Ajker Patrika

দরদাম করে গুনে গুনে ঘুষ নেন শিক্ষা কর্মকর্তা

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২২, ১১: ২২
দরদাম করে গুনে গুনে ঘুষ নেন শিক্ষা কর্মকর্তা

নীলফামারীর ডিমলায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ নিজ অফিসে বসেই প্রকাশ্যে ঘুষ নেন। ঘুষ নেওয়ার সেই দৃশ্যের ভিডিও ফাঁস হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, নুর মোহাম্মদ শিক্ষকদের সঙ্গে দর-কষাকষি করছেন। এরপর গুনে গুনে ঘুষের টাকা বুঝে নিচ্ছেন। হাসতে হাসতে সেই টাকা নিজের প্যান্টের পকেটে পুরছেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র, ভুক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষক ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরা অভিযোগ করেছেন, উপজেলার ৮৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামতে বরাদ্দ এসেছে দুই লাখ টাকা করে। রুটিন মেইনটেন্যান্স বাবদ ৯৯টি বিদ্যালয় পেয়েছে ৪০ হাজার টাকা করে। স্লিপ বাবদ ৪০ হাজার টাকা করে পেয়েছে ২১৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব টাকা ৩০ জুন ২০২২ সালের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের হিসাব নম্বরে পাঠানোর কথা ছিল।

বরাদ্দের টাকা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অ্যাকাউন্টে আসার তিন দিনের মধ্যে সব বিদ্যালয়ের হিসাব নম্বরে স্থানান্তরের সরকারি নির্দেশ রয়েছে। বিদ্যালয়ের হিসাব নম্বর পরিচালিত হয় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির যৌথ স্বাক্ষরে। কিন্তু ডিমলা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ সরকারি কোনো নিয়ম মানেননি।

৩০ জুনের মধ্যে একটি বিদ্যালয়ের টাকাও ছাড় করেননি। ওসব টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে রেখেছেন তিনি। টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে নেওয়ার পর প্রধান শিক্ষকদের খবর দিয়েছেন টাকা তুলে নেওয়ার জন্য। তবে এ ক্ষেত্রে তিনি শর্ত দেন, মেরামতকাজের জন্য ৮৮টি বিদ্যালয়কে ১২ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দিতে হবে। পাশাপাশি স্লিপের টাকার চেকের জন্য বিদ্যালয়প্রতি ৫ হাজার, রুটিন মেইনটেন্যান্স চেকপ্রাপ্তির জন্য বিদ্যালয়প্রতি ৬ হাজার করে টাকা দিতে হবে।

শিক্ষা কর্মকর্তা সরাসরি প্রধান শিক্ষকদের ফোন করে নিজ অফিসে বসে ঘুষের এসব টাকা নেন। প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষকদের সঙ্গে ঘুষ নিয়ে ফোনে কথোপকথনের বেশ কিছু কল রেকর্ডও এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

নুর মোহাম্মদনাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রধান শিক্ষক বলেন, যেসব বিদ্যালয় ঘুষ দিতে অস্বীকার করছে, তাদের টাকা আটকে রাখেন শিক্ষা কর্মকর্তা। ঘুষ ছাড়া বিল তো দূরের কথা, একটা কাগজও সই করেন না তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চালে শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ট্রেজারি ও অডিট শাখায় কিছু টাকা দেওয়া লাগে। হিসাবরক্ষণ অফিস আর অডিট কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে শিক্ষকদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া হয়েছে। ঘুষ লেনদেন অনেক আগে থেকেই চলমান। আমি হুট করে কি এটাকে বন্ধ করতে পারি? বিভিন্ন খাতে ঘুষ দিতে হয়, এ টাকা কি আমি আমার বেতন থেকে দেব?’

তবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ফুটেজ হাতে পেলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত