খানসামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: মন্ত্রীর সফরের খরচ মেটাতে চাঁদা আদায়

এস এম রকি, খানসামা (দিনাজপুর)
প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮: ৪৮

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন ১৩ জুলাই দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। তাঁর এই সফর উপলক্ষে হওয়া খরচের ঘাটতি মেটাতে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ টি এম ওবায়দুল্লাহর বিরুদ্ধে এই চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নির্ধারিত চাঁদা না দিলে বেতন আটকে রাখার ভয় দেখাচ্ছেন তিনি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসক, নার্স, মিডওয়াইফ, সিএইচসিপি, স্বাস্থ্য সহকারী মিলিয়ে মোট ১০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন অনুযায়ী ৪০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা নির্ধারণ করা হয়। এই টাকা সংগ্রহের জন্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাঁর পছন্দের কর্মচারীকে দায়িত্ব দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বিষয়ে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছিল। তবে এর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ১৩ জুলাই সকালে এসে মাত্র ১৫-২০ মিনিট হাসপাতালে অবস্থান করে সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি কোনো আপ্যায়ন নেননি বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার) ও স্বাস্থ্য সহকারী জানান, স্বাস্থ্য সহকারীদের ৪০০ এবং সিএইচসিপিদের ৬০০ টাকা করে চাঁদা দেওয়ার জন্য নিয়মিত চাপ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। টাকা না দিলে বেতন বন্ধ রাখার ভয় দেখাচ্ছেন। এটা আসলেই লজ্জাজনক।

নাম প্রকাশ না করে একাধিক নার্স ও চিকিৎসক জানান, বেতন অনুযায়ী তাঁদের ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা করে চাঁদার জন্য চাপ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তবে তাঁরা কেউ এখনো চাঁদা দেননি। এই টাকা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রতিদিন নিজেই চাচ্ছেন।

বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওবায়দুল্লাহ বলেন, মন্ত্রীর সফরের খরচের জন্য নয়, এটি আপ্যায়ন বিল মেটাতে নেওয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, আপ্যায়ন বাবদ কোনো বিল সরকার থেকে পাওয়া যায় না, তাই অফিসে আগত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও অতিথিদের আপ্যায়ন মেটাতে এই টাকা নেওয়া হচ্ছে। তবে চাঁদা না দিলে বেতন আটকে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করেন এই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা সিভিল সার্জনের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি সিভিল সার্জন মো. শরীফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোনো ভিআইপির সফর শুধু নয়, যেকোনো বিষয়ে চাঁদা সংগ্রহ নিয়মবহির্ভূত কাজ। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে আপ্যায়ন বিলের বরাদ্দ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অফিসের জন্য সামগ্রিক বিষয়ে বার্ষিক একটা বরাদ্দ থাকে। সেটা কোন খাতে ব্যয় করবে, এটা তাদের বিষয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত