Ajker Patrika

ব্যবসায়ীর অতিরিক্ত কৃষি জমি নিচ্ছে সরকার

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
ব্যবসায়ীর অতিরিক্ত কৃষি জমি নিচ্ছে সরকার

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে নুরুজ্জামান বিশ্বাস গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রীর জমির হিসাব। তাঁরা আইনবহির্ভূতভাবে কৃষিজমি অর্জন ও ব্যবহার করছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে শুনানিও হয়েছে। জানা গেছে, ১৯৮৪ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী কৃষিজমি মালিকানার ঊর্ধ্বসীমা ৬০ বিঘা ধরা হয়। এতে সুস্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা একসঙ্গে বসবাসরত পরিবার ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি ধারণ করতে পারবে না। কিন্তু নুরুজ্জামান বিশ্বাস এবং তাঁর স্ত্রী মিলে অন্তত ৮৮ বিঘা কৃষিজমির মালিক। এ ছাড়া নামে-বেনামে আরও অনেক কৃষিজমি দখলে রয়েছে তাঁদের। আবাদি জমি ব্যবহার করা হচ্ছে শিল্পবাণিজ্যের প্রয়োজনে।

দৌলতপুরে নুরুজ্জামান বিশ্বাসের জমির হিসাব তদারকির পাশাপাশি আরও কয়েকজন ধনাঢ্য ব্যক্তির তথ্য চাওয়া হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলার সবখানেই যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে কৃষিজমির মালিকানার সিলিং বা সর্বোচ্চ সীমা। ব্যবসায়ী দম্পতি নুরুজ্জামান বিশ্বাস ও সেলিনা বিশ্বাসের নামে অতিরিক্ত জমির সন্ধান পেলে তা যাচাই-বাছাই শুরু হয়। চলতি নভেম্বরে এই ব্যবসায়ীর পক্ষে দৌলতপুর সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে আইনি শুনানিতে অংশ নিয়েছেন কোম্পানির কর্মকর্তা নাহারুল ইসলাম মিনু।

সূত্রমতে, এখনো ভূমি কর্তৃপক্ষের হিসাবে থাকা অতিরিক্ত জমির সুষ্ঠু ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বর্তমান মালিকেরা। সুষ্ঠু জবাবের জন্য আরও সময় চেয়েছেন তাঁরা। এদিকে নুরুজ্জামান বিশ্বাস পরিবারের জমি ক্রয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা। আইনে আছে, ৬০ বিঘার ওপরে থাকা সব কৃষিজমি সমর্পণ করতে হবে সরকারকে। তবে সমর্পিত জমি কোনটি হবে তা নির্ধারণ করতে পারবেন ব্যক্তি নিজে। অতিরিক্ত জমি স্বেচ্ছায় সরকারকে না দিলে সরকার সুবিধামতো নেবে।

এ প্রসঙ্গে দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, ‘আমরা তথ্য যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে নুরুজ্জামান বিশ্বাসের অনুকূলে অতিরিক্ত জমির খোঁজ পাই। এ বিষয়ে শুনানি হয়েছে। উপজেলার আরও কয়েকজন ধনাঢ্যকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’ তবে পর্যাপ্ত তথ্য থাকলেও শুনানিতে অংশ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন নাহারুল ইসলাম মিনু। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে নারাজ নুরুজ্জামান বিশ্বাস।জানা গেছে, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে কৃষিজমির মালিকানায় ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণের বিষয়টি আইনভুক্ত রাখা হয়। ওই আইনে ঊর্ধ্বসীমা ছিল ১০০ বিঘা, যা পরে ৬০ বিঘায় নেমে আসে। 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সিরাজুল ইসলাম জানান, দৌলতপুরে অতিরিক্ত জমি থাকার খবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি দৌলতপুরে নদীভাঙন-সংক্রান্ত নিয়ম ও মালিকানাহীন বা পড়ে থাকা কৃষিজমি খাস খতিয়ানভুক্ত করার কার্যক্রমে অন্তত ৩০০ একর জমি সরকারের মালিকানায় যাচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। উপজেলাটিতে যেসব মানুষের কাছে সীমাবহির্ভূত জমি রয়েছে, তাঁদের জমি নিয়ে নেবে সরকার।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধপরবর্তী পরিস্থিতিতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষিজমি সংরক্ষণে গুরুত্ব বাড়িয়েছে সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নবরাত্রির জন্য বছরজুড়ে অপেক্ষা, পিরিয়ডের কারণে পালন করতে না পেরে আত্মহত্যা

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে আরাকান আর্মির আপত্তি ও শর্ত

আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, খই-মুড়ির মতো বোমা ফুটছে জাজিরায়

অটোতে ফেলে যাওয়া ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার ফিরিয়ে দিলেন কলেজছাত্র

পরকীয়া নিয়ে ঝগড়া, স্ত্রীর কাঠের আঘাতে স্বামী নিহত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত