মাসুদ রানা ছাত্রত্ব হারিয়েছেন বহু আগেই। বিআরডিবির চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। তারপরও দেলদুয়ার উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে বহাল তিনি।

শুধু মাসুদ রানা না সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিবসহ ৬১ সদস্যের ওই কমিটির সবাই এখন নানা পেশায় যুক্ত। সাত বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া কমিটির নেতারা ব্যবসা-চাকরি-ঘর সংসারে ব্যস্ত। ফলে ঝিমিয়ে পড়েছে দেলদুয়ার উপজেলা ছাত্রলীগের রাজনীতি। এতে নেতৃত্ব বিকাশও হচ্ছে বাধাগ্রস্ত। অন্যদিকে চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই মাসুদ রানাকে সভাপতি ও হাবিবুর রহমান হাবিবকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬১ সদস্যের দেলদুয়ার উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়।  ওই কমিটিতে সাতজন সহসভাপতি, তিনজন যুগ্ম সম্পাদক ও তিনজনকে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নাজমুল হুদা নবীন ও সাধারণ সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ রাজীব স্বাক্ষরিত ওই কমিটির মেয়াদ ছিল এক বছর। পরে এক বছর মেয়াদের ওই কমিটি দিয়েই আট বছর ধরে চলছে দেলদুয়ার উপজেলা ছাত্রলীগ।

বর্তমানে কমিটির কয়েকজন নেতা সরকারি চাকুরি করছেন। কেউ বিদেশ পাড়ি জমিয়েছেন, ব্যবসা করছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিয়ে করে পুরোদমে ঘরসংসার করছেন অধিকাংশ নেতা। দীর্ঘদিনেও এই কমিটি পুনর্গঠনের কোনো উদ্যোগ না থাকায় উপজেলা ছাত্রলীগের কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে।

দেলদুয়ার উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি দেলদুয়ার উপজেলা পল্লি উন্নয়ন সমবায় সমিতির (বিআরডিবি) দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব ব্যবসায় ব্যস্ত। সহসভাপতি আয়নাল হোসেন আটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সহসভাপতি রুবেল মিয়া ডুবাইল ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। যুগ্ম সম্পাদক মিন্টু বোস, সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন মিয়া ও জয়নাল আবেদীন কাদের সরকারি চাকুরি করছেন। সহসভাপতি রজব আলী, যুগ্ম সম্পাদক কানন সরকার, প্রচার সম্পাদক শুভসহ বেশ কয়েকজন সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা বলেন, সম্মেলন করে নতুন কমিটি গঠন করার দায়িত্ব জেলা ছাত্রলীগের। অভিভাবকের মতো পরামর্শ দেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। কিন্তু দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব সম্মেলন পেছানোর অন্যতম কারণ। ছাত্র নেতারা সংসদ সদস্য পক্ষের হবে না উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ন্ত্রিত হবে সেই বিষয়টি যোগবিয়োগ হচ্ছে সম্মেলন শব্দ আসার আগেই। নতুন নেতাদের বিকাশের জন্য দ্রুত সম্মেলন হওয়া প্রয়োজন। যাদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ সুসংগঠিত হবে।

এ বিষয়ে দেলদুয়ার উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘এ কথা সত্য মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির কারও ছাত্রত্ব নেই। আমরা পদ আঁকড়ে থাকতে চাই না। নতুন নেতৃত্ব এলেই আমরা দায়িত্ব ছেড়ে দেব। তবে নেতৃত্ব সৃষ্টির প্রয়োজনে সহসভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদক পদে চারজনকে আপাতত দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়েছে।’

সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, ‘সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি পুনর্গঠিত হোক এটা আমরা চাই। আমরা জেলা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁরা কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে সম্মেলনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করবেন। আমরা নতুন নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করব।’

টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি কয়েক দিন আগে গঠন হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের দেওয়া সিদ্ধান্ত মোতাবেক দ্রুত কমিটি গঠন করা হবে।