জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মেয়েদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে জাবিতে চলছে তুমুল সমালোচনা। শিক্ষক থেকে শিক্ষার্থী—সবাই তাঁর সমালোচনা করছেন। 
গত মঙ্গলবার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগরের মেয়েদের কেউ সহজে বউ হিসেবে নিতে চায় না। কারণ, সারা রাত এরা ঘোরাফেরা করে।’

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রী আনিছা পারভীন জলি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সবচেয়ে নারীবান্ধব। কিন্তু শাবিপ্রবির উপাচার্য শুধু ছাত্রীদের উদ্দেশে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে, যা তাঁর নারীবিদ্বেষী মননের বহিঃপ্রকাশ।’

আনিছা পারভীন জলি বলেন, ‘বাঙালি নারীর মূল্যবোধ লালনে সবচেয়ে অগ্রগামী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। কারণ, এই ক্যাম্পাসে মেয়েরা তাঁদের নিজস্ব সংস্কৃতি পালনে সর্বোচ্চ স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারেন। জাহাঙ্গীরনগরের পরিবেশ মেয়েদের মুক্তচিন্তা ও স্বাধীন ব্যক্তিসত্তায় বিকশিত করে। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ তো কোনো সংসারের বউ তৈরি করা নয়।’

নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা বলেন, ‘উপাচার্যের জায়গা থেকে তিনি দায়িত্বশীল মন্তব্য করেননি। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত। মেয়েদের বিরুদ্ধে এটি অজ্ঞতাপ্রসূত এবং ঢালাও মন্তব্য। তাঁর মন্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণাকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করেছে।’

এদিকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের জন্য উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার-সংলগ্ন সড়কে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন শেষে এ কুশপুত্তলিকা জ্বালানো হয়।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ বলেন, ‘শাবিপ্রবির ভিসির বক্তব্য অনুযায়ী একমাত্র বিয়েই যেন সবার জীবনের লক্ষ্য। তাঁর জানা উচিত আমাদের মেয়েরা গবেষণা, শিক্ষা ও খেলাধুলা-­সবখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে।’