Ajker Patrika

ভোরে দাঁড়িয়েও মিলছে না ওএমএসের চাল

সনি আজাদ, চারঘাট (রাজশাহী) 
ভোরে দাঁড়িয়েও মিলছে না ওএমএসের চাল

খোলাবাজারে (ওএমএস) চাল ও আটা বিক্রির দোকান খুলবে সকাল নয়টায়, কিন্তু ভোর সাড়ে চারটায় ডিলারের দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছেন শত শত নারী-পুরুষসহ শিশুরাও। কিন্তু দুপুর ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও চাল পাননি দুই শতাধিক মানুষ।  

চালের জন্য ঠেলাঠেলি, হইচই করে অবশেষে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন তাঁরা। গতকাল বুধবার রাজশাহীর চারঘাট পৌর শহরের মেডিকেল মোড় এলাকায় এই দৃশ্য দেখা গেছে।

বাজারে চালসহ নিত্যপণ্যের দাম বেশি হওয়ায় আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সংগতি রাখতে পারছেন না অনেকেই। এই অবস্থায় নিম্নবিত্তদের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও ভিড় করছেন ওএমএসের দোকানে। তবে চারঘাটে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ অনেক কম। এ ছাড়া ডিলার নিয়োগে অসংগতি থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ওএমএসের সুবিধাভোগীরা।
জানা গেছে, চারঘাট পৌরসভার চারটি স্থানে এ কার্যক্রম চলছে। তবে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও পণ্য কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন অধিকাংশ সুবিধাভোগী। চাল না পেয়ে প্রতিদিন হট্টগোল হচ্ছে। পৌরসভার ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে শুধু একজন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অথচ ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অথচ এই ওয়ার্ডগুলোতে চাকরিজীবী পরিবারের সংখ্যা বেশি। এ জন্য ডিলার নিয়োগে অসংগতিই ভোগান্তির অন্যতম কারণ বলছেন উপকারভোগীরা।

পৌরসভার চারটি ডিলার কেন্দ্রে দেখা গেছে ওএমএসের কেন্দ্রগুলোতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল চারঘাট মেডিকেল মোড় এলাকার জহুরুল ইসলামের ওএমএসের দোকানে। অপরদিকে সরদহ বাজার ও ট্রাফিক মোড়ের কেন্দ্র দুটিতে ভিড় ছিল না।

উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি হচ্ছে। পরিবারের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। এই অবস্থায় ৩০ টাকা কেজি দরে চাল পেতে লাইন ধরছেন তাঁরা। অনেকে ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে পাঁচ কেজি চাল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। তবে সবার ভাগ্যে তা-ও জুটছে না।

কথা হয় পিরোজপুর এলাকার আঙ্গুরা বেগমের সঙ্গে। তাঁর বয়স ৬০ ছাড়িয়েছে। ঠিকমতো হাঁটতেও পারেন না। গতকাল সকাল ৭টার দিকে মেডিকেল মোড়ের কেন্দ্রে এসেছেন চাল কিনতে। কিন্তু এত ভিড় যে লাইনে তাঁর জায়গা হয়নি।

মিয়াপুর এলাকার ভ্যানচালক তুহিন আলী বলেন, ভোর পাঁচটায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন তিনি। কারণ, পরে এলে লাইনের প্রথম দিকে জায়গা পাওয়া যায় না। এত বেশি লোক লাইনে দাঁড়ায় যে অর্ধেকের বেশি খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়।

উপজেলা সদরের মেডিকেল মোড় এলাকার ওএমএসের ডিলার জহুরুল ইসলাম জানান, চাহিদা খুব বেশি। বিক্রি শুরুর কয়েক ঘণ্টাতেই চাল শেষ হয়ে যাচ্ছে। চাল দেওয়া যাবে ৪০০ জনকে, কিন্তু লোক আছে এর দ্বিগুণ। গতকালও দুই শতাধিক মানুষকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। চাপ সামাল দেওয়ার জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে কিংবা ওয়ার্ড অনুযায়ী ডিলারের সমন্বয় করতে হবে।

উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. মলিউজ্জামান বলেন, পৌর শহরে চারজন ডিলারের মাধ্যমে আট টন চাল বিক্রি করা হচ্ছে। তবে বরাদ্দের তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি। এই কার্যক্রম নিয়মিত তদারক করা হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত