Ajker Patrika

জমি অধিগ্রহণেই চার বছর পার চসিকের

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
জমি অধিগ্রহণেই চার বছর পার চসিকের

চট্টগ্রাম নগরীর কুলগাঁও বালুছড়া এলাকায় আধুনিক বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (একনেক) প্রকল্প পাস হয় ২০১৮ সালে। এরপর চার বছর পার হতে চলেছে।

এখনো টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারেনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে এক দফায় প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত মেয়াদ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে সিটি করপোরেশনকে। অথচ, আজও ভূমি অধিগ্রহণের কাজই শেষ হয়নি। ফলে বর্ধিত সময়সীমার মধ্যেও প্রকল্পের কাজ শেষ করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

চসিক কর্তৃপক্ষ বলছে, ভূমি অধিগ্রহণের জন্য তিন বছর আগে অর্ধেক টাকা (১৩০ কোটি) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তবুও তারা কোনো জমি বুঝিয়ে দিতে পারেনি। তাই প্রকল্পের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

১৯৯৩ সালে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল নির্মাণের পর গত ৩০ বছরে চট্টগ্রাম নগরীতে আর কোনো স্থায়ী বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়নি। অন্যদিকে, অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে নগরীতে বাড়তে থাকে যানবাহন। এ প্রেক্ষাপটে ২০১৫ সালে সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর নগরীর কুলগাঁও বালুছড়া এলাকায় আধুনিক বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেন তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর সিটি করপোরেশন গৃহীত ‘সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি জিরো ম্যাচিং ফান্ডের অনুকূলে একনেক সভায় পাস হয়।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরীর কুলগাঁও বালুছড়া এলাকায় ১৬ একর জায়গার ওপর টার্মিনালটি নির্মাণ করা হবে। ১ হাজার ২৩০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সিটি করপোরেশনের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও বাস-ট্রাক নির্মাণ শীর্ষক এই প্রকল্পের অধীনে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬০ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং জমির উন্নয়ন বাবদ ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এ ছাড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ইয়ার্ড নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ২৫ কোটি টাকা।

তবে একই প্রকল্পের আওতায় নগরীর ৪১ ওয়ার্ডজুড়ে ৭৫৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩২০ দশমিক শূন্য ৭ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন, ১৩৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৭টি ব্রিজ নির্মাণ (অ্যাপ্রোচ সড়কসহ) এবং ১৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ২১৫ মিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট অ্যাপ্রোচ সড়কসহ কালভার্টের নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের জন্য যে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে, অধিগ্রহণের জন্য সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে বসতভিটা, নালা ও ডোবা ধরনের জায়গা পায় জেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ী তাঁরা জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাব করেন। তাঁদের এ প্রস্তাবে ডোবা হিসেবে নির্ধারণ করা জমির মালিকেরা আপত্তি জানান।

ভূমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ভূমি অধিগ্রহণ) মাসুদ কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণের জন্য আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। মাস তিনেক আগে আমরা সাত ধারা দিয়েছি। এর মধ্যে জমির ধরন নিয়ে কয়েকজন মালিকের আপত্তি রয়েছে। যাঁদের জমি ডোবা হিসেবে পেয়েছি। তাঁরা আপত্তি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, যাঁরা ভিটা ও নালা পেয়েছেন তাঁরা খুশি।’

যেসব জমি অধিগ্রহণে মালিকদের আপত্তি নেই, সেসব জমি চসিককে বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মাসুদ কামাল বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রকল্প পরিচালক সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু ছালেহ বলেন, জেলা প্রশাসন এখনো আমাদের জায়গা বুঝিয়ে দিতে পারেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত