নির্ভরশীলতা

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৭: ৪৩

প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্কে যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস রয়েছে, সে কথা মাথায় রেখেই নিশ্চয় ভারতীয় হাইকমিশনার কথাগুলো বলেছেন। লক্ষ করলে দেখা যাবে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করার কথা বলা হচ্ছে। পাশাপাশি দুই দেশে বসবাস করতে হলে সুসম্পর্ক বজায় রাখা খুবই জরুরি।

মাঝে মাঝেই আমাদের দেশে ভারতীয় পণ্য বর্জন করার ডাক শোনা যায়। তাতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র দুটি যে অর্থনৈতিকভাবে পরস্পর নির্ভরশীল, সে কথা ভুলে যাওয়া হয়। এই যেমন, হঠাৎ করে ডিমের দাম স্মরণকালের সবচেয়ে ঊর্ধ্বগামী হলো যখন, তখন ভারত থেকে ডিম আমদানির সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আরও অনেক পণ্য আছে, যা ভারত থেকে আমদানি করতে হয়।

অন্যদিকে, সাধ্যের মধ্যে দেশের বাইরে ঘুরতে যাওয়ার জন্য এ দেশের মানুষের অনেকেই বেশির ভাগ সময় ভারতকে বেছে নেন। আর পশ্চিমবঙ্গের জনগণ আমাদের পদ্মার ইলিশের জন্য বছরে অন্তত একবার খুব আশা নিয়ে অপেক্ষা করে। প্রায় ৬ লাখ টন ইলিশ উৎপাদনের পরিপ্রেক্ষিতে মাত্র ৩ হাজার টন ভারতে গেলে অর্থনীতির কোনো ক্ষতি-বৃদ্ধি হয় না। অথচ এই বিষয়টি নিয়েও উগ্র প্রচারণা চলে, তা বাস্তবসম্মত নয়। বাংলাদেশ থেকে পাট, পাটজাত দ্রব্য, সাবান ইত্যাদিও ভারতে রপ্তানি হয়। তা থেকে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি। ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েই একে-অপরের ওপর নির্ভরশীল—এই কথা মনে রেখেই অন্য সংকটগুলো মোকাবিলা করা দরকার।

ভারত থেকে রয়েল এনফিল্ড নামে মোটরসাইকেল দেশে এসেছে সদ্য। যাঁরা নিয়মিত মোটরবাইক চালান, তাঁদের অনেকের কাছেই এটি ‘স্বপ্নের’ একটি ব্র্যান্ড। অনেকে কিনতে চাইছেন, কিন্তু ভারতীয় পণ্য বলে অনেকে আবার কিনতে চাইছেন না। অথচ হিরো, বাজাজ কিংবা টিভিএসের মতো ভারতীয় ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল আমাদের দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়। এমনকি সুজুকি ও ইয়ামাহার মূল প্রতিষ্ঠান জাপানিজ হলেও এদের অধিকাংশ বাইক আমাদের দেশে আমদানি করা হয় ভারত থেকে। শুধু মোটরসাইকেলই নয়, গাড়িও আমরা ভারত থেকে পাচ্ছি। দেশের নিটল গ্রুপ সেই কবে ভারতীয় টাটা গ্রুপের সঙ্গে জোট বেঁধে যানবাহনের চাহিদা মেটাচ্ছে বছরের পর বছর। 

এ দেশের মানুষ একটু ভালো সেবা পেতে ছুটে যান ভারতের হাসপাতালগুলোতে। ভ্রমণের জন্য দুই দেশের পর্যটকেরাই এদেশ-ওদেশ যাওয়া-আসা করেন, কেনাকাটা করেন। আত্মীয়দের সঙ্গে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করতেও যাওয়া-আসা চলে। আর এ 
সবকিছুই দুই দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখে। এই চক্রের কোনো একটা প্রভাবক বন্ধ হয়ে গেলে দুই দেশের অর্থনীতির ভিতই নড়বড়ে হয়ে যাবে।

পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও একে অন্যকে সম্মান করার মাধ্যমেই দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়াকে উৎসাহিত করা দরকার। কোনো পক্ষ থেকেই বিদ্বেষ ছড়িয়ে নয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত