Ajker Patrika

মির্জাপুরে সারের সংকট

মির্জাপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৩৪
মির্জাপুরে সারের সংকট

মির্জাপুরে চলতি মৌসুমে তীব্র সার সংকট দেখা দিয়েছে। জেলা থেকে বরাদ্দ পাওয়া ডিএপি ও এমওপি সার এখনো পাননি ডিলাররা। এ ছাড়াও ইউরিয়া সারের সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে চলতি মৌসুমে গম, সরিষা ও শীতকালীন ফসল চাষাবাদ বিঘ্নিত হতে পারে। সার সংকট দূর করতে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মশিউর রহমান।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় সাড়ে নয় হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত করা হয়েছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলুসহ শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। এ ছাড়া চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে উপজেলা কৃষি অফিস।

বর্তমানে সরিষা এবং শীতকালীন সবজি আবাদ শুরু হয়েছে। চলছে জমি প্রস্তুতের কাজ। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে সার সংকট দেখা দেওয়ায় সরিষা ও সবজি চাষাবাদ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলায় সারের ডিলার রয়েছেন ১৫ জন। প্রতি ডিলারকে চলতি মাসে টাঙ্গাইল থেকে ১৪০ বস্তা করে এমওপি সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাত্র দুজন ডিলার বরাদ্দ করা সার তুলতে পেরেছেন। আরেক কর্মকর্তার আত্মীয়ের মৃত্যুর কারণে গোডাউন বন্ধ থাকায় গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কোনো ডিলার সার তুলতে পারেননি।

ডিলারপ্রতি ১৩ মেট্রিক টন করে ডিএপি সার বরাদ্দ দেওয়া হয়, যা নারায়ণগঞ্জের আমদানিকারকদের কাছ থেকে আনতে হবে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৫ জন ডিলারের কেউ সার পাননি। জাহাজ বন্দরে না আসায় ডিলাররা সার নিতে পারেননি বলে জানা গেছে। তবে সার আনতে গিয়ে দুঃসংবাদ পেয়েছেন ডিলাররা। আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সংকটের কারণে বরাদ্দকৃত সারের মধ্যে ২০ বস্তা করে কম পারেন তাঁরা।

এ দিকে উপজেলার ১৫ জন ডিলারকে ৭৭ মেট্রিক টন করে ইউরিয়া সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র চারজন ডিলার ইউরিয়া সার সংগ্রহ করতে পেরেছেন। বাকিরা টাকা জমা দিলেও পরিবহন ধর্মঘটের কারণে যমুনা সার কারখানা থেকে বরাদ্দকৃত সার আনতে পারছেন না।

বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম কাদের ও চান মিয়া জানান, গতকাল সকালে তাঁরা ডিএপি (ড্রাই এমুনিয়াম ফসফেট) সারের ৫০ কেজির বস্তা ৯০০ টাকায় কিনেছেন। সরকার নির্ধারিত দর প্রতি বস্তা ৮০০ টাকা। তবে ইউরিয়া ও এমওপি (মিউরেট অব পটাস) সার পাওয়া যায়নি। যানবাহন চালু না হলে পাওয়া যাবে না বলে দোকানি তাঁদের জানান।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা সার ডিলার সমিতির সভাপতি দেওয়ান রেফাজ উদ্দিন বলেন, ‘অন্য বছরের তুলনায় এবার কম সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে পরিবহন ধর্মঘট। ফলে হঠাৎ করেই সার সংকট দেখা দিয়েছে। অথচ প্রত্যেক ডিলারই তাঁদের বরাদ্দকৃত সারের টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দিয়েছেন।’

এদিকে সার না পেয়ে শত শত কৃষক হন্যে হয়ে ডিলারের কাছে ছুটছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মশিউর রহমান সার সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে যাতে দ্রুত সার সংকট দূর করতে কাজ করা হচ্ছে। আশা করি দ্রুতই আমরা এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সার সংকটের বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত