ময়লার দুর্গন্ধে ঘরে টেকা দায়

জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২২, ০৬: ১৮
আপডেট : ০১ জুন ২০২২, ১০: ২৪

সুনামগঞ্জের চার উপজেলা ছাতক, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর ও শান্তিগঞ্জে দুই শতাধিক গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়। পানি নেমে গেলেও নতুন করে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বন্যাকবলিত বাড়িঘরে। ঘর থেকে বের হলেই দুর্গন্ধযুক্ত পানি। এতে অতিষ্ঠ মানুষ।

এ ছাড়া বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি ব্যবহার ও স্পর্শ না করতে নিষেধ করছেন চিকিৎসকেরা। বিশেষ করে ছাতক ও সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার বসতভিটায় পানি ওঠার ফলে শহরের বর্জ্যের সঙ্গে মিশে তা আশপাশে জমে আছে। পানি নেমে যাওয়ার পরে এসব ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধ এখন নতুন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সুনামগঞ্জ পৌরশহরের পশ্চিম হাজীপাড়ার বাসিন্দা আলেয়া বেগম বলেন, ‘আমাদের কাঁচাঘর। পানি উঠে যাওয়ার পর আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাই। এখন বাসায় আসার পর আরেক সমস্যায় পড়েছি—দুর্গন্ধে বাসায় থাকা কঠিন হয়ে গেছে।’

তেঘরিয়া আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মনোয়ার আহমদ বলেন, ‘শহরের সব ময়লা-আবর্জনা পানির সঙ্গে ভেসে বাড়ির সামনে জমা হইছে। পানি নামলেও এসব ময়লা বাড়ির সামনেই রয়ে গেছে। বাজে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ এসব ময়লা অপসারণ না করলে সমস্যায় পড়তে হবে।’

বন্যার পানিতে সুনামগঞ্জ পৌরশহরের পশ্চিম হাজীপাড়া, নবীনগর, পূর্ব-পশ্চিম নতুনপাড়া, কালীপুর, হাছনবসত, সুলতানপুর, শান্তিবাগ এলাকায় পচা ও জমাট বাঁধা পানি ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এ কারণে পানিবাহিত রোগবালাই বেড়ে যাচ্ছে।

টানা ১৫ দিন ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা ডুবে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি বদলেছে, তবে বন্যা-পরবর্তী দুর্ভোগ এখন ঘরে ঘরে।

অন্যদিকে জেলার চার উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবেছিল প্রায় দেড় হাজার টিউবওয়েল। এসব টিউবওয়েল দিয়ে এখনো ঘোলাটে ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি বের হচ্ছে; যা পান ও ব্যবহার করতে পারছে না মানুষ। আবার অনেকে নিরুপায় হয়ে এই পানিই ব্যবহার করছে।

সুনামগঞ্জ জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কাসেম বলেন, বন্যায় সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতকের প্রায় এক হাজার টিউবওয়েল ডুবে গিয়েছিল। যেসব টিউবওয়েল থেকে পানি উঠতে সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেগুলো মেরামত করে পানি বিশুদ্ধকরণে কাজ করছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কর্মীরা।

আবুল কাসেম আরও বলেন, ‘যে টিউবওয়েলগুলো বিকল হয়নি, পানি সরার সঙ্গে সঙ্গে এক বালতি পানির মধ্যে ২০০ গ্রাম ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে সেগুলোতে ঢেলে দিয়ে কিছু সময় চাপ দিয়ে পানি বের করে দিতে হবে। এতে টিউবওয়েলটির পানি বিশুদ্ধকরণ হয়ে যাবে।’

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ হোসেন বলেন, এখনো অনেক জায়গায় বন্যার পানি জমে আছে। এই পানি ব্যবহার ও স্পর্শ করলে নানা রোগবালাই দেখা দিতে পারে।

সিভিল সার্জন বলেন, যে টিউবওয়েলগুলো পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল, সেখান থেকে কয়েক দিন পানি খাওয়া যাবে না। টিউবওয়েলের পানি জীবাণুযুক্ত থাকতে পারে। তবে ফিটকিরি দিয়ে ব্যবহার করা যাবে। খাবার পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে উপজেলা হাসপাতাল, ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিকে বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বন্যার পানি নেমে গেলেও পৌরশহরের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ পৌরবাসীর।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র নাদের বখত বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হয়েছে। বন্যা-পরবর্তী রোগবালাই দেখা দিতে পারে। ঢলের সঙ্গে ভেসে আসা ময়লা-আবর্জনা আমরা দ্রুত পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত