ্যামপুর এলাকায় অক্সিজেনের মাত্রা শূন্যের কোঠায়। এমন বিষাক্ত পানিতে জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের এক গবেষণায় এসব দাবি করা হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষাক্ত পানিতে কিছুটা বেঁচে থাকতে পারে সাকার মাছ। সেই সাকার মাছও এখন বুড়িগঙ্গায় মরে ভেসে উঠছে। মাছ না পেয়ে গত দুই যুগে বুড়িগঙ্গাপারের জেলেরাও পেশা পাল্টেছেন। তাঁদেরই একজন শ্যামপুরের আনিসুল হক (৫০)। যিনি রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে ১০ বছর আগের পেশাটাতে সুযোগ পেলেই ফিরে যান। গতকাল মঙ্গলবার শ্যামপুরের বুড়িগঙ্গাপাড়ে কথা হয় আনিসুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘১০ বছর আগেও আমি এখানে মাছ ধরেছি। তখন বোয়াল, শোল, কই মাছ পাওয়া যেত; এখন শুধু সাকার মাছ আছে। দূষণের কারণে অন্য কোনো মাছ পাওয়া যায় না।’
২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পানির পিএইচ (হাইড্রোজেন আয়ন ঘনত্বের একটি পরিমাপ) নিরূপণ করে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ। এর ফলাফলে দেখা যায়, শ্যামপুর ডাইং কারখানার পানিতে পিএইচের মান বর্ষার আগে, বর্ষায় এবং বর্ষার পরের মৌসুমে যথাক্রমে ৭.৬, ৬.৭ এবং ৮.৫। পানিতে পিএইচের পরিমাণ ৭ এর থেকে বেশি থাকলে তা ক্ষারধর্মী এবং কম থাকলে তা অম্লধর্মী।
পরীক্ষায় আরও পাওয়া গেছে, ভাসমান বস্তুকণার পরিমাণ বর্ষার আগে, বর্ষায় ও বর্ষার পরে যথাক্রমে ১০৮, ৫৭ ও ১৯৫। পানিতে দ্রবীভূত বস্তুকণার আদর্শ মান ১০। তা ছাড়া শ্যামপুরের পানিতে যেসব ভাসমান বস্তুকণা পাওয়া যায়, সেগুলো পানিতে দ্রবীভূত হয় না। পানির নিচে নদীতলে পাতলা আস্তরণ সৃষ্টি করে, যা জলজ উদ্ভিদের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে।
তিন মৌসুমে শ্যামপুরের পানিতে অক্সিজেনের চাহিদা পরীক্ষা করে দেখা যায়, সিওডির (রাসায়নিক অক্সিজেনের চাহিদা) পরিমাণ ১৯০, ২২৭, ২৭৬; যা আদর্শ মানের চেয়ে চার গুণ বেশি। জৈবিক অক্সিজেনের চাহিদার (বিওডি) পরিমাণ যথাক্রমে ৮৭, ৭২ ও ১০৬; যা আদর্শ মান ০.২ এর তুলনায় অত্যধিক বেশি। এই তথ্য মূলত পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকাকেই নির্দেশ করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তিন মৌসুমে শ্যামপুরের পানিতে তেল ও গ্রিজের পরিমাণ যথাক্রমে ২.৬, ১.৯ ও ৫.৬। পানিতে তেল ও গ্রিজের আদর্শ মান ০.০১। তেল ও গ্রিজ নদীতে স্বাভাবিক আলো প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে এবং পানির উপরিভাবে একটি আস্তরণ তৈরি করে। এ ছাড়া পানিতে ফেনলের উপস্থিতি আদর্শ মান ০.০০২ এর তুলনায় বেশি। অতিরিক্ত মাত্রায় ফেনল থাকায় এখানের পানি পান করলে ডায়রিয়াসহ লিভারে সমস্যা দেখা দেবে।
গবেষকেরা জানান, বুড়িগঙ্গার শ্যামপুর এলাকায় পানিদূষণের প্রকৃত অবস্থা যাচাইয়ের জন্য ওয়ারকিপার্স কনসোর্টিয়াম বিভিন্ন ঋতুতে পানিতে প্রাপ্ত নয়টি ভিন্ন ভিন্ন রাসায়নিক উপাদান নিয়ে গবেষণা চালায়। এতে চারটি ভিন্ন ইনডেক্সিং পদ্ধতির মধ্য থেকে সবচেয়ে আধুনিক ও উপযোগী সিসিএমই ওয়াটার কোয়ালিটি ইনডেক্স ব্যবহার করা হয়। এই সূচকে পানির অবস্থা বিশ্লেষণে পানিকে পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়; যেগুলোর মধ্যে শ্যামপুরের পানি সবচেয়ে নিচের ক্যাটাগরিতে অবস্থান করে।
গবেষণা কার্যক্রমের অন্যতম সদস্য স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘উচ্চ আদালত যদিও নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করেছে। বাস্তবে এটি একটি মৃত নদী।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপার্সের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, ‘শ্যামপুরে ডাইংয়ের রাসায়নিক দূষণ যদি আমরা বন্ধ না করি, তবে নদী বাঁচানো কঠিন। নদীর তীরে বড় মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, আগে বুড়িগঙ্গা দূষণের জন্য ৭০ ভাগ দায়ী ছিল হাজারীবাগের ট্যানারিশিল্প ও শ্যামপুরের ডাইং। ট্যানারিশিল্প হেমায়েতপুরে নেওয়ার পর বুড়িগঙ্গায় এখন বড় দূষণ ঘটাচ্ছে শ্যামপুর। এখানে প্রায় ১০০টি ডাইং কারখানা রয়েছে। তবে সরকারি তালিকায় রয়েছে ৬০ থেকে ৬৫টি।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে